
আজ ৪ অক্টোবর বিশ্ব প্রাণী দিবস। বিশ্বের প্রতিটি প্রাণীর সুরক্ষা, কল্যাণ ও অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এ দিনটি আন্তর্জাতিকভাবে পালিত হয়। এবারের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে— “Save Animals, Save the Planet” (প্রাণী বাঁচাও, গ্রহ বাঁচাও)।
প্রাণী কেবল মানবজীবনের সহচর নয়, আমাদের পরিবেশ, জলবায়ু ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার অন্যতম প্রধান অংশীদার। কিন্তু দুঃখজনকভাবে পৃথিবীর অনেক প্রজাতি এখন বিলুপ্তির পথে। বন উজাড়, জলবায়ু পরিবর্তন, অবাধ শিকার, অবহেলা ও নির্যাতন— এসব কারণে প্রাণীর অস্তিত্ব চরম হুমকির মুখে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রাণী রক্ষা করা মানে প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করা। বাস্তুসংস্থান টিকিয়ে রাখতে প্রাণী অপরিহার্য। এ কারণে এবারের প্রতিপাদ্যে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে— প্রাণী সুরক্ষা ছাড়া গ্রহ রক্ষা সম্ভব নয়।
ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ ফান্ড এক প্রতিবেদনে জানায়, ১৯৭০ সাল থেকে এ পর্যন্ত বিশ্বে দুই-তৃতীয়াংশ বন্যপ্রাণী কমেছে। ১০০ বছরে বাংলাদেশের ভূখণ্ড থেকে হারিয়ে গেছে ৩১ প্রজাতির প্রাণী। উভচর, সরীসৃপ, পাখি, স্তন্যপায়ীসহ অন্তত ২১৯ প্রজাতির প্রাণী রয়েছে বিপন্নের তালিকায়।
এ ছাড়া গত বছর নিউ ইয়র্ক ডিক্লারেশন অন এনিম্যাল সেন্টিয়েন্স জানিয়েছে, প্রাণীরা আবেগ, ব্যথা ও কষ্ট অনুভব করে। সুতরাং পৃথিবীতে প্রাণের প্রতিটি প্রজাতিই গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলাদেশেও প্রাণীপ্রেমীরা প্রতি বছর গুরুত্ব সহকারে দিনটি পালন করে থাকে। পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায় প্রাণী অধিকার ও সংরক্ষণে জনসচেতনতা বাড়াতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে।
প্রসঙ্গ, প্রাণী দিবস প্রথম পালিত হয় ১৯২৫ সালের ২৪ মার্চ জার্মানিতে, হেনরীক জিম্মারমেন নামের এক প্রাণীপ্রেমীর উদ্যোগে। পরে ১৯৩১ সালে ইতালির ফ্লোরেন্সে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক প্রাণী সুরক্ষা কংগ্রেসে ৪ অক্টোবরকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘বিশ্ব প্রাণী দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
এরপর থেকে প্রতি বছর এই দিনটি বিশ্বব্যাপী নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে। বর্তমানে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংস্থা Naturewatch Foundation এ দিবসের আন্তর্জাতিক সমন্বয় করে আসছে।
মন্তব্য করুন