মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫

এখন যুক্তরাষ্ট্রের এইচ-১ বি ভিসার বার্ষিক ফি ১লাখ ডলার

বৈশাখী ডেস্ক
প্রকাশ : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:৩০ পিএম

দক্ষ বিদেশি কর্মীদের এইচ-১ বি (H-1B) ভিসা প্রোগ্রামে আবেদনকারীদের এখন থেকে ১ লাখ ডলার ফি দিতে হবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্বাক্ষর করা এক নির্বাহী আদেশের পর এটি নির্ধারিত হয়। অন্য একটি আদেশে ট্রাম্প নির্দিষ্ট অভিবাসীদের জন্য ১০ লাখ পাউন্ড থেকে শুরু হওয়া ফি-এর বিনিময়ে ভিসা প্রক্রিয়া দ্রুত করার জন্য একটি নতুন 'গোল্ড কার্ড' ব্যবস্থা চালু করেছেন। এ নতুন নিয়ম শুরু হবে ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ থেকে।

মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক বলেন, বিদেশী যে কর্মীর জন্য সরকারের কাছে ১ লাখ ডলার ফি দিতে হবে, তিনি তার উপযুক্ত কিনা তা নিয়োগদাতা কোম্পানিকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। নয়তো সে কর্মীকে দেশে পাঠিয়ে তার পরিবর্তে মার্কিন কর্মী নিয়োগ দেয়া হবে। বড় কোম্পানিগুলো এরই মধ্যে এ নিয়ম মেনে নিতে সম্মতি জানিয়েছে।

ট্রাম্পের এ আদেশ ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এটি শুধু নতুন আবেদনগুলোর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। তবে প্রত্যেক আবেদনকারীর জন্য টানা ছয় বছর ধরে একই অংকের অর্থ দিতে হবে।’

এইচ-১বি ভিসা যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চ দক্ষতার বিদেশী কর্মী নিয়োগের প্রধান পথ। ২০০৪ সাল থেকে প্রতি বছর এইচ-১বি ভিসার আবেদন সংখ্যা ৮৫ হাজারে সীমিত রাখা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব ও অভিবাসন দপ্তর ইউএসসিআইএসের তথ্যানুযায়ী, আগামী অর্থবছরের জন্য এইচ-১ বি ভিসার আবেদন নেমে এসেছে প্রায় ৩ লাখ ৫৯ হাজারে। এটি চার বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। সরকারি তথ্যানুযায়ী, গত বছর অ্যামাজন ছিল এ কর্মসূচির সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী। এর পরই রয়েছে টাটা, মাইক্রোসফট, মেটা, অ্যাপল ও গুগল। নতুন ঘোষণার পর অ্যামাজন কর্মীদের পরামর্শ দিয়েছে, যারা যুক্তরাষ্ট্রে আছেন তারা সেখানেই থাকবেন। যারা বাইরে আছেন তারা দ্রুত ফিরে আসবেন। নইলে আপাতত দেশে প্রবেশ না করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

নতুন আবেদনকারীগণ ও যারা এইচ-১ বি পেটিশন দিচ্ছেন তাদের এই ফি দিতে হবে। কিন্তু যারা ইতিমধ্যেই এইচ-১ বি ভিসা পেয়েছেন অথবা যারা রিনিউ করতে যাচ্ছেন, তাদের ক্ষেত্রে এই নতুন ফি প্রযোজ্য হবে না।

এখানে ট্রাম্প প্রশাসনের যুক্তি হলো এইচ-১ বি প্রোগ্রাম অনেক সময় “অনুভূমিকভাবে” ব্যবহৃত হচ্ছে। মানে, বিদেশি শ্রমিক এনে যা হয় তা অনেক ক্ষেত্রে আমেরিকান কর্মচারীদের কাজের সুযোগ কমিয়ে দিচ্ছে অথবা তাদের বেতন নিম্নস্তরে রাখছে।

নতুন ফি এবং নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে শুধুমাত্র “উচ্চ দক্ষতা” ও উচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া কাজের জন্য বিদেশি কর্মী আনার দিকে মনোনিবেশ করা হবে। এছাড়া বলা হচ্ছে, এটি একটি সময়সীমাবদ্ধ নীতি হবে (১২ মাসের জন্য) যা পর্যালোচনার মধ্যে থাকবে।

আগের বছর নির্বাচনি প্রচারণার সময়ও প্রযুক্তি শিল্প সংশ্লিষ্টদের সমর্থন পেতে প্রতিভা আকর্ষণের প্রক্রিয়াটিকে আরও সহজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি। এমনকি কলেজ স্নাতকদের জন্য গ্রিন কার্ডের প্রস্তাবও করেছিলেন ট্রাম্প।

"কোম্পানিগুলোতে কাজ করার জন্য আপনার একদল লোকের প্রয়োজন," তিনি অল-ইন পডকাস্টকে বলেন। "আপনাকে এই লোকদের নিয়োগ করতে এবং তাদেরকে ধরে রাখতে সক্ষম হতে হবে।"

এইচ-ওয়ান বি ক্যাটাগরিতে ভিসা আবেদনের যাচাই-বাছাই আরো শক্তিশালী করা এবং জালিয়াতি বন্ধ করার লক্ষ্যে ২০১৭ সালে নিজের প্রথম মেয়াদের শুরুতে ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছিলেন।

২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা প্রত্যাখ্যানের হার সর্বকালের সর্বোচ্চ ২৪ শতাংশে পৌঁছায়; যেখানে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলে পাঁচ শতাংশ থেকে আট শতাংশ এবং তারপর জো বাইডেনের আমলে দু্ই শতাংশ থেকে চার শতাংশ ছিল। সেই সময় ট্রাম্প প্রশাসনের এইচ-ওয়ান বি আদেশের কঠোর সমালোচনা করে পিছু হটেছিল প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এইচ-ওয়ান বি প্রোগ্রামে অতিরিক্ত বিধি-নিষেধের এই সিদ্ধান্ত ভারতের মতো দেশগুলোতে যথেষ্ট উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে; যারা এই ধরনের ভিসা আবেদনের জন্য এখন পর্যন্ত বৃহত্তম উৎস দেশ।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
বুধবার দেখা যাবে বছরের বৃহত্তম সুপারমুন
বুধবার দেখা যাবে বছরের বৃহত্তম সুপারমুন
আন্তর্জাতিক সালিশের দ্বারস্থ হচ্ছে বাংলাদেশ–আদানি গ্রুপ
আন্তর্জাতিক সালিশের দ্বারস্থ হচ্ছে বাংলাদেশ–আদানি গ্রুপ
আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ২৭, আহত ৫৩০
আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ২৭, আহত ৫৩০
ফিলিস্তিনি বন্দি নির্যাতন ভিডিও ফাঁসের জেরে গ্রেফতার ইসরাইলি প্রসিকিউটর
ফিলিস্তিনি বন্দি নির্যাতন ভিডিও ফাঁসের জেরে গ্রেফতার ইসরাইলি প্রসিকিউটর