
৪৭তম বিসিএস প্রিলিমিনারির পর লিখিত পরীক্ষার উপযুক্ত প্রস্তুতির জন্য কেবল দু’মাস সময় দেয়াকে কেন্দ্র করে আন্দোলন করে আসছিলেন চাকরিপ্রার্থীরা। তাদের সাথে সংহতি প্রকাশ করে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ও এনসিপি যৌক্তিক পরিবর্তনের আহ্বান জানান।
৪৭তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ১৯ সেপ্টেম্বর ও ফলাফল প্রকাশ হয় ২৮ সেপ্টেম্বর। এর লিখিত পরীক্ষা আগামী ২৭ নভেম্বর থেকে শুরু হতে যাচ্ছে। পরীক্ষার মাত্র এক সপ্তাহ বাকি থাকলেও প্রার্থীরা এখনো পরীক্ষার সময় পিছিয়ে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন করছেন। তাদের দাবি, এর আগে কোনো বিসিএস পরীক্ষার লিখিত পর্ব এত দ্রুত অনুষ্ঠিত হয়নি।
নিকট অতীতের বিভিন্ন বিসিএসের প্রিলিমিনারি রেজাল্ট প্রকাশিত হওয়ার পর লিখিত পরীক্ষা নেওয়ার সময়ের ব্যবধান পর্যালোচনায় দেখা যায় ৬ মাসের কম সময়ের ব্যবধানে প্রিলি-পরবর্তী লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। তাই শিক্ষার্থীদের দাবি বিবেচনায় নিয়ে দ্রুত কোনো সমাধানে এলে তা সবার জন্যই কল্যাণকর হবে।
বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে পরীক্ষার সময়সূচি পরিবর্তন করার দাবিতে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিটি কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক সিবগাতুল্লাহর নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল কমিশনের চেয়ারম্যানের কাছে পৌঁছে দেন।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, গত ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের অধীনে ৪৭তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছিল এবং পূর্বঘোষিত লিখিত পরীক্ষার সময়সূচি অনুযায়ী আগামী ২৭ নভেম্বর ২০২৫ তারিখ থেকে লিখিত পরীক্ষা শুরু হবে। অর্থাৎ, প্রিলিমিনারি পরীক্ষা পরবর্তী লিখিত পরীক্ষার মধ্যে সময়ের ব্যবধান মাত্র ৬৯ দিন।
নিয়োগ প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতা কমানো এবং অন্যান্য নিয়োগসমূহ রোডম্যাপ অনুযায়ী সম্পন্ন করার পিএসসির এই পদক্ষেপ অবশ্যই প্রশংসনীয়। কিন্তু প্রিলি-পরবর্তী ২ মাসের কাছাকাছি সময়ের ব্যবধানে লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি সম্পন্ন করা, বিশেষ করে প্রথমবারের মতো লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এদিকে একইদিন ৪৭তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষার্থীদের দাবি বিবেচনায় নিয়ে দ্রুত সমাধানের জন্য বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
দলটির যুগ্ম সদস্যসচিব ফয়সাল মাহমুদ শান্ত স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন সম্প্রতি বিসিএস পরীক্ষায় দ্রুততা, স্বচ্ছতা ও সংস্কারের যে উদ্যোগ নিয়েছে, আমরা জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) তা ইতিবাচকভাবে স্বাগত জানাই। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ৪৭তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষার তারিখকে কেন্দ্র করে পরীক্ষার্থীদের ন্যায্য উদ্বেগ পিএসসির বিবেচনায় নেওয়া জরুরি বলে এনসিপি মনে করে।
এনসিপি-র ভাষ্যে, একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পিএসসি নিশ্চয়ই শিক্ষার্থীবান্ধব সিদ্ধান্ত নেবে এবং লিখিত পরীক্ষাকে দুই মাসের “ম্যারাথন প্রতিযোগিতা” না বানিয়ে একটি ন্যায্য ও সঠিক মেধা যাচাইয়ের প্রক্রিয়া হিসেবে বজায় রাখবে।
উল্লেখ্য, ৪৭তম বিসিএস পরীক্ষায় ১০,৬৪৪ জন প্রার্থী উত্তীর্ণ হয়েছেন। এবার ক্যাডার পদ ৩,৪৮৭টি এবং নন-ক্যাডার ২০১টি পদসহ মোট ৩,৬৮৮টি পদ রয়েছে।
মন্তব্য করুন