
		২০২৫ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য সবচেয়ে বেশি আলোচিত নাম ছিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। কিন্তু সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে পুরস্কার জিতেছেন ভেনিজুয়েলার গণতন্ত্রপন্থী রাজনীতিক নেত্রী মারিয়া কোরিনা মাচাডো। এর পরপরই প্রশ্ন ওঠে, ব্যাপক প্রচারণা ও চাপ সত্ত্বেও কেন ট্রাম্পকে এই পুরস্কার দেওয়া হলো না?
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) পুরস্কার ঘোষণার পর সংবাদ সম্মেলনে এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন নোবেল শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান জর্গেন ওয়াটনে ফ্রাইডনেস।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্পর্কে চেয়ারম্যানকে প্রশ্ন করা হয়। বলা হয়, নিজ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কেউ কেউ ট্রাম্পকে পুরষ্কার দিতে চাপ দিয়েছেন। এই চাপ কমিটির কাজে প্রভাব ফেলেছে কি-না তা নিয়েও জিজ্ঞাসা করা হয়েছে।
জবাবে ফ্রাইডনেস বলেন, নোবেল শান্তি পুরস্কারের দীর্ঘ ইতিহাসে কমিটি বিশেষ বিশেষ ব্যক্তিকে নিয়ে প্রচারণা এবং মিডিয়া উত্তেজনা দেখেছে। প্রতি বছর আমরা হাজার হাজার চিঠি পাই। তাতে ওই ব্যক্তিরা কেন শান্তি পুরস্কারের যোগ্য দাবিদার তা বর্ণনা করা হয়। আমরা কেবল আলফ্রেড নোবেলের কাজ এবং ইচ্ছার উপর ভিত্তি করে আমাদের সিদ্ধান্ত নিই।
তার এই বক্তব্যের মাধ্যমে কমিটি পরোক্ষভাবে বুঝিয়ে দিয়েছে যে, কোনো ধরনের রাজনৈতিক চাপ বা মিডিয়ার প্রচারণা তাদের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করতে পারে না।
সারা বিশ্ব থেকে মনোনয়ন পাঠানো ব্যক্তিরা কেন পুরস্কার পেলেন না বা তারা কোন যোগ্যতার মাপকাঠিতে হেরে গেছেন তা নোবেল কমিটি কখনও উল্লেখ করে না। এবারও ট্রাম্প কেন যোগ্য নন এ বিষয়ে সরাসরি কিছু বলেনি কমিটি।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্পের নোবেল না পাওয়ার পেছনে কয়েকটি কারণ রয়েছে। প্রথমত, নোবেল কমিটির সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছিল গত সোমবার, যা ছিল গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরের আগে। ফলে, এই চুক্তির জন্য তাকে এ বছর বিবেচনা করার সুযোগ ছিল না।
দ্বিতীয়ত, ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতি, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চুক্তি থেকে সরে আসা এবং বাণিজ্য যুদ্ধের মতো পদক্ষেপগুলো আলফ্রেড নোবেলের ‘জাতিসমূহের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব’ প্রতিষ্ঠার ইচ্ছার পরিপন্থী।
সবশেষে, নোবেল কমিটি মারিয়া কোরিনা মাচাডোর মতো একজন মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের যোদ্ধাকে বেছে নিয়ে প্রমাণ করেছে যে, তারা এ বছর উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক চুক্তির চেয়ে তৃণমূল পর্যায়ের অহিংস সংগ্রামকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছে।
শান্তি পুরস্কারকে নোবেলের মধ্যে সবচেয়ে সম্মানজনক পুরস্কার হিসেবে দেখা হয়। ২০০৬ সালে একমাত্র বাংলাদেশি হিসেবে এটি জিতেছেন প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
মন্তব্য করুন