বিদ্যুৎ উৎপাদনে রেকর্ড, তবু লোডশেডিং

প্রকাশিত: ০৬-০৫-২০২৩ ১৪:৩৫

আপডেট: ০৬-০৫-২০২৩ ২২:৪০

ফাহিম মোনায়েম: দেশে যখন সর্বোচ্চ পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড করার দাবি করছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, তখন শহর ও গ্রামের মানুষ দিনে-রাতে কয়েক ঘন্টা করে বিদ্যুৎহীন থাকছে। বিদ্যুৎ বিভাগ কোন লোডশেডিং করছে না বলে দাবি করলেও বাস্তবে বিদ্যুৎ না থাকার ভোগান্তি পোহাচ্ছে মানুষ। পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক বলছেন, সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরেও কোন কারণ ছাড়া লোডশেডিং করার প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

সদর উপজেলার কৃষক আওলাদ হোসেনের মতো মেহেরপুরের অনেক এলাকার মানুষই বিদ্যুতের কষ্টে ভোগেন। দিনে রাতে কয়েকবার বিদ্যুৎ চলে যায়। গ্রামাঞ্চলে বেশি সময় বিদ্যুৎ থাকে না।এতে কৃষি জমিতে সেচ কাজও ব্যাহত হচ্ছে। 

বরগুনা, নাটোর ও সাতক্ষীরা থেকে বৈশাখীর সংবাদদাতারা বিদ্যুৎ না থাকার একই ধরনের খবর জানিয়েছেন। দিনে রাতে কমপক্ষে দুইবার বিদ্যুৎ চলে যায়। আর একবার গেলে এক ঘন্টার আগে আসে না। 

বিদ্যুৎ বিভাগ ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিলে দেশে বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদা ১৬ হাজার মেগাওয়াট ছাড়িয়ে যায়। এরমধ্যে ১৯শে এপ্রিল সর্বোচ্চ ১৫ হাজার ৬৪৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড হয়। তারপরেও কেনো লোডশেডিং? 

জানতে চাইলে, নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর জেনারেল ম্যানেজার এমদাদুল হক বলেন ,‘রমজান শেষ হয়েছে, তাপদাহ কমে গেছে। ফলে এখন কোনো লোডশেডিং নেই। আমরা গ্রাহককে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারছি।’

এদিকে মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এজিএম তিতাস হোসেন বলেন,‘ঈদ থেকে এখন পর্যন্ত মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে কোনো লোডশেডিং নেই। তবে কালবৈশাখী ঝড়ের কারণে কিছু কিছু এলাকায় আমাদের বিদ্যুৎ বন্ধ করতে হয়েছে।’ 

দেশে বর্তমানে সচল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সংখ্যা ১৩৩টি। যার উৎপাদন ক্ষমতা ২০ হাজার ৬৯৭ মেগাওয়াট। এছাড়া ভারত থেকে আমদানি করা হচ্ছে ১১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। তারপরেও লোডশেডিং হওয়ার খবরে অবাক হয়েছে খোদ বিদ্যুৎ বিভাগ। 

এই বিষয়ে পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, ‘আমরা ১৬ হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছি। ১২ হাজার মেগাওয়াট মাত্র চাহিদা। সেক্ষেত্রে লোডশেডিং হওয়ার কোনো কারণ নেই। সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য পেলে তদন্ত করে দেখবো। কোন কারণে প্রতিদিন রুটির করে বিদ্যুৎ যাচ্ছে।’ 

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড পিডিবি’র তথ্য বলছে, সক্ষমতা থাকলেও জ্বালানির অভাবে উৎপাদন করা যাচ্ছে না দুই হাজার মেগাওয়াট। আর যান্ত্রিক ত্র“টি ও রক্ষণাবেক্ষণে থাকায় বন্ধ আছে ৩ হাজার ২৪১ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এতে গড়ে দৈনিক ঘাটতি এক হাজার মেগাওয়াটের বেশি।

FM/sat