
		আন্তর্জাতিক ডেস্ক: তিন পেরিয়ে চার বছরে গড়ালো রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ। এ পর্যন্ত ইউক্রেনের ১১ভাগ অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে রাশিয়া। অর্থ ও জীবন ক্ষয় হচ্ছে প্রতিদিন, এই সময়ে জয় পায়নি কোনো দেশই।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির পরিবর্তনের জেরে জয়ের পাল্লা রাশিয়ার দিকে হেলে গেছে। যুদ্ধে হারানো ভূমি আর প্রাকৃতিক সম্পদের বিনিময়ে শান্তি ফিরতে পারে ইউক্রেনে। শান্তির জন্য পদত্যাগেও সম্মতি দিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। বিনিময়ে ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্য হিসেবে দেখতে চান তিনি।
এদিকে, ইউক্রেনের প্রতি সংহতি জানিয়ে কিয়েভ সফর করছেন ইউরোপীয় নেতারা। নতুন করে মস্কোর ওপর নিষেধাজ্ঞাও জারি করেছে ইইউ।
২০২২ সালের ২৪শে ফেব্র“য়ারি, বৈশ্বিক ভূরাজনীতির ইতিহাসে বাঁকবদলের একটি বিশেষ দিন। সেদিন ইউক্রেনে তিনদিনের জন্য সেনা অভিযানের ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভাদিমির পুতিন। দানবাস অঞ্চলে রুশ ভাষাভাষী মানুষের ওপর ইউক্রেন সরকারের দমনপীড়ন ও নির্মূল অভিযান থেকে তাদের রক্ষা করা সেনা অভিযানের লক্ষ্য বলে জানিয়েছিলেন তিনি। এরপর সময় গড়িয়ে তিন দিন থেকে তিন বছর পেরিয়েছে।
যুদ্ধের প্রথম বছরেই ইউক্রেনের লুহানস্ক, দোনেৎস্ক, জাপোরিঝিয়া ও খেরসনকে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত করে ডিক্রি জারি করেছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। পরের বছর বাখমুতের নিয়ন্ত্রণও চলে যায় রুশ সেনাদের কাছে। গেলো বছর আভদিভকা শহর থেকেও সেনা প্রত্যাহার করেছে ইউক্রেন। সম্প্রতি কুরস্কের ৪০ শতাংশ অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ পেয়েছে পুতিন বাহিনী। সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এ প্রকাশিত উন্মুক্ত ওয়ারম্যাপ বলছে, তিন বছরে ইউক্রেনের ১১ শতাংশ ভূমির দখল নিয়েছে রাশিয়া। বাস্তুচ্যুত হয়েছে প্রায় এক কোটি মানুষ।
যদিও রুশ হামলার দুইদিন পর থেকেই আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলো ইউক্রেনের পাশে দাঁড়ায়। রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে ইউক্রেনকে তারা প্রকাশ্যে অস্ত্র ও অর্থ দিতে থাকে। আর গোপনে প্রশিক্ষণ, সামরিক বিশেষজ্ঞ ও সেনা পাঠানোর অভিযোগও আছে। এছাড়া রাশিয়ার বিরুদ্ধে নজিরবিহীন নিষেধাজ্ঞা তো আছেই। আমেরিকা ও পশ্চিমাদের অস্ত্র অর্থ পেয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে থাকে ইউক্রেন। ফলে যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হয়।
যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক, ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অফ ওয়ার-এর হিসেবে ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত প্রায় ১৬৬ বিলিয়ন ডলার এসেছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে, আর প্রায় একশ’ বিলিয়ন ডলার দিয়েছে আমেরিকা একাই। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে সহায়তা বন্ধ করেছে আমেরিকা। যুদ্ধের সমাপ্তি চায় ট্রাম্প প্রশাসন। সে লক্ষ্যে রাশিয়ার সাথে আলোচনাও শুরু হয়েছ্।ে সেইসাথে এতদিনের সামরিক সহায়তার বিনিময়ে ইউক্রেনের খনিজ সম্পদের দিকে হাত বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। নিজেদের স্বার্থে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে খনিজ সম্পদ বিষয়ক চুক্তিতে সম্মতি দিয়েছে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টও।
মন্তব্য করুন