রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫

কাতারের মধ্যস্থতায় শান্তি ফিরছে কঙ্গোয়

বৈশাখী ডেস্ক
প্রকাশ : ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:২৮ এএম

কাতারের মধ্যস্থতায় অবশেষে শান্তির পথে হাঁটছে কঙ্গো।

শনিবার (১৫ নভেম্বর) কাতারের রাজধানী দোহায় শান্তিচুক্তির কাঠামোতে সই করেছে কঙ্গো সরকার এবং দেশটির শক্তিশালী বিদ্রোহী গোষ্ঠী এম২৩। শান্তি চুক্তির খসড়া স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে দুই পক্ষের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

কঙ্গোয় সহিংসতায় এতদিন হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছে, আর ঘরবাড়ি ছেড়ে বাস্তুচ্যুত হয়েছে লক্ষাধিক। পরিস্থিতি ধীরে ধীরে পুরো অঞ্চলে বড় ধরনের যুদ্ধের ঝুঁকি তৈরি করছিল।

হাজারও মানুষের প্রাণ কেড়ে নেওয়া সংঘাতের অবসানে মধ্য-আফ্রিকার দেশ গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র (ডিআরসি)-এর পূর্বাঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে চলা সংঘর্ষ থামানোর লক্ষ্যেই এই চুক্তি।

এম২৩ বিদ্রোহীরা গত জানুয়ারিতে পূর্বাঞ্চলের সবচেয়ে বড় শহর গোমা দখল করেছিল। এরপর উত্তর কিভু ও দক্ষিণ কিভুর বেশ কিছু এলাকায় তাদের প্রভাব বেড়ে যায়। প্রতিবেশী রুয়ান্ডার শর্তহীন সমর্থন পাওয়ার অভিযোগ থাকলেও রুয়ান্ডা বরাবরই তা অস্বীকার করেছে।

চলমান এই সংঘাত প্রায় পূর্ণমাত্রার আঞ্চলিক যুদ্ধে রূপ নেওয়ার হুমকি সৃষ্টি করেছে। ওয়াশিংটন ও দোহায় বিভিন্ন কূটনৈতিক প্রক্রিয়া চলার মাঝেও কঙ্গোতে সহিংসতা থামেনি। শুক্রবার দেশটির নর্থ কিভু প্রদেশে আইএস-সমর্থিত জঙ্গিদের হামলায় ২৮ জন নিহত হয়েছেন বলে স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্র ও কাতারের মধ্যস্থতায় কঙ্গোর কয়েক দশক ধরে চলা সংঘাতের অবসানে বেশ কয়েকটি নথিতে স্বাক্ষর হয়েছে। মার্কিন ও কাতারি কর্মকর্তারা এই খসড়াকে শান্তির পথে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে বর্ণনা করলেও সামনে আরও বহু পথ অতিক্রম করতে হবে বলে জানিয়েছেন তারা। কারণ চুক্তির অনেক বিষয় এখনও চূড়ান্ত হয়নি।

মধ্যপ্রাচ্যে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ দূত মাসাদ বুলুস ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, খসড়া চুক্তিটি আটটি প্রোটোকলে সাজানো হয়েছে; যার মধ্যে ছয়টির বাস্তবায়ন ব্যবস্থা নিয়ে এখনও কাজ বাকি আছে।

তিনি বলেন, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বন্দি বিনিময় ও যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণ-সংক্রান্ত প্রথম দুটি প্রোটোকলের বাস্তবায়ন ধীরগতির ছিল। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, প্রথম কয়েক সপ্তাহে কাজ একটু ধীরগতিতে এগিয়েছে। মানুষ হয়তো সংঘাতস্থলে তাৎক্ষণিক কিছু ফলাফল দেখতে চেয়েছিল। কিন্তু এটি একটি প্রক্রিয়া... এটি এমন কোনও সুইচ নয় যে অন-অফ করে দেওয়া যাবে।

কাতারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুলআজিজ আল-খুলাইফি বলেন, শনিবারের চুক্তি দুই পক্ষকে শান্তির পথে এগিয়ে নিয়েছে। তিনি বলেন, শান্তি বল প্রয়োগে চাপিয়ে দেওয়া যায় না; এটি গড়ে ওঠে আস্থা, পারস্পরিক সম্মান ও আন্তরিক প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে।

গত এপ্রিল থেকে কাতারের উদ্যোগে কঙ্গো সরকার ও এম২৩ বিদ্রোহীদের সরাসরি আলোচনার কয়েকটি ধাপ অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনাগুলো মূলত পূর্বশর্ত ও পারস্পরিক আস্থার বিষয়গুলোতেই সীমিত ছিল। গত জুলাইয়ে নীতিমালার একটি ঘোষণায় সম্মত হয় দুই পক্ষ। তবে মূল সংঘাত তখনও অমীমাংসিত ছিল। অক্টোবর মাসে তারা যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত আরেকটি চুক্তিতে পৌঁছায়।

সাম্প্রতিক এই শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরকে কঙ্গো সরকার এবং এম২৩ বিদ্রোহীদের বৃহত্তর যুদ্ধবিরতি চুক্তির দিকে অগ্রসর হওয়ার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
গাজার যুদ্ধবিরতি চুক্তি সঙ্কটাপন্ন মুহূর্তে: কাতারের প্রধানমন্ত্রী
গাজার যুদ্ধবিরতি চুক্তি সঙ্কটাপন্ন মুহূর্তে: কাতারের প্রধানমন্ত্রী
মোদিকে নিয়ে মন্তব্য, গ্রেপ্তার হতে পারেন যে গায়িকা
মোদিকে নিয়ে মন্তব্য, গ্রেপ্তার হতে পারেন যে গায়িকা
ইমরান খানকে নিয়ে সেনাবাহিনীর অভিযোগ হাস্যকর : পিটিআই
ইমরান খানকে নিয়ে সেনাবাহিনীর অভিযোগ হাস্যকর : পিটিআই
৩ ফুট উচ্চতার গণেশ এখন চিকিৎসক
সার্কাসে বিক্রির প্রস্তাব পাওয়া সেই / ৩ ফুট উচ্চতার গণেশ এখন চিকিৎসক