নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে পণ্যবাহী জাহাজ চলাচলের পথ আরও সহজ হতে চলেছে। এর ফলে ত্রিপুরার মতো ভারতীয় রাজ্যগুলোতে যেমন পণ্য পরিবহন খরচ কমবে, তেমনি ব্যবসায়িক লাভ বাড়বে বাংলাদেশের।
আজ সোমবার (২৫শে সেপ্টেম্বর) কলকাতা বেসরকারি বন্দরের ও বাংলাদেশের সাইফ পাওয়ার টেক লিমিটেডের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। এতে স্বাক্ষর করেন সাইফ পাওয়ার টেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরফদার মো. রুহুল আমিন ও কলকাতার বেসরকারি বন্দরের ডেপুটি চেয়ারম্যান রাজেন্দ্র রমন। এসময় উপস্থিত ছিলেন দুই দেশের ব্যবসায়ীরা।
সাইফ পাওয়ারটেক জানায়, সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী কলকাতার শ্যামা প্রসাদ মুখার্জি বন্দর কর্তৃপক্ষ ও সাইফ পাওয়ারটেক ট্রানজিট পণ্য পরিবহনে নতুন সম্ভাবনা উন্মোচনে কাজ করবে। শ্যামা প্রসাদ বন্দর শুধু ট্রানজিট পণ্য পরিবহনের জন্য নতুন জেটি-সুবিধা চালু করবে।
ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে তাদের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যে আসাম, ত্রিপুরা, মিজোরাম, মণিপুর, নাগাল্যান্ড, অরুণাচল ও মেঘালয় পণ্য পরিবহনে সময় ও খরচ বেশি লাগে। কলকাতা থেকে আগরতলার দূরত্ব শিলিগুড়ি হয়ে প্রায় ১ হাজার ৬১৯ কিলোমিটার। চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে এই দূরত্ব প্রায় ৫৭৫ কিলোমিটার। ট্রাকে শিলিগুড়ি হয়ে যেতে ছয় থেকে সাত দিন সময় লাগে। অন্যদিকে শ্যামা প্রসাদ মুখার্জি বন্দর থেকে চট্টগ্রামে বন্দর হয়ে মাত্র চার দিন সময় লাগে।
এ অবস্থায় কম খরচে ও কম সময়ে চট্টগ্রাম বন্দর ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করে বাংলাদেশের সড়ক দিয়ে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যে পণ্য পরিবহনে দীর্ঘদিন চেষ্টা চালিয়ে আসছিল ভারত। শেষ পর্যন্ত ২০১৮ সালের অক্টোবরে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার বিষয়ে দুই দেশের সচিব পর্যায়ে এ–সংক্রান্ত চুক্তি হয়। এরপর ২০১৯ সালের ৫ অক্টোবর নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে বৈঠকে এ-সংক্রান্ত পরিচালন পদ্ধতির মান বা স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) সই হয়।
এরপর ২০২০ সালের জুলাই মাসে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে প্রথম পরীক্ষামূলক চালান আনা-নেওয়া হয়। গত বছর চট্টগ্রাম বন্দর ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করে আরও কয়েকটি চালান পরীক্ষামূলকভাবে আনা-নেওয়া হয়। গত এপ্রিলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এক স্থায়ী আদেশের মাধ্যমে নিয়মিত ট্রানজিট পণ্য আনা–নেওয়ার আদেশ জারি করে।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সাইফ পাওয়ারটেক বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরের দুটি বড় টার্মিনাল পরিচালনা করছে। বন্দরকেন্দ্রিক নানা সেবার সঙ্গেও যুক্ত রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
MHS/shimul