
		ডায়ানা ছিলেন প্রিন্সেস অব ওয়েলস। শুধু সৌন্দর্যই নয় মানবিক গুণাবলির কারণে বিশ্বজুড়েই জনপ্রিয় ছিলেন প্রিন্সেস ডায়ানা। বিশেষ করে সাধারণ মানুষের কাছে এতটাই জনপ্রিয় ছিলেন যে ‘দ্য পিপল’স প্রিন্সেস’ অর্থাৎ সাধারণ মানুষের হৃদয়ের রাজকুমারী হিসেবেও পরিচিতি পান। মৃত্যুর এত বছর পর এখনো তাঁকে নিয়ে গুণগ্রাহীদের মুগ্ধতা কমেনি।
প্রিন্সেস ডায়ানার চলে যাওয়ার দিন আজ। ১৯৯৭ সালের ৩১ আগস্ট আজকের দিনে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে একচি কার দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেন ডায়ানা। মৃত্যুর সময় প্রিন্সেস ডায়ানার বয়স ছিল ৩৬ বছর। একই দুর্ঘটনায় মারা যান তাঁর প্রেমিক মিসরে জন্ম নেওয়া দোদি ফায়েদ এবং গাড়িটির চালক হেনরি পল।
বিশ্বজুড়েই জনপ্রিয় ছিলেন প্রিন্সেস ডায়ানা । তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে আসে ভক্তদের মধ্যে। শোকার্তরা যেখানে ডায়না থাকতেন, সেখানে অর্থাৎ কেনসিংটন প্রাসাদে ভিড় জমাতে থাকেন। ফুলের তোড়া রেখে যান সেখানে, যেখানে তাঁদের রাজকুমারী আর ফিরে আসবেন না। রাজপ্রাসাদের গেট থেকে ৩০ ফুট দূরেও ফুলের স্তূপ জমে গিয়েছিল।
ওই সময় ফ্রান্সে ছুটি কাটাচ্ছিলেন ডায়না ও দোদি। দুর্ঘটনার আগের দিন প্যারিসে পৌঁছান তাঁরা। মধ্যরাতের ঠিক পরে রিতজ প্যারিস হোটেল ছাড়েন। গন্তব্য ছিল রু আর্সেন উসেতে দোদি ফায়েদের অ্যাপার্টমেন্ট। তাঁদের লিমোজিন গাড়িটি হোটেল থেকে বেরোনোর পর থেকেই মোটরসাইকেলে চেপে পাপারাজ্জিদের একটি দল বেপরোয়াভাবে পিছু নেয়। তিন মিনিট পর চালক নিয়ন্ত্রণ হারান। পুন্ত দে লা’লমা সেতুর প্রবেশমুখে একটা পিলারে গিয়ে বিধ্বস্ত হয় গাড়িটি।
দোদি ও গাড়িটির চালককে ঘটনাস্থলেই মৃত ঘোষণা করা হয়। ডায়ানাকে নিয়ে যাওয়া হয় পিচে সালপেদরিয়ে হাসপাতালে। সেখানে ভোর ৬টার দিকে তাঁকেও মৃত ঘোষণা করা হয়। দুর্ঘটনায় ডায়ানার দেহরক্ষী ত্রেভো রিয়েস জোসন গুরুতর আঘাত পেলেও বেঁচে যান।
ডায়ানার মৃত্যুর খবর জানাজানি হলে কেনসিংটন রাজপ্রাসাদের গেট থেকে ৩০ ফুট দূরেও ফুলের স্তূপ জমে গিয়েছিল। ডায়ানার সাবেক স্বামী প্রিন্স চার্লস, ডায়নার বোনেরা এবং ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্যরা ওই দিন সকালেই প্যারিসে পৌঁছান। ডায়ানার মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হয় লন্ডনে।
বেঁচে থাকতে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন ‘লেডি ডি’ ডায়ানা, মারা যাওয়ার পরও তাঁকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে ওঠে মিডিয়া। কীভাবে গাড়িটি দুর্ঘটনায় পড়ল তা নিয়ে নানা তত্ত্ব ও গুজব ডালপালা মেলে। শুরুতে গাড়িটিকে অনুসরণ করা পাপারাজ্জিদের ঘাড়ে দোষ চাপানো হয়। পরে জানা যায়, চালক মদ খেয়ে গাড়ি চালানোর পাশাপাশি চিকিৎসকের দেওয়া ওষুধের প্রভাবেও ছিলেন। একটি আনুষ্ঠানিক তদন্তে পাপারাজ্জিদের অভিযোগ থেকে রেহাই দেওয়া হয়।
পরের মাস, অর্থাৎ সেপ্টেম্বরের ৬ তারিখ লন্ডনে প্রিন্সেস ডায়ানার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া হয়। পর্দায় এটি দেখেন ২০০ কোটির বেশি মানুষ। ডায়ানা মারা যাওয়ার সময় তাঁর দুই ছেলে প্রিন্সেস উইলিয়াম ও প্রিন্সেস হ্যারির বয়স ছিল যথাক্রমে পনেরো ও বারো। মৃত্যু দিনে মহান এই মানুষটির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা।
মন্তব্য করুন