
সংবিধানে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরিয়ে দিয়ে রায় দিলেন আপিল বিভাগ।
আজ বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এই রায় দেন। এটি কার্যকর হবে চতুর্দশ নির্বাচন থেকে।
এর ফলে, ১৪ বছর আগে বাতিল ঘোষণা করা নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরলো আবারও। টানা ১০ দিন শুনানি শেষে দেশের সর্ব্বোচ আদালত ঐতিহাসিক এ মামলার রায়ের দিন ঠিক করেন।
রায়ে আপিল বিভাগ বলেছেন, 'আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে। আর চতুর্দশ সংসদ নির্বাচন থেকে কার্যকর হবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা।'
নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায় অবৈধ ঘোষণা করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে ত্রয়োদশ সংশোধনী বৈধ ঘোষণা করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহাল করার রায় দিয়েছেন দেশের সব্বোর্চ আদালত।
রায়ে আপিল বিভাগ বলেছেন, 'আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে। আর চতুর্দশ সংসদ নির্বাচন থেকে কার্যকর হবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা।'
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া, বিএনপির পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহামদ শিশির মনির। ইন্টারভেনর হিসেবে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিকী, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, অ্যাডভোকেট মহসীন রশিদ, ব্যারিস্টার শাহরিয়ার কবির। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক।
আপিলকারী ও রাষ্ট্রপক্ষ শুনানিতে বলেন, দেশের গণতন্ত্রের জন্য আবারও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরা উচিত। এই সরকার ব্যবস্থা বাতিলের পরই দেশে রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়।
বিএনপির আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেন, এই রায়ের মাধ্যমে দেশের মানুষ নিজের ভোট নিজে দিতে পারবেন, গণতন্ত্র রক্ষা হবে। আজ আমরা সংঘাতের রাজনীতি থেকে মুক্ত হলাম।
সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে গৃহীত হয় ১৯৯৬ সালে। এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগ এ রিট খারিজ করেন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করা হয়।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১১ সালের ১০ মে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করেন। ফলে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাও বাতিল হয়ে যায়।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি।
মন্তব্য করুন