
প্রখ্যাত লেখক জিন এম. অ্যাউয়েলের বেস্ট সেলিং উপন্যাস ‘দি ক্ল্যান অফ দ্য কেভ বিয়ার’ এর চলচ্চিত্র রূপায়ণ বড় পর্দায় আসা হয়তো অসম্ভবই ছিল। একটি ক্রো-ম্যাগনন মেয়ের নিয়ান্ডারথালদের পরিবারে দত্তক নেওয়ার এই প্রাগৈতিহাসিক কাহিনিটি মূলত একটি টিভি মুভি হিসেবে শুরু হতে চেয়েছিল। কিন্তু মার্ক ডেমনের প্রোডিউসার্স সেলস অর্গানাইজেশন এর দৃঢ় সংকল্প এবং আমেরিকান ফিল্ম মার্কেট এর বৈশ্বিক প্ল্যাটফর্মই ১৬ মিলিয়ন বাজেটের এই ছবিটিকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দেয়।
জানা যায়, প্রযোজক জেরাল্ড ইসেনবার্গ এবং স্ট্যান রোগো প্রথমে ছবিটি একটি ‘মুভি-অফ-দ্য-উইক’ হিসেবে এনবিসি-র কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন, কিন্তু কোনো সাড়া মেলেনি। ঠিক সেই সময়েই মাঠে নামে মার্ক ডেমনের সহ-প্রতিষ্ঠিত পিএসও। আশিঁর দশকে, যখন এএফএম আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র বাণিজ্যের কেন্দ্র হয়ে উঠছিল, পিএসও সেই মঞ্চকে ব্যবহার করে ছবিটির বিদেশী স্বত্ব বিক্রি করে দেয়। এই আগ্রাসী বিক্রয় কৌশলই শেষ পর্যন্ত ১৬ মিলিয়ন ডলার (মতান্তরে ১৮ মিলিয়ন ডলার) বাজেটের এই চলচ্চিত্রের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ জোগাড় করে। এটি ১৯৮৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে ব্রিটিশ কলাম্বিয়া এবং উত্তর-পশ্চিম কানাডার মনোরম লোকেশনে চিত্রায়িত হয়।
১৯৮৬ সালের ১৭ জানুয়ারি ওয়ার্নার ব্রাদার্সের পরিবেশনায় মুক্তি পায় এই ছবিটি। মাইকেল চ্যাপম্যান পরিচালিত এই অ্যাডভেঞ্চার ড্রামা ফিল্মটিতে মূল চরিত্র ‘আইলা’ তে অভিনয় করেন সেই সময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী ড্যারিল হ্যানা। অন্যান্য প্রধান চরিত্রে ছিলেন পামেলা রিড এবং জেমস রেমার।
ছবিটি যদিও বক্স অফিসে খুব বেশি সাফল্য পায়নি (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মাত্র ২ মিলিয়ন ডলার আয় করে), তবে এটি আশিঁর দশকে স্বাধীন চলচ্চিত্র পরিবেশনা এবং আন্তর্জাতিক বাজারের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহের একটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ হিসেবে ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছে। এটি প্রমাণ করে যে, অনেক সময়, একটি সিনেমা তৈরি হওয়ার পিছনে কোনো টিভি নেটওয়ার্কের সমর্থন নয় বরং একজন আন্তর্জাতিক বিক্রেতার অদম্য ইচ্ছাই যথেষ্ট।
মন্তব্য করুন