যশোর সংবাদদাতা: মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ১৯৯তম জন্মবার্ষিকী আজ (বুধবার)। ১৮২৪ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে জানুয়ারি যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার সাগড়দাঁড়িতে জন্মগ্রহণ করেন বাংলা সনেটের এই প্রবর্তক। যিনি বাংলা সাহিত্যে আনেন নব জাগরণ, বংলা সাহিত্যকে দেন- বিশ্ব পরিচিতি। সৃষ্টি করেন মহাকাব্য মেঘনাদবধ, ব্রজাঙ্গনা, বীরাঙ্গনা ও তিলোত্তমা সম্ভব, একেই কি বলে সভ্যতা, বুড়ো শালিকের ঘাড়ের রোঁসহ বিভিন্ন গ্রন্থ। যা বাংলা সাহিত্যকে করেছে সমৃদ্ধ।
বাবা জমিদার রাজনারায়ণ দত্ত আর মাতা জাহ্নবী দেবী ঘরে জন্ম মধুসূদনের। সাগরদাঁড়ি গ্রাম আর পাশে বয়ে চলা স্রোতস্বিনী কপোতাক্ষের সুধা পান করে মধুসূদনের শৈশব, কৈশোরের গুরুত্বপূর্ণ সময় কেটেছে। এ কারণেই স্রোতস্বিনী কপোতাক্ষের বয়ে চলা ধারাকে মায়ের দুধের সঙ্গে তুলনা করে রচনা করেছেন বিখ্যাত সনেট ‘কপোতাক্ষ নদ’।
ছেলেবেলায় নিজ গ্রামের এক পাঠশালায় মাওলানা লুৎফর রহমানের কাছে শিশু মধুসূদন তার শিক্ষা জীবন শুরু করেন। পাশাপাশি গৃহশিক্ষক হরলাল রায়ের কাছে বাংলা ও ফারসি ভাষায় শিক্ষা লাভ করেন তিনি। আর জাহ্নবী দেবীই শিশু মধুসূদনকে রামায়ণ, মহাভারত, পুরাণ প্রভৃতি ধর্মগ্রন্থের সঙ্গে পরিচিত করে তোলেন। সাগরদাঁড়িতে বাল্যকাল অতিবাহিত করে ১৩ বছর বয়সে তিনি কলকাতায় যান। কৃতী ছাত্র হিসাবে তার সুনাম ছিল। কলেজে অধ্যয়নকালে তিনি নারী শিক্ষা বিষয়ে প্রবন্ধ লিখে স্বর্ণ পদক লাভ করেছিলেন।
কবির জন্মদিনকে ঘিরে যশোরে প্রতিবছরই বছরই থাকে নানা আয়োজন। এ দিন উপলক্ষ্যে সেখানে আয়োজন করা হয় মধুমেলার, যা এবারও হচ্ছে। এরই মধ্যে নানা পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। মেলা প্রাঙ্গন জুড়ে এক উৎসব মুখর পরিবেশ বিরাজ করছে।
মেলায় আগতদের সার্বিক নিরাপত্তার পাশাপাশি বিনোদনের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানালেন কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এম এম আরাফাত হোসেন।
১৮৭৩ সালের ২৯শে জুন কলকাতায় মারা যান মহাকবি মাইকেল মধুসূদন। এরপর কবির ভাইয়ের মেয়ে কবি মানকুমারী বসু ১৮৯০ সালে কবির প্রথম স্মরণসভার আয়োজন করেন সাগরদাঁড়িতে। সেই আয়োজন থেকে শুরু হয় মধু মেলার।
SAI/sat