বিউটি সমাদ্দার: কোন মৃত্যু দ্বন্দ্ব, কোন মৃত্যু হতাশা, কোন মৃত্যু অপূর্ণতা আর কোনটা শূন্যতাই হয়ে রয় জাতির জীবনে। বছরজুড়ে তেমনি মৃত্যুর স্বাদ নিতে হয়েছে দেশবাসিকে। রাজনৈতিক, সামাজিক, শিক্ষাঙ্গন, সাংস্কৃতিক অঙ্গনের ব্যক্তিত্বদের প্রয়াণ যেমন কাঁদিয়েছে দেশের মানুষদের তেমনি বছরান্তে তাদের শূন্যতাও ভাবিয়ে তুলেছে দেশ ও জাতিকে।
মৃত্যুই যে শেষ কথা নয় বছরান্তে বছরজুড়ে না ফেরার দেশে চলে যাওয়া সেইসব বিশিষ্ট ব্যক্তিদের স্মরণ করতে গিয়ে তেমনটাই অনুভব হয়। পারিপার্শ্বিকতার সব কিছুই বদলে গেলেও মনের ক্ষতটা যেন কষ্ট হয়ে থেকে যায় স্বজন ও শুভ্যনুধ্যায়ীদের কাছে।
প্রিয় স্বজনকে স্মরণীয় করে রাখতেই চলে নানা পরিকল্পনা। সময়ের সাথে সাথে অন্যান্য বছরের চেয়ে বিদায়ী বছরে গুনীজনের মৃত্যুর তালিকাটাও লম্বা হয়েছে। এ বছর সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের শোক বইতেই প্রায় অর্ধশত নাম উঠেছে। এদের মধ্যে আট গুনীজনকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন সর্বস্তরের মানুষ।
বছরের মাঝামাঝি জুলাইয়ে স্বৈরশাসক এরশাদের মৃত্যু শুধু রাজনৈতিক অঙ্গনেই নয়, দেশবাসীকেও বিচিত্র এক অভিজ্ঞতার স্বাদ দিয়েছে। জীবিত এরশাদ যেমন তার দ্বিমুখী কথার জন্য বরাবরই আলোচিত, সমালোচিত এবং নিন্দিত হয়েছে তার মৃত্যুতেও তেমনি ব্যঙ্গত্মক অনুভূতিই ছিলো দেশবাসীর। মৃত্যুর পর তাকে স্মরণীয় করে রাখার চেয়ে তার পরিবার এবং নিজ দলের ভিতরে পদ-পদবী পাওয়ার দ্বন্দ্বটাই বেশি চোখে পড়েছে।
বছরের শুরুতেই রাজনৈতিক অঙ্গনের বড় ধাক্কাটাই নিতে হয়েছিলো দেশবাসীর, বিশেষ করে ক্ষমতাসীন দলকে আওয়ামী লীগকে ৩ জানুয়ারি সৈয়দ আশাফুল ইসলামের মৃত্যুর মধ্যদিয়ে। ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে না ফেরার দেশে চলে যাওয়া মৃদুভাষী পরিচ্ছন্ন রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্বের প্রয়াণ দেশবাসীর জন্য শূন্যতাই তৈরি করেছে। তার আদর্শকে সামনে নিয়ে চলাই এখন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব বলেই মনে করেন সৈয়দ আশরাফের অনুসারিরা।
২০১৯ সালটা সাংস্কৃতিক অঙ্গনের জন্য বড় ক্ষতির বর্তা নিয়ে এসেছে। সঙ্গীত, চিত্রকলা এবং চলচ্চিত্র অঙ্গনের বেশ কিছু গুনী ব্যক্তিত্ব মারা গেছেন এ বছর। জানুয়ারির ২২ তারিখ বাংলাদেশ হারিয়েছে বিরল প্রতিভার সৃজনশীল সুরস্রষ্টা আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলকে। মা এবং মাতৃভূমি অন্তপ্রাণ এই সঙ্গীতজ্ঞের প্রয়াণ শুধু শিল্প সংস্কৃকির জগতকে নয় দু:খ ভারাক্রান্ত করেছে গোটা দেশকে। এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠার আগেই ৭ মে পৃথিবীর বাঁধন ছিন্ন করে পরপারে পাড়ি জমায় গানের পাখি সুবীর নন্দী।
বছরের শেষ প্রান্তে ক্যানভাসের রং ধূসর করে পরপারে যাত্রা করেন আর্ন্তজাতিক খ্যাতি সম্পন্ন ও একুশে পদকপ্রাপ্ত চিত্রকর কালিদাস কর্মকার। গেল ১৮ অক্টোবর রাজধানীর ইস্কাটনের বাসায় অচেতন অবস্থায় মৃত্যুর জল ছবি একে বিদায় নেন তিনি। সাংস্কৃতিক অঙ্গনের মৃত্যুর পাল্লাটা ভারী করে ২৬ নভেম্বর চির বিদায় নেন আরেক একুশে পদকপ্রাপ্ত কবি, স্থপতি ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংগ্রাহক রবিউল হুসাইন।
আর নিরবে নিভৃতে বছরের শেষ বিদায়টা নিলেন আজীবন মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাওয়া ব্রিটিশ সরকারের নাইট উপাধি পাওয়া একমাত্র বাংলাদেশি স্যার ফজলে হাসান আবেদ। গুনী এই ব্যাক্তিত্বর মৃত্যুর মধ্য দিয়ে থেমে যায় দারিদ্র বিমোচনের বাতিঘর ও এক কিংবদন্তির মহাঅধ্যায়।
শামীম আহসান: অতীতে বহুবার আইএস প্রধান...
বিস্তারিতকাজী বাপ্পা: বিদায়ী বছর রোহিঙ্গাদের...
বিস্তারিতআপডেট এবং সর্বশেষ খবর পেতে সাবস্ক্রাইব করুন ।।
0 মন্তব্য
আপনার মতামত প্রকাশ করুন