
		আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বৈচিত্র্যে ভরপুর আফ্রিকার এক বিস্ময় ভাসমান গ্রাম ‘গ্যানভি’। পশ্চিম আফ্রিকর দেশ বেনিনের এই গ্রামটির বসবাসকারীরা পরিচিত ‘বেনিনের জলের মানুষ’ নামে। নোকোয়ে নামে একটি হ্রদের মধ্যে অবস্থিত বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভাসমান এই গ্রামটির মানুষের জীবিকা থেকে শুরু করে দৈনন্দিন যোগাযোগে মূল ভরসা নৌকা। আজব এই গ্রামটি দেখতে প্রতিবছর ভিড় জমায় বিশ্বের নানা প্রান্তের হাজারও পর্যটক।
যতদূর চোখ যায় থই থই পানি, মাঝে অসংখ্য ছোট ছোট দ্বীপের মতো জেগে আছে কাঠের ছোট ছোট বাড়ি। হঠাৎ দেখলে মনে হবে কোন মায়াপুরী।
চোখজুড়ানো এই দৃশ্য আফ্রিকার বেনিনের গ্যানভি গ্রামের। নোকোয়ে হ্রদের মাঝে ভাসমান গ্রাম গ্যানভিতে নেই মাটির কোন পথ বা সবুজ মাঠ। এখানে স্কুল, মসজিদ, রেস্তোরাঁ, পেট্রোল পাম্প, চিকিৎসাকেন্দ্র এমনকি এক বাড়ি থেকে অন্য বাড়ি যেতেও ব্যবহার করতে হয় নৌকা।
গ্যানভি গ্রামের পত্তন হয়েছিলো ৪শ’ বছরেরও বেশি সময় আগে ১৮শ শতকের দিকে। সেসময় আফ্রিকায় দাস ব্যবস্থা ভয়ঙ্কর রুপ নেয়। তখন ‘তোফিনু’ নামে একটি জনগোষ্ঠী ক্রীতদাস ব্যবসায়ীদের হাত থেকে নিজেদের রক্ষায় অভিনব পথ বেছে নেয়। তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস ছিলো পানির উপর ঘর করলে কেউ আক্রমণ করতে পারবেনা। সেই বিশ্বাস থেকেই তোফিনু জনগোষ্ঠী পানির ওপর গড়ে তোলে ভাসমান গ্রাম ‘গ্যানভি’। যার অর্থ ‘আমরা বেঁচে গেছি’।
শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে এখানকার মানুষের জীবন জড়িয়ে আছে এই হ্রদের সাথে। গ্রামটির বেশিরভাগ অধিবাসীই মৎস্যজীবী। ৪৫ হাজারেরও বেশি জনসংখ্যা নিয়ে বিশ্বের বৃহত্তম ভাসমান গ্রাম গ্যানভি পর্যটকদের কাছেও জনপ্রিয় এক গন্তব্য। প্রতিনিয়ত এখানে ভিড় করেন হাজারও পর্যটক।
তবে বাড়তি পর্যটক এ গ্রামের জন্য বিপদও বয়ে আনছে। মানুষের অতিরিক্ত চাপে বিরূপ প্রভাব পড়ছে এখানকার প্রাকৃতিক পরিবেশে। সেই সাথে পর্যটনের উন্নয়নের নামে ইট-পাথরের স্থাপনা তৈরির কারণে হারিয়ে যাচ্ছে এখানকার ঐতিহ্যবাহী কাঠের ঘর-বাড়িও।
মন্তব্য করুন