
জনগণের সমালোচনা ও ক্ষোভের মুখে পড়ে দুই শতাধিক খাদ্যপণ্যের ওপর থেকে শুল্ক প্রত্যাহার করেছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এ সংক্রান্ত একটি আদেশে স্বাক্ষর করার পর ইতোমধ্যে তা কার্যকরও হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্যপণ্য ব্যবসায়ীদের জাতীয় সংস্থা ফুড ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্ক প্রত্যাহারের পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে এক বিবৃতিতে বলেছেন, “এই সিদ্ধান্তের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ ভোক্তা, আমদানিকারক, উদ্যোক্তা এবং খাদ্য সরবরাহ চেইনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাই লাভবান হবে।”
রয়টার্সের শুক্রবার প্রকাশিত খবর অনুসারে ট্রাম্প কিছু খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে গিয়েছিল স্বীকার করলেও মূল্যস্ফীতির আশঙ্কা নাকচ করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে কোনো মূল্যস্ফীতি নেই। বর্ধিত দাম কমাতে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
গত ২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্টের শপথ গ্রহণের প্রায় আড়াই মাসের মাথায় ২রা এপ্রিল শতাধিক দেশের ওপর বর্ধিত রপ্তানি শুল্ক আরোপ করেন ট্রাম্প। অতিরিক্ত এই শুল্ক আরোপকে ‘যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা’ বলেও উল্লেখ করেছিলেন তিনি।
ট্রাম্পের অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের ফলে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক সম্পর্কে গুরুতর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। খাদ্য ও কৃষি বাজারে পণ্যের সরবরহ আসত এশিয়া, লাতিন আমেরিকা ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকে। এসব মহাদেশভুক্ত প্রায় সব দেশের ওপর উচ্চ রপ্তানি শুল্ক আরোপ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন এবং এর আঁচ বেশ ভালোভাবেই পাওয়া যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্যপণ্যের বাজারে— বিভিন্ন দেশী পণ্যের উপস্থিতি কমে গেছে। ফলে খাদ্য ও কৃষিজসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম বেড়ে যায়।
দেশটির খাদ্যপণ্যের বাজার বিষয়ক সূচক কনজ্যুমার প্রাইস ইনডেক্সের সেপ্টেম্বর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরের তুলনায় ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরে অভ্যন্তরীণ বাজারে গরুর মাংসের কিমার দাম বেড়েছে ১৩ শতাংশ এবং স্টেক-এর দাম বেড়েছে ১৭ শতাংশ। এছাড়া কলার দাম বেড়েছে ৭ শতাংশ, টমেটোর দাম বেড়েছে ১ শতাংশ এবং সার্বিকভাবে সব খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে ২ দশমিক ৭ শতাংশ।
শুক্রবারে এয়ারফোর্স ১ এর ফ্লাইটে সাংবাদিকরা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে প্রশ্ন করেছিলেন যে ভবিষ্যতে তার শুল্কনীতিতে আরও কোনো পরিবর্তন আসবে কি না।
জবাবে ট্রাম্প বলেন, “আমার মনে হয় না আর কোনো পরিবর্তনের প্রয়োজন আছে। আমরা শুধু একটু পিছিয়ে এসেছি। কফির দাম বেশ খানিকটা বেড়ে গিয়েছিল, খুব শিগগিরই তা স্বাভাবিক পর্যায়ে নেমে আসবে।”
মন্তব্য করুন