
ভারতের বিহার রাজ্যে আবারও ক্ষমতায় আসতে চলেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ও নীতীশ কুমারের দল জেডিইউ এর নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণের পর নয়টি বুথ ফেরত সমীক্ষার সবকটিই বলছে, বিজেপি জোট বিধানসভা নির্বাচনে জিতবে। ভারতের বিধানসভা নির্বাচনের অতীত অভিজ্ঞতা বলছে, বুথ ফেরত জরিপ বা 'এক্সিট পোল' যে পূর্বাভাস দেয় তা অনেক সময় বাস্তবতার সঙ্গে মেলে না।
বিহারে বিজেপি নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স বা জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট (এনডিএ) বিধানসভা বিরোধী জোট মহাগাঠবন্ধনকে একপ্রকার ঘূর্ণিতে ফেলে দিয়ে ভূমিধস জয়ের পথে রয়েছে।
ভোট গণনা চলছে এবং শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ২৪৩ সদস্যের বিহার বিধানসভায় এই জোট ১৮৯টি আসনে এগিয়ে আছে। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য যেখানে ১২২টি আসন দরকার, এনডিএ জোট সেই মাপকাঠি অনেক পেছনে ফেলে এসেছে।
আরজেডি-কংগ্রেস-বাম ও অন্যদের মহাজোট এবারও ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছেনা। প্রশান্ত কিশোরের জনসুরাজ পার্টিও তাদের প্রথম নির্বাচনে একেবারেই ভালো ফল পাচ্ছে না। তারা খুব বেশি হলে একটি আসনে জিততে পারে বলে আভাস পাওয়া গেছে।
ভারতের নির্বাচন কমিশনের ভোট গণনার হালনাগাদ তথ্যে দেখা যাচ্ছে, এনডিএ জোটের মধ্যে বিজেপি এগিয়ে আছে ৮৯ আসনে এবং মুখ্যমন্ত্রী নিতীশ কুমারের জনতা দল–ইউনাইটেড (জেডি–ইউ) এগিয়ে ৭৯ আসনে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী চিরাগ পাসওয়ানের লোক জনশক্তি পার্টি (রামবিলাস) ২১টি আসনে এগিয়ে রয়েছে।
অন্যদিকে, বিরোধী জোট মহাগাঠবন্ধন বলা যায় ধুঁকছে। তারা এখন পর্যন্ত এগিয়ে আছে মাত্র ৫০টি আসনে। এই জোটের মধ্যে তেজস্বী যাদবের রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) ৩৪টি এবং কংগ্রেস মাত্র ৪টি আসনে এগিয়ে। সিপিআই (এমএল-লিবারেশন) পাঁচটিতে এবং সিপিএম একটি আসনে এগিয়ে আছে।
মহাগাঠবন্ধনের মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী তেজস্বী যাদব তার পারিবারিক দুর্গ রঘুপুরে এবার অস্বস্তিকর লড়াইয়ে আটকা পড়েছেন। তিনি ২০১৫ সাল থেকে এই আসনেরই বিধায়ক। তবে ২৫ বছরের গায়িকা মৈথিলী ঠাকুর বিজেপির প্রার্থী হিসেবে প্রথমবার নির্বাচনে দাঁড়িয়ে আলীনগর আসনে এগিয়ে আছেন। আসাদউদ্দিন ওয়াইসির অল ইন্ডিয়া ইত্তেহাদুল মুসলেমিন পাঁচটি আসনে এগিয়ে আছে, যা সীমাঞ্চলের মুসলিম ভোট তাদের পকেটে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
২০২০ সালের নির্বাচনে আরজেডি ৭৫ আসন জিতে একক বৃহত্তম দল ছিল। সেই নির্বাচনে বিরোধী জোট মাত্র ১২ আসনের ঘাটতিতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায়। এবারের ভোটে অবশ্য বিজেপির যাত্রাপথ ২০২০ সালের সুরেই এগোচ্ছে। তখন সমস্ত প্রতিকূলতা পেরিয়ে বিজেপি নিতীশ কুমারের জেডিইউ-র চেয়ে বেশি আসনে জিতে জোট রাজনীতিতে নিজস্ব আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করে।
এবারও দুই দলই লড়েছে ১০১টি আসনে। জেডিইউ যদিও ২০২০ সালের ৪৩ থেকে উন্নতি করে অনেক বেশি আসনে এগোচ্ছে, কিন্তু তবু বিজেপির চেয়ে প্রায় ১০ আসন পেছনে। এনডিএ-এর এই এগিয়ে থাকা আংশিকভাবে নারীদের ব্যাপক অংশগ্রহণের ফল বলেই বিশ্লেষকদের ধারণা।
মন্তব্য করুন