
		অনলাইন ডেস্ক : হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নরওয়ে প্রবাসী একযাত্রীকে মারধর করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে এভিয়েশন সিকিউরিটি ফোর্সের (এভসেক) সদস্যরা ওই যাত্রীকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছে।
বুধবার (৮ জানুয়ারি) রাত সোয়া ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ মানুষ।
ভিডিওতে মারপিটের শিকার ব্যক্তিকে বলতে শোনা যাচ্ছে, আপনারা ৫/৬ জন ধরে আমাকে মারছেন। আর পাশে থাকা এভসেক সদস্য বলছেন, আমাকে ধাক্কা দিলেন। আমি কী সাধারণ মানুষ। আমার ইউনিফর্ম আছে। তবে ধাক্কা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে আহত ব্যক্তি বলছেন, আমার কথা শোনেন ভাইয়া, আমি দেইনি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মারধরের শিকার ব্যক্তির নাম সাঈদ উদ্দিন (৩০)। তার বাড়ি ফেনীর সোনাগাজীতে।
জানা যায়, রাত সোয়া ৯টার দিকে তিনি বিমানবন্দরের ২ নম্বর ক্যানোপি গেট দিয়ে বেরিয়ে আসেন। গেট সংলগ্ন ডানপাশে দাঁড়ানো অবস্থায় এক এভসেক সদস্যের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। এ সময় যাত্রী উত্তেজিত হয়ে তাকে ধাক্কা দেন। এর পরপরই অন্যান্য এভসেক সদস্য ও আনসার সদস্যরা সাঈদকে জোর করে ভেতরে কনকর্স হলের দিকে নিয়ে যায়। এ সময় ৭/৮ জন মিলে তাকে বেদম মারপিট করে। এতে করে সাঈদের মাথা-চোখ-মুখ ফেটে রক্তাক্ত হয়ে যায়। পরে তারাই আবার সাঈদকে বের করে দেয়।
এদিকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গণমাধ্যমে লিখিত আকারে তার বক্তব্য পাঠান। তিনি তার বক্তব্যে আহত যাত্রীর নাম উল্লেখ করেননি।
তিনি লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন, ‘রাত সোয়া ৯ টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আন্তর্জাতিক আগমনী ক্যনোপি ২-এর সামনে ২ জন যাত্রী কর্তৃক বিমানবন্দরের একজন নিরাপত্তা সদস্যকে শারীরিকভাবে আঘাতের ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা এবং প্রাথমিক তদন্ত মোতাবেক জানা যায়, ৫ জন আগমনী যাত্রীর একটি দল বিমানবন্দরের কার্যক্রম শেষ করে ক্যনোপি ২ এলাকা দিয়ে বের হয়ে যাওয়ার সময় তাদের মধ্যে ১ জন ট্রলিসহ গেটের ঠিক সম্মুখভাগে অবস্থান করলে সকল আগমনী যাত্রীর জন্য প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়। ওই সময় অত্র এলাকায় সম্মানিত আগমনী যাত্রীদের চাপ বেশি থাকায় কর্তব্যরত ১ জন নিরাপত্তাকর্মী বিনীতভাবে ওই যাত্রীকে কিছুটা সরে দাঁড়ানোর জন্য অনুরোধ করলে তিনি তাতে কর্ণপাত না করে দাঁড়িয়ে থাকেন। পরবর্তীতে কিছুক্ষণ পরে ওই নিরাপত্তাকর্মী আবার ওই যাত্রীকে সরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করতে গেলে তিনি প্রচণ্ড রাগান্বিত হয়ে পড়েন এবং অকথ্য-অশ্রাব্য ভাষায় ওই নিরাপত্তাকর্মীকে গালিগালাজ করতে থাকেন। এ সময় ওই স্থানে নিয়োজিত আরও একজন নিরাপত্তাকর্মী উল্লেখিত যাত্রীকে শান্ত করার চেষ্টা করলে এক পর্যায়ে উল্লেখিত যাত্রীর পুত্র (একই ফ্লাইটের যাত্রী, যিনি পেছনে অবস্থান করছিলেন) ঘটনাস্থলে এসে বিমান বাহিনীর ওই নিরাপত্তাকর্মীকে শারীরিকভাবে আঘাত ও লাঞ্ছিত করেন। যাত্রীরা ওই নিরাপত্তাকর্মীকে কিলঘুষি মারা শুরু করলে তাদের মধ্যে ধ্বস্তাধস্তি হয় এবং ওই নিরাপত্তাকর্মী মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
একপর্যায়ে পরিস্থিতি মোকাবিলায় অত্র স্থলে নিয়োজিত আনসার এবং এভিয়েশন সিকিউরিটির সদস্যরা এগিয়ে এলে ওই নিরাপত্তা কর্মীদেরকে উল্লেখিত দুজন যাত্রীর হাত থেকে মুক্ত করা হয়।’
মন্তব্য করুন