
ভারতের কেরালায় সম্প্রতি মস্তিষ্কখেকো জীবাণুতে আক্রান্ত হয়ে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। নেগলিরিয়া ফাওলরি জীবাণুর কারণে প্রাথমিক আমিবিক মেনিংগোএন্সেফালাইটিস রোগের প্রকোপ বেড়েছে, যা একটি বিরল এবং মস্তিষ্কে প্রাণঘাতী সংক্রমণ। গত ৯ মাসে সেখানে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে, এর মধ্যে তিন মাসের এক শিশুও রয়েছে। গত মাসে কোঝিকোড়ে ৫২ বছর বয়সী নারীর মৃত্যু হয় এবং সেপ্টেম্বর মাসে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। বর্তমানে আরও অনেক সক্রিয় রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত ৫২ জন আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত করা হয়েছে। রোগীদের বয়স ৩ মাস থেকে ৯১ বছর পর্যন্ত, এর মধ্যে ৩৩ পুরুষ এবং ১৯ নারী। আগস্ট-সেপ্টেম্বরের মধ্যে একাধিক ক্লাস্টার রিপোর্ট হয়েছে, যা এখন পর্যন্ত সবচেয়ে গুরুতর প্রাদুর্ভাব হিসেবে চিহ্নিত।
এর আগের বছর ২০১৪ সালে কোঝিকোড়, মালাপুরম ও কান্নুরে নেগলিরিয়া ফাওলরি সংক্রমণ দেখা দেয়ার পর কেন্দ্রীয় তদন্ত এবং সতর্কতামূলক নির্দেশিকা জারি করা হয়। খবর গালফ নিউজের।
প্রাথমিকভাবে স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা ধারণা করেছিলেন যে, শুধু পুকুর, হ্রদ বা সুইমিং পুলে সাঁতার কাটলে এই জীবাণুর সংক্রমণ হতে পারে, কারণ পানি নাকের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করলেই ইনফেকশন শুরু হয়। তবে সম্প্রতি একাধিক আক্রান্তের মধ্যে শিশু-নারী-পুরুষ রয়েছে যাদের পুকুরে সাঁতার কাটতে দেখা যায়নি। তারা শুধুমাত্র বাড়ি বা ফ্ল্যাটের বাথরুমে গোসল করেছিল। এবার তাদের আক্রান্তের ঘটনায় আগের ধারণাটি প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।
বিশ্বব্যাপী এই রোগে আক্রান্তের মৃত্যুহার ৯৭ শতাংশ। তবে কেরালায় এর সুরক্ষা হার অনেক বেশি, প্রায় ২৪ শতাংশ, কারণ দ্রুত রোগ নির্ণয় এবং উন্নত চিকিৎসার কারণে। তবে, প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা না থাকায় স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ বেড়ে গেছে।
এই আমিবা উষ্ণ মিঠা পানি যেমন পুকুর, নদী, অযত্নে রাখা কুয়া এবং অপর্যাপ্ত ক্লোরিনযুক্ত সুইমিংপুলে থাকে। এটি নাকের ভেতর দিয়ে শরীরে প্রবেশ করে এবং মস্তিষ্কে গিয়ে কোষ ধ্বংস করতে থাকে। এটি এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তির মধ্যে ছড়ায় না এবং সমুদ্রের পানিতে ছড়াতে পারে না।
প্রাথমিক উপসর্গ (১-১২ দিনের মধ্যে) উচ্চমাত্রায় জ্বর, তীব্র মাথাব্যথা, বমি, শক্ত ঘাড়। পরবর্তী উপসর্গ বিভ্রান্তি, সিজার, বিভ্রম, ভারসাম্যহীনতা, কোমা। চিকিৎসা না করা হলে, ৫-৭ দিনের মধ্যে মৃত্যু হতে পারে।
মন্তব্য করুন