মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫

ইরান-ইসরায়েল সংঘাত নিয়ে জরুরি বৈঠকে নিরাপত্তা পরিষদ

বৈশাখী ডেস্ক
প্রকাশ : ১৯ জুন ২০২৫, ০৮:১৯ এএম

হামলা ও পাল্টা হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল-ইরান। পারস্পরিক সংঘাতে অনেকটাই বিপর্যন্ত দুই দেশ। ইসরায়েলের হামলা শুরুর পর থেকে ইরানে এ পর্যন্ত প্রায় ৬৩৯ মানুষ নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে এক হাজার ৩২০ জনের বেশি। পক্ষান্তরে ইসরায়েলে ইরানি হামলায় এখন পর্যন্ত ২৪ জনের প্রাণহানির তথ্য পাওয়া গেছে। ইসরায়েল ও ইরানের সংঘাত সপ্তম দিনের মতো চলছে।

এদিকে প্রাণঘাতী এই সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারে যুক্তরাষ্ট্রও। এমন অবস্থায় ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার এই সংঘাত নিয়ে জরুরি বৈঠকে ডেকেছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। ২০ জুন শুক্রবার এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ১৯ জুন বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা নিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ শুক্রবার নিউইয়র্ক সময় সকাল ১০টায় জরুরি বৈঠকে বসতে চলেছে। এর আগে ইরান জাতিসংঘে এক চিঠিতে জানায়, সংঘাত বিপজ্জনকভাবে বেড়ে গেছে এবং এতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণের ‘ক্রমবর্ধমান ও অনস্বীকার্য প্রমাণ’ রয়েছে। এই অভিযোগ তুলে ইরান জরুরি বৈঠকের অনুরোধ করে জানায়। আর সেটিই সমর্থন করে রাশিয়া, চীন, পাকিস্তান ও আলজেরিয়া।

ইরানের দাবি অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র শুধু ইসরায়েলকে সামরিক সহায়তাই দিচ্ছে না, বরং ইরানি ভূখণ্ড হামলার পরিকল্পনাতেও যুক্ত রয়েছে। তাই বিষয়টি নিয়ে এখন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের এই বৈঠকে পরিস্থিতি শান্ত করার সম্ভাব্য কূটনৈতিক পথ খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মঙ্গলবার রাতে জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টাদের ইরানে হামলার পরিকল্পনায় সম্মতি দেয়ার কথা জানিয়েছেন। তবে ট্রাম্প এখনো চূড়ান্ত নির্দেশ দেননি এটা দেখার জন্য যে, তেহরান তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি থেকে সরে আসে কি না। বিষয়টি সম্পর্কে অবগত একাধিক সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য লক্ষ্যগুলোর একটি হলো ইরানের ফোর্দো ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র। এটি পাহাড়ের নিচে অবস্থিত এবং সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, এটি এতটাই সুরক্ষিত যে কেবল সবচেয়ে শক্তিশালী বোমাগুলোর পক্ষেই এটি ধ্বংস করা সম্ভব।

এর আগে ট্রাম্পকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, তিনি ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কি না। জবাবে তিনি বলেন, আমি করতেও পারি, নাও করতে পারি। এরপর তিনি আবারও ইরানের নিঃশর্ত আত্মসমর্পণের দাবি তুলে বলেন, আগামী সপ্তাহটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে যাচ্ছে। হয়তো সপ্তাহও লাগবে না।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি এর আগে স্পষ্ট করে বলেছেন, তার দেশ আত্মসমর্পণ করবে না। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি সামরিক হস্তক্ষেপ করে, তাহলে তার অপূরণীয় পরিণতি হবে।

গত কয়েক দিনে যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে তাদের সামরিক উপস্থিতি জোরদার করেছে। তৃতীয় একটি যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর ডেস্ট্রয়ার পূর্ব ভূমধ্যসাগরে প্রবেশ করেছে এবং দ্বিতীয় একটি এয়ারক্রাফ্ট ক্যারিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপ আরব সাগরের দিকে রওয়ানা হয়েছে।

যদিও পেন্টাগন জানিয়েছে, এই সামরিক মোতায়েন সম্পূর্ণরূপে প্রতিরক্ষামূলক, তবুও বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্প যদি ইসরায়েলের সঙ্গে যৌথভাবে ইরানের ওপর হামলার সিদ্ধান্ত নেন, তবে এই মোতায়েন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানকে আরও সুবিধাজনক করে তুলবে। এ ছাড়া এটি ইরানের ওপর চাপ সৃষ্টি করার কৌশলও হতে পারে, যাতে তেহরান আত্মসমর্পণ করে বা কিছুটা ছাড় দেয়।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
বুধবার দেখা যাবে বছরের বৃহত্তম সুপারমুন
বুধবার দেখা যাবে বছরের বৃহত্তম সুপারমুন
আন্তর্জাতিক সালিশের দ্বারস্থ হচ্ছে বাংলাদেশ–আদানি গ্রুপ
আন্তর্জাতিক সালিশের দ্বারস্থ হচ্ছে বাংলাদেশ–আদানি গ্রুপ
আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ২৭, আহত ৫৩০
আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ২৭, আহত ৫৩০
ফিলিস্তিনি বন্দি নির্যাতন ভিডিও ফাঁসের জেরে গ্রেফতার ইসরাইলি প্রসিকিউটর
ফিলিস্তিনি বন্দি নির্যাতন ভিডিও ফাঁসের জেরে গ্রেফতার ইসরাইলি প্রসিকিউটর