শুরু হলো বিজয়ের মাস ডিসেম্বর

প্রকাশিত: ০১-১২-২০২২ ০১:২৩

আপডেট: ০১-১২-২০২২ ০৯:১০

অনলাইন ডেস্ক: আজ থেকে শুরু হলো বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে আজকের এই ১৬ই ডিসেম্বরে রচিত হয়েছিল বাঙালি জাতির সবচেয়ে গৌরবের অধ্যায়। ইতিমধ্যেই বাঙালি জাতি গৌরবময় বিজয়ের ৫০ বছর পার করেছে। এই ডিসেম্বর মাসেই সে সময়ের বেশ কিছু ঘটনা মুক্তিযুদ্ধে বিজয়কে দ্রুত ত্বরান্বিত করেছিল। 

১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। এতে বাঙালি জাতি মুক্তির লক্ষ্যে দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রামের নির্দেশনা-প্রেরণা পায়। বঙ্গবন্ধুর নেতৃতে পাকিস্তানের শাসন, শোষণ, নির্যাতনের বিরুদ্ধে এটি স্বাধীনতা সংগ্রামে রূপ নেয়। 

২৫শে মার্চ রাতে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী নির্মমভাবে বাংলাদেশের নিরীহ মানুষের ওপর ঝাপিয়ে পড়ে। এর পরই ২৬শে মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। শুরু হয় বর্বর পাকিস্তানি বাহিনীর বাঙালি নিধন অভিযান।  

কিন্তু পাকিস্তানের এই বর্বরতার বিরুদ্ধে বুক ফুলিয়ে দাঁড়ায় বাংলার সর্বস্তরের মানুষ। হাতে তুলে নেয় অস্ত্র, শুরু হয় রক্তক্ষয়ী এক মুক্তিযুদ্ধ। দীর্ঘ নয় মাস পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে চলে বাঙালির মরণপণ যুদ্ধ। বীরত্বপূর্ণ মুক্তিযুদ্ধের এক পর্যায়ে বাঙালি বিজয়ের দিকে এগোতে থাকে। ডিসেম্বর মাসে মুক্তিযুদ্ধ চূড়ান্ত বিজয়ের দ্বার প্রান্তে এসে পৌঁছায়। এক পর্যায়ে বাঙালির বীরত্বের কাছে পরাজয় স্বীকার করতে বাধ্য হয় পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী। 

এ ডিসেম্বর মাসেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের পক্ষে এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন (রাশিয়া) বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান নেয়। এরপর যখন যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি পাকিস্তানের পক্ষে যুদ্ধ জাহাজ পাঠায়। সঙ্গে সঙ্গে সোভিয়েত ইউনিয়নও বাংলাদেশের পক্ষে যুদ্ধ জাহাজ পাঠানোর ঘোষণা দেয়। এছাড়া আগে থেকেই ভারত সার্বিকভাবে বাংলাদেশের পক্ষে দাঁড়ায় এবং সরাসরি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়। তখন শরণার্থী আশ্রয়, খাদ্য, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দেয় ভারত। তবে আগে থেকেই পাকিস্তানের পক্ষে ছিল চীন। 

এ প্রেক্ষাপটে মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করে বাংলাদেশ। ১৬ই ডিসেম্বর পাকিস্তানকে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করে বাংলাদেশের বীররা। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে (তৎকালীন রেসকোর্স) মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর (ভারতীয় বাহিনী) যৌথ কমান্ডের কাছে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করে। রক্তক্ষয়ী এ মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদ এবং দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়।

Amirul/habib