নিজস্ব প্রতিবেদক: সারা ইসলামের দান করা কিডনি ও কর্নিয়া প্রতিস্থাপন করা চারজনই সুস্থ আছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন কর্নিয়া গ্রহণকারী দুইজন। আর কিডনী নেয়া দুইজন আছেন হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে। সারা ইসলামের এই অঙ্গদান এবং তার পরিবারের সহায়তা মানুষের জন্য শিক্ষনীয় ও প্রেরণা। এর ফলে আরও অনেক মানুষ অঙ্গদানে এগিয়ে আসবে।
মৃত্যুর আগে তরুণী সারা ইসলামের দান করা চোখের দুটো কর্নিয়ার একটি পেয়েছেন নারায়ণগঞ্জের ২৪ বছরের সুজন। গত ১৮ই জানুয়ারি বুধবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে সুজনের চোখে সারা’র কর্নিয়া প্রতিস্থাপন করা হয়। এখন সুস্থ আছেন সুজন। পরিবারের সদস্যরা জানান, এই কর্নিয়া পাওয়াটা তাদের জন্য সৌভাগ্যের। অন্য কর্নিয়াটি প্রতিস্থাপন করা হয়, সন্ধানী চক্ষু হাসপাতালে ৫৬ বছরের ফেরদৌস নামের একজনের চোখে।
দেশে অনেক আগে থেকেই কর্নিয়া প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে। তবে স্ব-ইচ্ছায় মানুষের দান করার আগ্রহ এখনও কম। ২০ বছরের সারা ইসলাম মৃত্যুর আগেই কর্নিয়া ও কিডনি দান করেন। তার এই উদ্যোগে মানুষ উৎসাহিত হবে বলে জানান, সুজনের চোখে কর্নিয়া প্রতিস্থাপনকারী চিকিৎসক বিএসএমএমইউর চক্ষুবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রাজশ্রী দাশ।
সারা’র দুটো কিডনির একটি পেয়েছেন মিরপুরের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর স্ত্রী ৩৪ বছরের শামীমা। তিনিও এখন ভালোর দিকে। অন্য কিডনিটি প্রতিস্থাপন হয় মিরপুরের বেসরকারি হাসপাতাল কিডনি ফাউন্ডেশনে ৪০ বছরের হাসিনার শরীরে।
চিকিৎসকরা জানান, সাধারণত আইসিইউতে থাকা রোগিদের মধ্যে যাদের মস্তিস্ক কার্যক্ষমতা হারায় কিন্তু, অন্য অঙ্গগুলো যন্ত্রের সাহায্যে কৃত্রিমভাবে সক্রিয় থাকে, তাদের অঙ্গ নিয়ে অন্যের দেহে স্থাপন করা হয়। যাকে চিকিৎসা শাস্ত্রে ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্লান্ট বলা হয় বলে জানান বিএসএমএমইউর ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্ল্যান্ট সেল প্রধান সার্জন হাবিবুর রহমান দুলাল। শরীরের ৮টি অঙ্গকে সঠিক সময়ে সংগ্রহ করা গেলে নতুন করে প্রতিস্থাপন করা সম্ভব বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, ব্রেন ডেথ হলে কৃত্রিমভাবে অন্য অঙ্গ বাঁচিয়ে রাখা যায়। আর স্বাভাবিক মৃত্যু হলে সব অর্গান একসাথে কার্যকলাপ বন্ধ করে দেয়।
LGR/sharif