
পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলা পরিষদ চত্বরে ৮টি কুকুরছানাকে বস্তায় ভরে পুকুরে ফেলে হত্যার ঘটনায় অবশেষে নিশী রহমান এর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আকলিমা খাতুন প্রাণী কল্যাণ আইন ২০১৯–এর ৭ ধারায় মামলাটি করেন।
জানা গেছে, ঘটনাটি জাতীয় গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক নিন্দা তৈরি হয়। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার ফোন করে ঘটনাটিকে অমানবিক উল্লেখ করেন এবং মামলা করতে নির্দেশনা দেন। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকও স্থানীয় প্রশাসনকে একই নির্দেশ দেন। পরে ঢাকা থেকে এনিম্যাল অ্যাকটিভিস্ট কমিটির একটি তদন্ত দল ঈশ্বরদীতে আসে।
এজাহারে বলা হয়েছে, ১৫ দিন আগে উপজেলা আবাসিক এলাকার একটি বাসার সিঁড়ির নিচে একটি কুকুর ৮টি ছানা প্রসব করে। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মা কুকুরটিকে খাবার দিতেন। ১ ডিসেম্বর থেকে মা কুকুরটি ছানাগুলোকে না পেয়ে পুরো এলাকা ঘুরে ঘুরে আর্তনাদ করছিল। পরদিন খোঁজ করতে গিয়ে নয়নের শিশু ছেলে আফান জানায়, তার মা কুকুরছানাগুলোকে বস্তায় ভরে পুকুরে ফেলে দিয়েছেন। পরে মালি জাহাঙ্গীর বস্তাটি তুলে এনে দেখে সবগুলো ছানা মৃত।
ঘটনা নিয়ে দেশজুড়ে তীব্র নিন্দা ছড়িয়ে পড়ে। একটি সূত্র দাবি করে, নয়ন ও নিশী দুজনেই মিলে কাজটি করেছেন। তবে নয়ন বলেন, “বিষয়টি অমানবিক। মন্তব্য করতে চাই না। আমি খুব মর্মাহত ও লজ্জিত।”
অভিযুক্ত নিশী রহমান বাসা ছাড়ার প্রস্তুতির সময় বলেন, তিনি ছানাগুলোকে কেবল সজিনা গাছের গোড়ায় রেখে এসেছিলেন, পুকুরে ফেলেননি।
বর্তমানে মা কুকুরটিকে উপজেলা প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে বিশেষ পরিচর্যায় রাখা হয়েছে বলে জানান আকলিমা খাতুন।
পাবনা আদালতের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট খায়রুল আলম দুলাল বলেন, দণ্ডবিধির ৪২৯ ধারায় প্রাণী হত্যা বা ক্ষতিসাধনে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান জানান, নয়নকে মঙ্গলবারের মধ্যে কোয়ার্টার ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তারা ইতোমধ্যে বাসা খালি করেছেন।
মন্তব্য করুন