
		এমন একটা যুদ্ধবিমান, যেটা আমেরিকা নিজেই আইন করে বিক্রি নিষিদ্ধ করেছে। এমনকি এখন সেটার উৎপাদনও বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু কেন? কতটা শক্তিশালী হলে এতটা গোপনীয় হয়! আর কি এমনইবা আছে এই বিমানে? চলুন, আজ একটু এসব প্রশ্নের সমাধান খোঁজার চেষ্টা করি।
একটা বিষয় জানলে অবাক হবেন যে আমেরিকার তৈরি নতুন যুদ্ধবিমান এফ-৩৫ প্রায় সবার মুখে মুখে, অনেক দেশেই ওরা এটি বিক্রি করছে, এমনকি তৈরিও করছে গন্ডায় গন্ডায়। কিন্তু এফ-২২ র্যাপ্টর যুদ্ধবিমান এর থেকেও অনেক শক্তিশালী আর কম দৃশ্যত হওয়ায়, আগের মডেল হলেও আমেরিকা তা নিজের কাছেই রেখে দিয়েছে, শুধুমাত্র এই বিমানের কার্যক্ষমতার জন্য। এটি আমেরিকা কারও কাছেই বিক্রি করে না এমনকি ঘনিষ্ট মিত্রের কাছেও না। শুধু তাই নয়, বিমানটি আইন করে বিক্রি নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি এর উৎপাদনও বন্ধ করে রেখেছে মার্কিনিরা। তারা ২০০৯ সালে সিদ্ধান্ত নেয়, এত দামি প্রজেক্ট চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। তাই মাত্র ১৮৭টা এফ-২২ বানিয়েছে দেশটি ।
এফ-২২ র্যাপ্টর কে এক কথায় বলা যায়—‘অদৃশ্য শিকারি।’ এই বিমান এমনভাবে ডিজাইন করা যে শত্রুর রাডারে ধরা পড়ে না। এছাড়াও আছে সুপারক্রুজ নামের এক জিনিস, যার ফলে আফটারবার্নার ছাড়াই শব্দের চেয়ে বেশি গতিতে ওড়ে। আর এই ক্ষমতা খুব কম যুদ্ধবিমানেরই আছে। এ বিমানের থ্রাস্ট-ভেক্টরিং টেকনোলজির কারণে জেট ইঞ্জিনের নজল ঘুরিয়ে, যেকোনো দিকে হঠাৎ টার্ন নিতে পারে, ফলে আকাশে ডগফাইটে কেউ এর সাথে টক্কর দিতে পারে না।
এইসব টেকনোলজি আমেরিকার জন্য এতটাই গুরুত্বপূর্ণ আর গোপন, যে ওরা ভয় পায়—এই বিমান বিক্রি করলে অন্য দেশের হাতে সেই প্রযুক্তি চলে যাবে। শত্রু দেশগুলো হয়তো রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিং করে একই রকম কিছু বানিয়ে ফেলতে পারে। আর এ জন্যই আমেরিকান কংগ্রেস ১৯৯৮ সালে আইন করে দিয়েছিল—‘এফ-২২ কখনও রপ্তানি করা যাবে না।’
এখন প্রশ্ন আসে, তাহলে এফ-৩৫ কেন বিক্রি করছে? কারণ এফ-৩৫ মূলত “মাল্টিরোল” ফাইটার। অনেক দেশের জন্য একসঙ্গে বানানো হয়েছে। এর কিছু টেকনোলজি এফ-২২ র্যাপ্টরের থেকে কম সেনসিটিভ। তাই আমেরিকা এফ-৩৫ বিক্রি করতে চায়, কারণ এতে বাজারও বড় হয়, আর সাপ্লাই চেইনও মজবুত থাকে। কিন্তু এফ-২২ পুরোপুরি আমেরিকার নিজের জন্য।
মন্তব্য করুন