
		একসময় যেখানে মশার অস্তিত্ব ছিল একরকম অসম্ভব, সেই বরফের দেশ আইসল্যান্ডেও এবার দেখা মিলল মশা। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দ্বীপটির উষ্ণতা বৃদ্ধিকেই এই ঘটনার জন্য দায়ী করছেন বিজ্ঞানীরা। অ্যান্টার্কটিকার পর মশার অস্তিত্ব না থাকা বিশ্বের অল্প কয়েকটি অঞ্চলের মধ্যে আইসল্যান্ড ছিল অন্যতম। গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রকৃতির এই শেষ দুর্গে মশার আগমন বিজ্ঞানীদের কপালে ভাঁজ ফেলেছে।
আইসল্যান্ডের ন্যাচারাল সাইন্স ইনস্টিটিউটের কীটতত্ত্ববিদ ম্যাথিয়াস আলফ্রেডসন এই চাঞ্চল্যকর তথ্য নিশ্চিত করেছেন। কিওস এবং কিডাফেলে অঞ্চলে মথের জন্য পাতা ওয়াইন ফাঁদ থেকে সংগ্রহ করা তিনটি নমুনা (দুটি স্ত্রী ও একটি পুরুষ) পরীক্ষা করে তিনি নিজেই মশাগুলো শনাক্ত করেছেন।
বিজ্ঞানীরা দীর্ঘকাল ধরে আশঙ্কা করছিলেন যে, আইসল্যান্ডে মশা তাদের আবাস গড়তে পারে—কারণ সেখানে জলাভূমি ও পুকুরের মতো পর্যাপ্ত প্রজনন ক্ষেত্র রয়েছে। কিন্তু এখানকার কঠোর জলবায়ুর কারণে অনেক প্রজাতির মশার পক্ষে টিকে থাকা সম্ভব ছিল না।
কিন্তু আইসল্যান্ড উত্তরাঞ্চলের বাকি গোলার্ধের তুলনায় চার গুণ দ্রুত উষ্ণ হচ্ছে। এর প্রমাণ হিসেবে দেখা যাচ্ছে—দেশটির হিমবাহ গলে যাচ্ছে এবং উষ্ণ অঞ্চলের মাছ (যেমন ম্যাকেরল) এখন তাদের জলসীমায় পাওয়া যাচ্ছে।
পৃথিবী উষ্ণ হওয়ার সাথে সাথে বিশ্বজুড়ে মশার বিস্তার বাড়ছে। এর ফলস্বরূপ, যুক্তরাজ্যে এ বছর মিশরীয় মশার ডিম এবং এশীয় এডিশ মশা পাওয়া গেছে। এগুলো আক্রমণাত্মক প্রজাতি, যা ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও জিকা ভাইরাসের মতো গ্রীষ্মমণ্ডলীয় রোগ ছড়াতে পারে।
আইসল্যান্ডে মশার উপস্থিতি এখন পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য নতুন হুমকি সৃষ্টি করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
মন্তব্য করুন