আন্তর্জাতিক ডেস্ক : তাইওয়ানের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে মধ্য আমেরিকান দেশ হন্ডুরাস। মূলত চীনের সাথে আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই এই সম্পর্ক ছিন্ন করলো দেশটি।
শনিবার হন্ডুরাসের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, হন্ডুরাস সরকার বিশ্বে মাত্র এক চীনের অস্তিত্বকে স্বীকৃতি দিচ্ছে। গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের সরকার সমগ্র চীনের প্রতিনিধিত্ব করে। তাইওয়ান হলো চীনা ভূখণ্ডের অবিচ্ছেদ্য অংশ। সম্পর্ক ছিন্ন করার বিষয়টি তাইওয়ানকে জানানো হয়েছে।
হন্ডুরাসের ঘোষণার পরপরই, তাইওয়ান নিশ্চিত করেছে যে, সম্পর্ক আনুষ্ঠানিকভাবে ছিন্ন করা হয়েছে।
তাইওয়ানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোসেফ উ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, জাতীয় সার্বভৌমত্ব এবং মর্যাদা রক্ষা করার জন্য, আমরা অবিলম্বে হন্ডুরাসের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক বন্ধ করার এবং সমস্ত দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এমনকি তাইপেইতে হন্ডুরাসকে তার দূতাবাস বন্ধ করতে বলছে তাইওয়ান।
এর ফলে এখন তাইওয়ানকে স্বীকৃতি প্রদানকারী দেশের সংখ্যা মাত্র ১৩-এ নেমে এলো। হন্ডুরাস প্রেসিডেন্ট জিওমারা কাস্ত্রো ১৪ই মার্চ ঘোষণা করেছিলে যে, তারা চীনের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করবে। এই একটি পদক্ষেপের কারণে তাইওয়ানের সাথে হন্ডরাসের সম্পর্কের অবসান ঘটলো।
১৯৪৯ সালে গৃহযুদ্ধের ফলে আলাদা হয়ে যাওয়ার পর থেকে চীন ও তাইওয়ান স্বীকৃতি অর্জনের জন্য অব্যাহত যুদ্ধে নিয়োজিত রয়েছে। তাইওয়ানের ৫৬টি কূটনৈতিক মিত্র ছিল। কিন্তু ১৯৭১ সালে জাতিসংঘ বেইজিং এর সরকারকেই চীনের আসল সরকার বলে স্বীকৃতি দেয়। তারপর থেকেই তাইওয়ানের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি কমতে থাকে। ২০১৬ সালের মে মাসে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট হিসেবে সাই ইং-ওয়েন দায়িত্ব গ্রহণের সময় তাইওয়ানকে স্বীকৃতি প্রদানকারী দেশের সংখ্যা ছিলো মাত্র ২২। এরপরের বছরগুলো থেকেই এটি হ্রাস পেতে থাকে। এবার হন্ডুরাস ৯ম দেশ হিসেবে তাইওয়ানের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করল।
চীনের ব্যাপক প্রচারণা সত্ত্বেও শতাধিক দেশের সাথে তাইওয়ানের অনানুষ্ঠানিক সম্পর্ক রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্র কূটনৈতিকভাবে তাইওয়ানকে স্বীকৃতি না দিলেও তার ইন্দো-প্যাসিফিক নীতির অন্যতম অংশীদার তাইওয়ান।
চীন মনে করে তাইওয়ান তার একটি প্রদেশ। এর রাষ্ট্রীয় কোনো অস্তিত্ব নেই। তারা অন্য রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করতে পারে না। তবে তাইওয়ান এটা মানে না।
AAJ/Bodiar