
নোয়াখালী জেলাকে বিভাগ বাস্তবায়নের দাবিতে সোমবার (৬ অক্টোবর) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাব অডিটোরিয়ামে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
নোয়াখালীকে বিভাগ ঘোষণা করার জন্য নোয়াখালী জেলাবাসী ১৯৯০ সাল থেকে সরকারের নিকট দাবি জানিয়ে আসছে। বিগত ২০১০ সাল থেকে নোয়াখালীর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে, রাজধানী ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাব ও চট্টগ্রামসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও নোয়াখালী বিভাগ দাবিতে সভা-সমাবেশ এবং মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এছাড়া ২০১৫ সালে নোয়াখালীর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বরাবরে নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়ন দাবিতে জেলা শহর মাইজদিতে বিশাল মানববন্ধন শেষে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
২০১৬ সালে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনার আলোকে বৃহত্তর নোয়াখালীর ৩ জেলার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, সুধীজন ও স্থানীয় রাজনীতিবিদদের অংশগ্রহণে মতবিনিময় সভায় নোয়াখালীকে বিভাগ ঘোষণা করার দাবি জানানো হয়েছিল এবং এ সংক্রান্ত কার্যপত্র বা রেজুলেশন নোয়াখালী, ফেনী ও লক্ষ্মীপুর জেলার তৎকালীন জেলা প্রশাসকগণ কর্তৃক সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়।
নোয়াখালীবাসী ১৯৯৪ সাল থেকে নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাসমূহকে নিয়ে নোয়াখালী বিভাগ গঠনের দাবি জানিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করছে। বর্তমানে বৃহত্তর নোয়াখালী ও বৃহত্তর কুমিল্লার ছয়টি জেলায় প্রায় দুই কোটি জনসংখ্যা রয়েছে। এই ছয় জেলার আয়তন প্রায় ১৩,৩০৩ বর্গ কিলোমিটার, যা ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠিত সিলেট, বরিশাল ও রংপুর বিভাগের আয়তনের চেয়েও বেশি এবং জনসংখ্যার দিক দিয়েও প্রস্তাবিত নোয়াখালী বিভাগের জনসংখ্যা সিলেট, রংপুর ও বরিশাল বিভাগের চাইতে বেশি।
তাছাড়া, ১৮২৯ সালে যখন চট্টগ্রাম বিভাগ গঠিত হয় তখন বর্তমান বাংলাদেশের জনসংখ্যা ছিল মাত্র ২ কোটি ১০ লাখ। আর এখন শুধু বৃহত্তর নোয়াখালী ও বৃহত্তর কুমিল্লার জনসংখ্যাই হচ্ছে প্রায় দুই কোটি।
সুতরাং এ বিপুল সংখ্যক জনগোষ্ঠীকে বিভাগীয় সেবা দিতে বৃহত্তর নোয়াখালী ও বৃহত্তর কুমিল্লাকে নিয়ে 'নোয়াখালী বিভাগ' গঠন অত্যন্ত জরুরী হয়ে পড়েছে। নোয়াখালীতে সরকারের প্রায় সব ধরনের প্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রশাসন বিকেন্দ্রীকরনের লক্ষে 'নোয়াখালী বিভাগ' গঠন হলে ঢাকা ও চট্টগ্রামের উপর জনগনের চাপ কমবে।
ঢাকা ও চট্টগ্রামে যানজটও কমে আসবে বলে বিশেষজ্ঞগন মনে করেন। আর বর্তমানে নোয়াখালী জেলা আয়তনে কুমিল্লা হতে প্রায় ১২০০ বর্গ কিলোমিটারের চাইতেও বড় জেলা এবং নোয়াখালীর আয়তন ও জনসংখ্যা ধীরে ধীরে বেড়েই চলছে।
এছাড়া, নোয়াখালীর দক্ষিণ উপকূলে নিঝুমদ্বীপ, ভাসানচর, স্বর্ণদ্বীপসহ প্রায় ১ হাজার বর্গ কিলোমিটারের চাইতেও বেশি নতুন ভূমি নোয়াখালীর বুকে জেগে উঠেছে যা বাংলাদেশের জন্য এক অফুরন্ত সম্ভবনা নিয়ে আসছে বলে এখানকার অভিজ্ঞজন মনে করেন।
নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া এই ৬ জেলার মানুষকে বর্তমানে বিভাগীয় কাজকর্মের জন্য বহুকষ্ট এবং সময় ও অর্থ নষ্টকরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনেক ভোগান্তি সহ্য করে চট্টগ্রামে যেতে হয়, যা নিছক হয়রানি মনে করছেন বক্তারা। উল্লেখিত ছয় জেলাকে নিয়ে নোয়াখালী বিভাগ করা হলে এ ছয় জেলার দুই কোটি মানুষ বিভাগীয় সেবা সমভাবে পেতে পারে, দাবি তাদের।
মন্তব্য করুন