ফারহানা জুঁথী: করোনাকালে বেড়েছে বাল্যবিয়ের হার। পরিসংখ্যান ব্যুরোর জরিপ অনুযায়ি ২০১৯ সালে বাল্যবিয়ের হার ছিলো প্রায় ৩৩ শতাংশ। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ব্র্যাক এর জরিপ অনুযায়ি ২০২০ সালে এই হার বেড়েছে ১৩ শতাংশ। সেই হিসেবে করোনাকালে বাল্যবিয়ের হার দাঁড়ায় প্রায় ৪৬ শতাংশে। এজন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকা ও কন্যাশিশুর ভবিষ্যত নিয়ে অনিশ্চয়তার মতো কারণগুলোকে দায়ি করছেন বিশ্লেষকরা। তবে, বাল্যবিয়ে বন্ধে সরকার নানামুখি পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানালেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী।
করোনা অতিমারির সময়ে বেড়ে গেছে বাল্যবিয়ের হার। ২০১৯ সালে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো-বিবিএস পরিচালিত জরিপে দেখা গেছে দেশে বাল্যবিয়ের হার ছিলো ৩২ দশমিক নয় শুন্য শতাংশ। তবে করোনাকালে ২০২০ সালে এই হার অন্তত ১৩ শতাংশ বেড়েছে বলে জানা গেছে বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক এর জরিপ থেকে। ১১টি জেলায় ৫৫৭ জন নারী-পুরুষের উপর এই জরিপ চালানো হয়।
তৃণমূলে কাজ করা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা বলছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এবং কন্যার ভবিষ্যতের কথা ভেবে ও অপেক্ষাকৃত ধনী পরিবারের সাথে আত্মীয়তার মাধ্যমে এক ধরণের আর্থিক নিশ্চয়তা পেতে বাল্যবিয়ে দেয়া হচ্ছে।
সমাজ বিশ্লেষকরা বলছেন, অভিবাসী শ্রমিকসহ বিভিন্ন পেশার প্রতিনিধিরা করোনাকালে দেশে ফিরেছেন। ‘পাত্র’ হিসেবে প্রবাসীদের চাহিদা বেশি বলে কন্যাশিশুর অভিভাবকরা বিয়ে দিচ্ছেন। আবার অঞ্চলবিশেষে ধর্মীয়-সাংস্কৃতিক কারণেও বাল্যবিবাহ হচ্ছে। এটা বন্ধে অভিভাবকদের সচেতন করার পাশাপাশি কন্যাশিশুরা যেন শিক্ষা কার্যক্রম থেকে ঝরে না পড়ে, সে ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়া জরুরি বলে মনে করেন সমাজ বিশ্লেষকরা।
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য ২০৩০ সালের মধ্যে নারীর প্রতি সহিংসতা ও বাল্যবিবাহ নির্মূলের অঙ্গীকার করা হলেও করোনা পরিস্থিতিতে তা ব্যহত হওয়ার কথা স্বীকার করলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বললেন, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করতে প্রশাসনের নজরদারি ও তৃণমূল পর্যায়ে সচেতনতা আরও বাড়ানো হবে।
২০১৯ সালে বাল্যবিয়ের হার ৩২.৯০ শতাংশ (সূত্র-বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো-বিবিএস)
২০২০ সালে বাল্যবিয়ের হার প্রায় ৪৬ শতাংশ (ব্র্যাক জরিপে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে)
৮৫ শতাংশ বাল্যবিবাহ হয়েছে মেয়েদের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তার কারণে।
৭১ শতাংশ বাল্যবিবাহ হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায়।
৬২ শতাংশ বাল্য বিবাহ হয়েছে প্রবাসী ছেলে হাতের কাছে পাওয়ায়।
আপডেট এবং সর্বশেষ খবর পেতে সাবস্ক্রাইব করুন ।।
0 মন্তব্য
আপনার মতামত প্রকাশ করুন