মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫
ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ

গাজায় ইসরাইলি হামলায় আরও ৮৩ ফিলিস্তিনি নিহত

বৈশাখী ডেস্ক
প্রকাশ : ০৬ আগস্ট ২০২৫, ০৯:০৫ এএম

বিশ্ববাসীর নিন্দা ও সমালোচনা উপেক্ষা করে ক্রমাগতভাবে গাজায় হামলায় চালিয়েই যাচ্ছে দখলদার ইসরাইল। স্থানীয় চিকিৎসা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন গাজা উপত্যকার বিভিন্ন স্থানে ইসরাইলি হামলায় আরও ৮৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন । এর মধ্যে ৮ শিশুসহ আরও মানুষ অনাহার ও অপুষ্টিতে মারা গেছেন। এছাড়া গাজায় শিশু ও বৃদ্ধদের মধ্যে দুর্ভিক্ষ ভয়াবহ আকার ধারণ করছে বলেও সতর্ক করেছেন অনেকে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা ৬ আগস্ট বুধবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, মঙ্গলবার ইসরাইলি হামলায় নিহতদের মধ্যে ৫৮ জনই ছিলেন সহায়তা প্রত্যাশী। তারা যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের সমর্থনে পরিচালিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রে যাওয়ার পথে ইসরাইলি বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারান।গাজার মধ্যাঞ্চলীয় দেইর আল-বালাহ থেকে আল জাজিরার প্রতিবেদক হিন্দ খুদারি জানান, জিএইচএফ-এর বিতরণ কার্যক্রম মে মাসে শুরু হওয়ার পর থেকে প্রতিদিনই একই ঘটনা ঘটছে। ফিলিস্তিনিরা খাবারের আশায় কেন্দ্রে যাচ্ছেন, আর ইসরাইলি বাহিনী গুলি চালাচ্ছে। তিনি জানান, উত্তর গাজার জিকিম ক্রসিংয়ের কাছে একটি সহায়তা বিতরণ কেন্দ্র থেকে আল-শিফা হাসপাতালে আনা আহতদের সংখ্যা অনেক বেশি। তাদের শরীরের যেসব অংশে গুলি লেগেছে তা চিকিৎসার জন্য অত্যন্ত জটিল। অনেকের মাথা, গলা, বুকেও গুলি লেগেছে।

এদিকে জাতিসংঘ ও অন্যান্য মানবিক সংস্থা জিএইচএফ-এর কার্যক্রম ও এর আশপাশের নিরাপত্তা পরিস্থিতির কড়া সমালোচনা করেছে। তারা বলেছে, এই সংস্থা পর্যাপ্ত সহায়তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এ পর্যন্ত ইসরাইলি বাহিনীর গুলিতে খাদ্য সহায়তার আশায় থাকা এক হাজার ৫৬০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

এছাড়া আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা সতর্ক করে বলেছেন, গাজায় বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধদের মধ্যে দুর্ভিক্ষ ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। ৭৫ বছর বয়সি সালিম আসফুর আল জাজিরাকে বলেন, আমি কয়েক মাস ধরে শুধু রুটি আর পানি খেয়ে বেঁচে আছি। আমার ওজন ৮০ কেজি থেকে এখন ৪০ কেজি হয়ে গেছে। আমার ছেলে আমাকে বাথরুমে নিতে সাহায্য করে। আমি রাফাহ থেকে খাবার আনতে কীভাবে যাব? ২০ কিলোমিটার হাঁটব কীভাবে?

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় অনাহার ও অপুষ্টিতে আরও ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে একজন শিশু রয়েছে। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে প্রাণ গেছে ১৮৮ ফিলিস্তিনির, যার মধ্যে ৯৪ শিশু।জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) জানিয়েছে, সোমবার গাজায় মাত্র ৯৫টি সহায়তাবাহী ট্রাক প্রবেশ করেছে, যেখানে দৈনিক কমপক্ষে ৬০০ ট্রাক প্রয়োজন সাধারণ মানুষের বেঁচে থাকার ন্যূনতম চাহিদা মেটাতে। বর্তমানে গড়ে প্রতিদিন ৮৫টি ট্রাক প্রবেশ করছে।

গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস আবারও সতর্ক করে বলেছে, সেখানে মানবিক বিপর্যয় আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে। এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সীমিত সংখ্যক সহায়তার বড় অংশই ইসরাইলি বাহিনীর সৃষ্ট নিরাপত্তা বিশৃঙ্খলার সুযোগে লুট হয়ে যাচ্ছে- যা পরিকল্পিত নৈরাজ্য ও দুর্ভিক্ষ তৈরির অংশ।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
বুধবার দেখা যাবে বছরের বৃহত্তম সুপারমুন
বুধবার দেখা যাবে বছরের বৃহত্তম সুপারমুন
আন্তর্জাতিক সালিশের দ্বারস্থ হচ্ছে বাংলাদেশ–আদানি গ্রুপ
আন্তর্জাতিক সালিশের দ্বারস্থ হচ্ছে বাংলাদেশ–আদানি গ্রুপ
আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ২৭, আহত ৫৩০
আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ২৭, আহত ৫৩০
ফিলিস্তিনি বন্দি নির্যাতন ভিডিও ফাঁসের জেরে গ্রেফতার ইসরাইলি প্রসিকিউটর
ফিলিস্তিনি বন্দি নির্যাতন ভিডিও ফাঁসের জেরে গ্রেফতার ইসরাইলি প্রসিকিউটর