রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫

সাংবাদিক সোহেলকে কেন ডিবি হেফাজতে নেওয়া হয়েছিল, জানালেন নিজেই

বৈশাখী প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ০১:০০ পিএম
আপডেট : ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ০১:২২ পিএম

দৈনিক ভোরের কাগজের অনলাইন এডিটর মিজানুর রহমান সোহেলকে বুধবার (১৯ নভেম্বর) মধ্যরাতে ডিবি পরিচয়ে তার বাসা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার প্রায় সাড়ে ১০ ঘণ্টা পর মুক্তি দেয়া হয়।

এরপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ বিষয়ে তার বক্তব্য তুলে ধরেন।

বিনা অপরাধে তাকে ডিবি হেফাজতে থাকার পর তাকে সসম্মানে সকাল ১১টায় বাসায় পৌঁছে দেয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘গত রাত ১২টার দিকে ডিবি প্রধান আমার সঙ্গে কথা বলবেন, এই অজুহাতে ৫/৬ জন ডিবি সদস্য জোর করে আমাকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায়।’

মিজানুর রহমান জানান, ‘ডিবিতে নিয়ে আসামির খাতায় আমার নাম লেখা হয়। জুতা-বেল্ট খুলে রেখে গারদে আসামীদের সাথে আমাকে রাখা হয়। কিন্তু কেন আমাকে আটক করা হলো? তা আমি যেমন জানতাম না, তেমনি যারা আমাকে তুলে এনেছিলেন বা ডিবির উর্দ্ধতন কর্মকর্তারাও কিছু বলতে পারেননি।’

‘দীর্ঘ সময় পর বুঝতে পারলাম, সরকারের একজন উপদেষ্টার ইশারায় মাত্র ৯ জন মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীকে মনোপলি ব্যবসা করার সুযোগ দেয়ার জন্যই আমাকে আটক করা হয়েছিল। আমার সাথে সংগঠনের সেক্রেটারি আবু সাঈদ পিয়াসকেও আটক করা হয়। তিনি এখনও ডিবি কার্যালয়ে আছেন।’

বুধবার ন্যাশনাল ইক্যুইপমেন্ট আইডেন্টিফিকেশন রেজিস্টার (এনইআইআর) নিয়ে ডিআরইউতে মোবাইল হ্যান্ডসেট ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিজনেস কমিউনিটি বাংলাদেশ (এমবিসিবি)-এর প্রেস কনফারেন্স করার কথা ছিল। মিজানুর রহমান সোহেল সেখানে মিডিয়া পরামর্শক ছিলেন।

সেই প্রেস কনফারেন্স বন্ধ করাই তাদের প্রধান টার্গেট ছিল বলে বক্তব্য এ সাংবাদিকের।

তিনি রসাত্মকভাবে বলেন, ‘কিন্তু তাদের জন্য আফসোস, যে উদ্দেশ্যে তারা প্রেস কনফারেন্স বন্ধ করতে চাইলো সেটা দেশের সবাই জেনে গেলো। দেশের মুক্ত বাণিজ্য নীতির সঙ্গে এনইআইআর স্পষ্টতই সাংঘর্ষিক। প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে দেশে প্রতিযোগিতা কমিশনও রয়েছে। অথচ মাত্র ৯ জন ব্যবসায়ীকে সুবিধা দিতে সারাদেশে ২৫ হাজার মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীকে পথে বসানোর গভীর চক্রান্ত চলছে।’

তিনি জানান, ‘এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে গ্রামের সাধারণ মানুষ, প্রবাসীসহ অনেকেই বিপদে পড়বেন। একটা চেইন ভেঙ্গে পড়বে। অনেক ব্যবসায়ী পথে বসে যাবে। জেনে রাখা ভালো, এই ৯ জনের একজন ওই উপদেষ্টার স্কুল-বন্ধু।’

মিজানুর রহমান অভিযোগ জানিয়ে প্রশ্ন তোলেন, ‘একটা ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কথা বললে সরকার কেন ভয় পায়? শুধুমাত্র প্রেস কনফারেন্স বন্ধ করতেই কি আমাকে গভীর রাতে জোর করে তুলে নিতে হলো? যারা মুখে ‘বাকস্বাধীনতা’র বুলি আওড়ান, তারাই কি আমাকে বাকরুদ্ধ করতে এই আয়োজন করলেন? মগের মুল্লুকে এই কি তবে বাকস্বাধীনতার বাস্তব চিত্র?’

সবশেষে এ সাংবাদিক তার শুভাকাঙ্ক্ষীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান্ তিনি লিখেন, ‘আমাকে আটক করার ঘটনা জানাজানি হতেই বহু শুভাকাঙ্ক্ষী, ভাই, বন্ধু, সহকর্মী উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। অনেকেই খবর নিয়েছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় স্ট্যাটাস দিয়েছেন, বিবৃতি দিয়েছেন, সংবাদ প্রকাশ করেছেন। তাদের এই সমর্থন ও আওয়াজের কারণেই আমি দ্রুত মুক্তি পেয়েছি বলে বিশ্বাস করি। যারা আমার পাশে ছিলেন তাদের সবার প্রতি আমার অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা।’

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
ডিআরইউ’র সহ-সভাপতি নির্বাচিত হলেন বৈশাখী টিভির মাসুম
ডিআরইউ’র সহ-সভাপতি নির্বাচিত হলেন বৈশাখী টিভির মাসুম
সাংবাদিকদের বিশেষ ছাড়ে ই-বাইক দিচ্ছে ন্যামস মোটরস
সাংবাদিকদের বিশেষ ছাড়ে ই-বাইক দিচ্ছে ন্যামস মোটরস
দ্য নিউজের প্রকাশককে আ. লীগ নেতার ছেলের হুমকি, থানায় জিডি
দ্য নিউজের প্রকাশককে আ. লীগ নেতার ছেলের হুমকি, থানায় জিডি
রাঙামাটিতে শেষ হল সাংবাদিকদের ৩ দিনব্যাপী ‘ডিজিটাল মিডিয়া প্রশিক্ষণ’
রাঙামাটিতে শেষ হল সাংবাদিকদের ৩ দিনব্যাপী ‘ডিজিটাল মিডিয়া প্রশিক্ষণ’