
		মধ্যরাতে ভয়াবহ ভূমিকম্পে কেঁপে উঠলো আফগানিস্তান। বিশেষ করে দেশটির হিমালয় পর্বতমালার বিশাল এলাকা ভয়াবহ ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে। হিমালয়ের দক্ষিণে আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও ভারত এবং হিমালয় পর্বতমালার উত্তরে মধ্য এশিয়ার দেশ উজবেকিস্তান ও তাজিকিস্তানও ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে। ভূমিকম্পে দুই শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। পাঁচ শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বিভিন্ন গণমাধ্যম।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস জানায়, ৩১ আগস্ট রোববার দিনগত রাতে পাকিস্তান সীমান্তের কাছে আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে কঠিন পার্বত্য এলাকায় আঘাত হানে ৬.০ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প। দেশটির নানগড়গহর প্রদেশের রাজধানী ও বড় শহর জালালাবাদ থেকে ২৭ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে ছিলো ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল। যার উৎস ছিলো ভূপৃষ্ঠ থেকে ৮ কিলোমিটার গভীরে।
আফগানিস্তানের স্থানীয় সময় রাত ১১-৪৭ মিনিটে আঘাত হানে বড় ভূমিকম্পটি। এরপর নির্দিষ্ট বিরতিতে আশেপাশের কয়েকটি স্থানে আরও কয়েকটি স্থানে আফটার শক ভূমিকম্প অনুভূত হয়। ইউএসজিএস এর তথ্যমতে, এ শক্তিশালী ভূ-কম্পন অনুভব করেছেন প্রায় পাঁচ লক্ষ মানুষ।
ইউজিএস এর তথ্য অনুসারে, প্রথম ভূমিকম্পটি আঘাত হানার প্রায় ২০ মিনিট পর, একই অঞ্চলে ৪.৫ মাত্রার একটি আফটারশক ভূমিকম্প আঘাত হানে। এরপর আঘাত হানে ৫.২ মাত্রার আরেকটি আফটারশক ভূমিকম্প। আফটারশক ভূমিকম্প দু’টিরও উৎপত্তিস্থল ছিলো ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে। ৩১ আগস্ট রোববার দিনগত রাতের শক্তিশালী ভূমিকম্পে দুর্বল কাঠামোর বেশিরভাগ ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়। জালালাবাদ প্রদেশের স্বাস্থ্য বিভাগ মুখপাত্র আজমল দারওয়াইশের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানায়, নানগড়হরে মারা গেছেন অন্তত নয়জন। এখানে আহত হয়েছেন আরও ২৫ জন।
কাবুলের বাসিন্দা ৪১ বছর বয়সী আহমেদ জমির, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সিএনএনকে জানান, ভূমিকম্পটি বেশ শক্তিশালী ছিল এবং এর কেন্দ্র থেকে ১০০ মাইলেরও বেশি দূরে তার এলাকা ছিলো। সেখান থেকেও ভূকম্পন পুরোপুরি অনুভূত হয়। আহমেদ জমির আরও বলেন, ভেতরে আটকা পড়ার ভয়ে, কাছের অ্যাপার্টমেন্ট ভবনগুলোর সবাই রাস্তায় নেমে এসেছিলো।
তালেবান সরকারের মুখপাত্র, জাবিউল্লাহ মুজাহিদ, সামাজিক মাধ্যম এক্স-এর ব্যাকিগত একাউন্টে এক পোস্টে জানান, দুর্ভাগ্যবশত, আজ রাতের ভূমিকম্পে আমাদের পূর্বাঞ্চলীয় কিছু প্রদেশে মানুষের প্রাণহানি এবং আর্থিক ক্ষতি হয়েছে,। তিনি আরও বলেন, এখনই, স্থানীয় কর্মকর্তা এবং বাসিন্দারা ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্ধারের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছেন। রাজধানী এবং কাছাকাছি প্রদেশগুলো থেকে উদ্ধারকার ও সাহায্যকারী দলও যোগ দিচ্ছেন। দুর্গত এলাকায় মানুষের উদ্ধার ও ত্রাণ কাজে সরকারের সর্বাত্মক খরচ করে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।
এর আগে ২০২৩ সালের অক্টোবরে, পশ্চিম আফগানিস্তানে ৬.৩ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে, যা ছিলো সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ। এদিকে, আফগানিস্তানের পাশাপাশি পাকিস্তানের পেশোয়ার, ভারতের জম্মু-কাশ্মীর এবং তাজিকিস্তান ও উজবেকিস্তান থেকেও এই ভূকম্পনের খবর পাওয়া যায়।
মন্তব্য করুন