বিউটি সমাদ্দার: প্রকৃতি থেকে আশঙ্কাজনকহারে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে দেশীয় পাখি। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ-আইইউসিএন এর তথ্য মতে দেশে সাতশোর অধিক প্রজাতির পাখি রয়েছে। এর মধ্যে ৩৯ প্রজাতির পাখি বিলুপ্তির পথে। আর ১৭ প্রজাতির পাখি রয়েছে বিলুপ্তির বেশি ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায়। জলবায়ুর পরিবর্তন, পাখির আবাসস্থল ধ্বংস এবং অসচেতনতাই এদের বিলুপ্তির কারণ বলে জানান বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেন, পাখিদের বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করা না গেলে প্রকৃতির ভারসাম্য ধরে রাখাই কঠিন হয়ে যাবে।
বি¯তৃর্ণ ধান ক্ষেতের উপরে ডানা মেলে উড়ে যাওয়া এক ঝাঁক পাখির এমন মনোরম দৃশ্য দেখে অনায়াসে কাটিয়ে দেয়া যায় এক বিকেল। অথবা সাঁঝ বিকেলে পাখির কিচিরমিচির কলকাকলীতে ভুলে যাওয়া যায় মন খারাপ করা সময়ের কথা।
আর কিছুই না হোক প্রকৃতির অলঙ্কার এসব পাখির প্রতি ভালো লাগা আর ভালোবাসার অনুভূতিটাই বা কম কিসের।
জীববৈচিত্র্যে ভরপুর এই বাংলায় কয়েক শতক আগেও বাড়ির আঙ্গিনা থেকে শুরু করে মাঠ, ঘাট, জলাশয়, বনজঙ্গল মুখোরিত থাকতো নানাজাতের বাহারী সব পাখির কলকাকলীতে। দোয়েল, চড়ুই, শালিক, টুনটুনি, ফিঙ্গে, কাঠঠোকরা মাছরাঙা, বৌকথাকও, সাদা বকসহ হরেক প্রজাতির পাখি ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে বেড়াতো।
নাতিশীতষ্ণ আবহাওয়ার কারনে হওয়ায় পাখিদের স্বর্গরাজ্য ছিলো এই অঞ্চল। তবে এখনকার চিত্রটা ভিন্ন। প্রকৃতি থেকে আশঙ্কাজনতভাবে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে পাখিরদল। আইইউসিএন এর তথ্য বলছে এরই মধ্যে দেশ থেকে ১৯ প্রজাতির পাখি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় আছে আরো ৩৯ প্রজাতির পাখি। এর মধ্যে মহাবিপন্ন সাত প্রজাতি, বিপদাপন্ন পাঁচ প্রজাতি এবং বিপন্ন হয়ে যাওয়ার তালিকায় রয়েছে আরো পাঁচ প্রজাতির পাখি।
বনভূমি গুলোই মূলত দেশীয় পাখিদের আবাসস্থল, এছাড়া নদী হাওর বাওর ও বিভিন্ন জলাশয়ে থাকে জলচর পাখি উপকূলে থাকে সৈকত পাখি। আবাসস্থল ধ্বংস এবং খাবারের অভাবেই এসব পাখির বিচরণ হুমকীর মুখে পড়েছে।
প্রকৃতির প্রকৌশলী এসব পাখি বন তৈরি করে, ভারসাম্য রক্ষা করে জীববৈচিত্রের। যে প্রকৃতিতে পাখি নেই তা মৃতপ্রায়। তাই পাখিদের বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করে এদের প্রতি যত্নশীল হওয়ার তাগিদ রয়েছে পাখি বিশেজ্ঞদের।
BRS/sharif