আন্তর্জাতিক ডেস্ক: তাপমাত্রা অতিরিক্তি বেড়ে যাওয়ার ফলে নদী, হ্রদ ও জলাশয় শুকিয়ে যাওয়ার পর, নতুন আরেক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে যুক্তরাজ্যে। এবার জলবায়ুর পরিবর্তন এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে দেশটির ঋতুচক্রে। দেশটিতে আগাম শরৎকাল চললেও, তাতে শীতের বৈশিষ্ট্য প্রবল হয়ে উঠেছে। অকালে ঝড়ে পড়ছে গাছের পাতা। শীতকালে যে ফল পাঁকার কথা শরতেই তা পেঁকে যাচ্ছে। এতে বন্যপ্রাণী ও পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আশংকা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
যুক্তরাজ্যে শুরু হয়েছে ‘ফলস অটাম’ বা আগাম শরতকাল। এসময় সচরাচর দেশটির আকাশ স্বচ্ছ ও নীল থাকে। সবুজের সমারোহে ছেয়ে থাকে বাগান, পার্ক ও বন। তবে এই বছর চিত্রটা ভিন্ন। আগাম শরতকাল যেন হয়ে উঠেছে আগাম শীতকাল। শরতের আগেই বুঝি চলে এলো শীত। সবুজের পরিবর্তে গাছের পাতাগুলো ধারণ করেছে লাল, কমলা ও হলুদ রং। মাটির উপর ঝরা পাতার চাদর। সচরাচর শীতকালে এমন দৃশ্য দেখা গেলেও, এবার শরতেই দেখা মিলছে এর।
দেশটিতে ঋতুর চিত্রে এই আমূল পরিবর্তনের কারণ জানিয়েছেন, যুুক্তরাজ্যের ঋতুগত পরিবর্তন পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা ‘দ্য ওডল্যান্ড ট্রাস্ট’ এর বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে শুষ্ক আবহাওয়ায় ভারসাম্য হারিয়ে ফেলছে গাছগুলো। এমন পরিবেশে গভীর শেকড় সম্বলিত বয়স্ক গাছ খাপ খাওয়াতে পারলেও, ঝুঁকিতে পড়েছে কম বয়সী ছোট গাছ। বার্চ, সিলভার বার্চ কিংবা রোয়ান প্রজাতির ছোট গাছগুলো, বিরূপ এই আবহাওয়ায় টিকে থাকতে এবং আদ্রতা বজায় রাখতে গিয়ে হরমোনের ভারসাম্য ও ক্রিয়াশীলতায় পরিবর্তন আনছে। ফলসরূপ, এদের পাতা অকালে ঝড়ে পড়ছে।
এদিকে, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে শরতকালেই আগাম পেঁকে যাচ্ছে শীতকালীন বেরি ফল ও বিভিন্ন জাতের বাদাম। ফলে বন্যপ্রাণী ও পরিবেশের ওপর এর বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আশংকা করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা জানান, প্রকৃতি ও তার নিয়মের উপর নির্ভরশীল বন্যপ্রাণীরা। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ঋতুর এ পরিবর্তনের সাথে দ্রুত খাপ খাওয়াতে পারবে না তারা। এই পরিস্থিতি আরও কয়েক বছর চলবে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা।
aleya/sat