বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫

শিশুকে যেসব খাবার দেয়া উচিত নয়

বৈশাখী ডেস্ক
প্রকাশ : ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ১২:১৬ পিএম

একটি শিশু পৃথিবীতে আসার পরে সবকিছুর সঙ্গে মানিয়ে নিতে কিছুটা সময় লাগে। আবহাওয়া, খাদ্য- সবকিছুই তার জন্য নতুন। জন্মের পর অন্তত এক বছর পর্যন্ত শিশুর স্বাস্থ্য নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে। কোন খাবার তাকে দেয়া যাবে এবং কোন খাবার দেয়া যাবে না, তা জানা থাকা ভীষণ জরুরি। প্রথম ছয় মাস মায়ের দুধ ছাড়া আর কিছুই খাওয়ানো যাবে না। তবে মায়ের দুধ তার জন্য পর্যাপ্ত না হলে সেক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেবেন। এ সময় শিশুর হজমব্যবস্থা অনেকটাই নাজুক থাকে। তাই না জানার কারণে অনেক মা-বাবাই এসব খাবার শিশুকে খাওয়ানোর পর শিশু অসুস্থ বোধ করে। অথচ খাবারের কারণে শিশুর এই অস্বস্তি বোধের কথা বুঝতেই পারেন না তারা।

তাই এমন পরিস্থিতিতে যেন আপনার শিশুকে পড়তে না হয়, তাই জেনে নিন কোন খাবারগুলো শিশুকে কখনোই খাওয়ানো যাবে না।

লবণ: আয়োডিনের উৎস হলো লবণ। লবণ শিশুর বিকাশের জন্য অত্যন্ত দরকারী উপাদান। তাই বলে শিশুকে তার বয়স এক বছর না হতেই আলাদা করে লবণ খেতে দেবেন না। কারণ শিশু মায়ের দুধ থেকেই পর্যাপ্ত সোডিয়াম পায়। তাই আলাদা করে আর লবণ খাওয়ার একদমই প্রয়োজন নেই। এত অল্প বয়সে লবণ খেলে কিডনিতে পাথর, উচ্চ রক্তচাপ, ডিহাইড্রেশন এবং হাড়ের ক্ষয় দেখে দিতে পারে। তাই এক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন সব সময়।

রিফাইন্ড সুগার: রিফাইন্ড সুগার বড়দের খেতে মানা নেই তবে আপনার সন্তানের বয়স এক বছর হওয়ার আগেই তাকে এটি খেতে দেবেন না। শিশুর শরীরে যতটুকু মিষ্টি প্রয়োজন তা প্রাকৃতিক ভাবেই মিষ্টি খাবার ও কার্বোহাইড্রেট থেকে সংগ্রহ করে নেয়। এক বছর বয়সের আগে শিশুকে ভুলেও চকোলেট, কোমল পানীয়, ক্যান্ডি জাতীয় খাবার দেবেন না।

মধু: অনেকেই শিশু জন্মের সঙ্গে সঙ্গে মধু খাওয়ান। এই রীতি আপনার সন্তানের ক্ষতি বয়ে আনতে পারে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। মধু পুষ্টিকর খাবার হলেও শিশু বয়সে মধু খাওয়া বিপজ্জ্নক হতে পারে। মধুর ক্লোস্ট্রিডিয়াম বোটুলিনাম ব্যাকটেরিয়া শিশুর শরীরে স্তনপানে দুর্বলতা, কোষ্ঠকাঠিন্য, পেটে গ্রাস, মাথা ঘোরাসহ ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণের কারণ হতে পারে।

গরুর দুধ: গরুর দুধে রয়েছে উচ্চতর ল্যাকটোজ উপাদান, যা শিশুর পেটের স্বাস্থ্য মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। গবেষকরা বলছেন, ক্ষেত্রবিশেষে এই খাবার শিশুর কিডনির ব্যাধির কারণ হতে পারে। এ ছাড়া অন্ত্রে রক্তক্ষরণ এবং আয়রনের ঘাটতিতে রক্তাল্পতাও দেখা দিতে পারে শিশুর শরীরে।

সামুদ্রিক খাবার: সাধারণত এক বছরের আগে শিশুকে সামুদ্রিক খাবার যেমন: চিংড়ি, ইলিশ, ঝিনুক, কাঁকড়া খাওয়ালে শিশুর শরীরে অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে।

আঠালো খাবার: যেসব খাবার আঠালো, সেগুলো শিশু হজম করতে পারে না। তাই চকলেট, চীনাবাদামের মাখন বা পিনাট বাটার, গমের রুটি শিশুকে খাওয়ানো থেকে বিরত থাকুন।

ডিমের সাদা অংশ: যদিও ডিমের সাদা অংশের পুষ্টিগুণ বলে শেষ করা যাবে না। তবু চিকিৎসকরা শিশু স্বাস্থ্যে একে হুমকি বলেই মনে করেন। এক বছর বয়সী শিশুদের জন্য ডিমের কুসুম স্বাস্থ্যের জন্য ভালো হলেও সাদা অংশ শিশুর শরীরে অ্যালার্জি, পেটে গোলযোগ, ডায়রিয়ার কারণ হতে পারে। তাই দেড় বছর বয়সে শিশুকে ডিম খাওয়ানোর অভ্যাস করতে পারেন।

সাইট্রাস ফল: টকজাতীয় ফলে প্রচুর পরিমাণে সাইট্রাস অ্যাসিড থাকে। এ ধরনের ফল শিশুর পাকস্থলীতে সমস্যা করে। তাই অন্তত এক বছর বয়সের আগে এগুলো খেতে দেওয়া উচিত নয়।

কাঁচা শাকসবজি: এ ধরনের খাবারের মধ্যে রয়েছে নানান ধরনের সালাদ। এসব খাবারে উচ্চ মাত্রায় নাইট্রেট থাকে, যা শিশুর পক্ষে অল্প বয়সে হজম করা কঠিন।

মিষ্টিজাতীয় খাবার: ব্রিটেনের রয়্যাল কলেজ অব পেডিয়াট্রিকস অ্যান্ড চাইল্ড হেলথের গবেষকরা বলছেন, স্থূলতা, দাঁত ও চোখের নানা সমস্যা এড়াতে শিশুদের খাদ্যাভ্যাসে কোনো অবস্থায়ই চিনি রাখা যাবে না।

এ ছাড়া শিশুর এক বছর পূর্ণ হওয়ার আগে শিশুকে কোনো অবস্থায়ই বাইরের খাবার খাওয়ানো যাবে না। কোমলমতি শিশুর সুরক্ষায় চিপস বা বোতল, টিনজাত খাবার খাওয়ানো থেকেও বিরত থাকতে হবে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
পিঁপড়া কেন সারবেঁধে চলে?
পিঁপড়া কেন সারবেঁধে চলে?
বিকেলের নাস্তায় মজাদার পালংশাকের লুচি
বিকেলের নাস্তায় মজাদার পালংশাকের লুচি
যেভাবে আয়নার দাগ দূর করবেন
যেভাবে আয়নার দাগ দূর করবেন
গলা ব্যথায় এড়িয়ে যাবেন যেসব খাবার
গলা ব্যথায় এড়িয়ে যাবেন যেসব খাবার