আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইতিহাসে দ্বিতীয় বৃহৎ বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকিং খাত। গত দুই মাসের মধ্যে দেশটিতে তৃতীয় ব্যাংক হিসেবে পতন ঘটেছে ফার্স্ট রিপাবলিক ব্যাংকের। এই পরিস্থিতিতে আগামী মাসের মধ্যে তীব্র অর্থসংকটে পড়তে পারে যুক্তরাষ্ট্র। ঋণ পরিশোধ নিয়েও দেখা দিয়েছে ঝুঁকির আশংকা। সোমবার আমেরিকার পার্লামেন্টের নিæকক্ষ হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভের স্পিকারের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এসব জানিয়েছেন মার্কিন অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন। এদিকে, প্রত্যাশার চেয়ে কম ট্যাক্স পাওয়া এবং সরকারের উচ্চ ব্যয়কে এই অবস্থার জন্য দায়ী করছে রিপাবলিকানরা।
করোনা মহামারী এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে। বাদ যায়নি যুক্তরাষ্ট্রও। স¤প্রতি দেশটিতে দেউলিয়া হচ্ছে একের পর এক ব্যাংক। সিলিকন ভ্যালি ও সিগনেচার ব্যাংকের পর ধসে গেছে আমেরিকার ফার্স্ট রিপাবলিক ব্যাংক। গ্রাহকদের সম্পদের সুরক্ষায় রোববার দেউলিয়া হতে যাওয়া ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রণ নেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফেডারেল ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স করপোরেশন-এফডিআইসি। এরপরই ১৩ বিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে ব্যাংকটি আর্থিক খাতের জায়ান্ট প্রতিষ্ঠান জেপি মরগ্যান চেজ- এর কাছে বিক্রির ঘোষণা দিয়েছে আমেরিকার ফেডারেল সরকার।
একের পর এক ব্যাংক দেউলিয়া হওয়ার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে শেয়ারের দামেও। ফলে কমছে নগদ অর্থের পরিমাণ। এতে যুক্তরাষ্ট্রে ঋণের সর্বোচ্চ সীমা বাড়ানো না হলে আগামী পহেলা জুনের মধ্যে সংকট দেখা দেবে নগদ অর্থের। স্থানীয় সময় সোমবার হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভের স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থিকে পাঠানো এক চিঠিতে এ সতর্কবার্তা দেন মার্কিন অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন।
বিবিসি জানিয়েছে, বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর মতো যুক্তরাষ্ট্রেও নির্ধারিত ঋণ সীমা রয়েছে। এর বাইরে দেশটির সরকার ঋণ দিতে বা নিতে পারে না। তবে বর্তমান মার্কিন প্রশাসনের ঋণের পরিমাণ নির্ধারিত সীমার কাছে চলে এসেছে। এতে যুক্তরাষ্ট্রের সরকার কয়েকদিন পর আর কোনো ঋণ নিতে পারবে না।
চিঠিতে জ্যানেট ইয়েলেন বলেন, সত্যি সত্যি নগদ অর্থের সংকট সৃষ্টি হলে ইতিহাসের সবচেয়ে বাজে অর্থনৈতিক সমস্যায় পড়বে মার্কিন সরকার। বাড়বে বেকারত্ব, বিরূপ প্রভাব পড়বে সামরিক খাতসহ সরকারের বিভিন্ন খাতে। যা দেশকে মন্দার দিকে নিয়ে যাবে।
যুক্তরাষ্ট্রের আইনসভার নিম্নকক্ষের সদস্যদের উদ্দেশে পাঠানো চিঠিতে এই সমস্যা সমাধানে ‘দ্রুত পদক্ষেপ’ নেয়ার আহŸান জানিয়েছেন তিনি।
shamima/joy