১০০ এলসি বন্ধের ব্যাখ্যা দিলেন গভর্নর

নিজস্ব প্রতিবেদক: বৈদেশিক বাণিজ্যে পণ্যের দাম কম বা বেশি দেখিয়ে আমদানি নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে ‘ট্রেড বেজড মানি লন্ডারিং’ বন্ধ করা সম্ভব বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। আজ (বৃহস্পতিবার) বিআইডিএস আয়োজিত তিন দিনব্যাপী বার্ষিক উন্নয়ন সম্মেলনের প্রথম দিনের বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। 

এসময় গভর্নর জানান, পণ্য আমদানি-রপ্তানি প্রক্রিয়ার আড়ালে দেশের বিপুল অর্থ বিদেশে পাচার হচ্ছে। ২০-২০০ শতাংশ পর্যন্ত ওভার ইনভয়েসিং বা অতিরিক্ত মূল্য দেখিয়ে পণ্য আমদানি করা হয়েছে। এরকম একশ' এলসি বন্ধ করে দেয়ার কথাও জানান তিনি। 

সংস্থাটির মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেনের সভাপতিত্বে গুলশানের হোটেল লেকশোরে রাষ্ট্রায়ত্ব গবেষণা সংস্থা বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ (বিআইডিএস) এর উদ্যোগে তিন দিনব্যাপী শুরু হয়েছে এই বার্ষিক উন্নয়ন সম্মেলন।

পণ্য আমদানিতে ‘ওভার ইনভয়েসিং’ মানে হল অতিরিক্ত অর্থ ব্যাংক চ্যানেলেই বিদেশে পাচার হচ্ছে। পণ্যের মূল্যের নামে পাঠানো অতিরিক্ত অর্থ পরে বিদেশে আমদানিকারকের পক্ষে কেউ গ্রহণ করছে। এমন অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরেই অর্থনীতিবিদদের কাছ থেকে আসছে।

আন্ডার ইনভয়েসিং ব্যবহার করা হয় পণ্য রপ্তানিতে। পণ্য রপ্তানির সময়ে যে পরিমাণ অর্থ কম দেখানো হয়, তা বিদেশে রপ্তানিকারকের পক্ষে বুঝে নেওয়া হয়। এভাবেও অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কথা আলোচনায় আসে।

এর আগে গত ১৫ই নভেম্বর এক অনুষ্ঠানে গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার বলেন, পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে মূল্য অতিরিক্ত দেখানো (ওভার ইনভয়েসিং) এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে মূল্য কম দেখানোর (আন্ডার ইনভয়েসিং) বিষয়টি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পর্যবেক্ষণে ধরা পড়েছে।

উল্লেখ্য করোনাভাইরাস মহামারী পরবর্তী সময়ে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করলে বাড়তে থাকে পণ্য আমদানিতে ঋণপত্র খোলা এবং নিষ্পত্তির পরিমাণ। এই ধারা অব্যাহত থাকে চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকেও। আমদানি বাণিজ্য বৃদ্ধির বিপরীতে রপ্তানি আয় ও রেমিটেন্স সেভাবে বৃদ্ধি না পাওয়া বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবস্থাপনায় বড় ধরনের চাপে পড়ে বাংলাদেশ। আমদানি খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় গত বছরের আগস্টে থাকা ৪৮ বিলিয়ন ডলারের রিজার্ভ নেমে এসেছে ৩৩ দশমিক ৮৬ বিলিয়নে।