
জাল কাগজে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের দপ্তর সম্পাদক দেখিয়ে পটুয়াখালীর বাউফলে বিএনপি কর্মী ফয়সাল পঞ্চায়েতকে গ্রেফতার করানোর অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষ মোসলেম পঞ্চায়েত ওরফে মোচনের বিরুদ্ধে।
সোমবার (১ ডিসেম্বর) দুপুরের দিকে এ ঘটনায় ডিবির একটি দল তাকে আটক করে। পরে একটি রাজনৈতিক মামলায় তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। বর্তমানে ফয়সাল কারাগারে রয়েছে।
এর আগে, স্বেচ্ছাসেবক লীগের উপজেলা কমিটির অফিসিয়াল প্যাড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই প্যাডে দপ্তর সম্পাদকের স্থানে ফয়সাল পঞ্চায়েতের নাম লেখা আছে।
গ্রেফতার ফয়সাল পঞ্চায়েতের বোন মিম্মি পঞ্চায়েতের দাবি, তার পরিবার আজীবন উপজেলা বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন।
তিনি জানান, “আমার ভাই কখনোই স্বেচ্ছাসেবক লীগের রাজনীতি করেনি। আমাদের বাড়ির ভূমিদস্যু মোচন পঞ্চায়েত পারিবারিক জমি-সংক্রান্ত বিরোধের জেরে জাল কাগজ বানিয়ে ভাইকে স্বেচ্ছাসেবক লীগের দপ্তর সম্পাদক হিসেবে উপস্থাপন করায় এবং গ্রেফতার করায়।”
তিনি আরও বলেন, “মোচন পঞ্চায়েত শুধু আমাদের সাথেই এমন করেন না, বাড়ির সকলের সাথেই তিনি জমি নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি করে রেখেছেন। মোটামুটি সকলকে বিভিন্ন মামলায় হয়রানি করেন তিনি।”
বন্দির চাচাতো ভাই রিয়াজ পঞ্চায়েত বলেন, “গ্রেফতার ফয়সাল উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সদস্য। আসন্ন কমিটিতে পদও প্রত্যাশা করেন তিনি।”
তিনি বলেন, “একটি চক্র শুধু তাকেই ফাঁসায়নি, মিথ্যা মামলায় আমাকেও আওয়ামী লীগ সাজিয়েছিলো; যেখানে আমি বিগত দিনে একাধিকবার আওয়ামী নির্যাতনের শিকার হয়েছিলাম। পরে পুলিশের তদন্তে আমার বিষয়টি মিথ্যা প্রমাণ হয়েছিলো।”
এদিকে, উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের এক নেতার সাথে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করা হলে অজ্ঞাত স্থান থেকে নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, “কমিটির তালিকার যেই প্যাড ভাইরাল হয়েছে সেটি শতভাগ সঠিক। তবে দপ্তর সম্পাদকের স্থানে ফয়সাল পঞ্চায়েতের নামটি ভুয়া। কেউ ‘সুপার এডিটিং’-এর মাধ্যমে দপ্তর সম্পাদক জসিমের স্থানে ফয়সালের নাম বসিয়েছেন।”
তবে এসব বিষয়ে কিছুই জানেন না দাবি করে অভিযুক্ত মোসলেম পঞ্চায়েত সাংবাদিকদের বলেন, “এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন। আমি কাউকে ফাঁসানোর কাজে কখনোই জড়িত নই। আমি একান্তই ব্যক্তিগত জমির বাইরে অন্যের জমির কাছেও যাই না। যারা আমার জমি দখলের চেষ্টা করে, তারা হয়তো আমাকে এসব মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে।”
এ বিষয়ে পটুয়াখালী জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কোনো কর্মকর্তা কথা বলতে রাজি হননি।
বাউফল থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আতিকুল ইসলাম জানান, তাকে গ্রেফতারের বিষয় প্রথমে থানা পুলিশ অবগত ছিল না। ডিবি আটক করার পরে আমরা ঘটনা জানতে পারি। ২০২৪ সালের জুলাই–আগস্ট মাসে দায়ের করা একটি রাজনৈতিক মামলায় তাকে কারাগারে পাঠায় ডিবি। তার রাজনৈতিক পরিচয়ের সত্যতা যাচাই-বাছাই করে আদালতকে জানানো হবে বলেও জানান তিনি।
মন্তব্য করুন