মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি

বৈশাখী ডেস্ক
প্রকাশ : ২৭ আগস্ট ২০২৫, ০৪:০২ পিএম

আপিল বিভাগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি দিয়েছেন।

বুধবার (২৭ আগস্ট) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ৬ সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এদিন তত্ত্ববধায়ক সরকারব্যবস্থা নিয়ে কার্যকর সমাধান চায় আপিল বিভাগ যাতে এটা বার বার আর বিঘ্নিত না হয় রিভিউ শুনানিতে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ এ মন্তব্য করেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজনসহ আরও কয়েকটি আবেদনের ওপর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে রিভিউ করে।

এর আগে মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চে শুনানি এদিন পর্যন্ত মুলতবি করা হয়। ওইদিন শুনানির শুরুতে আইনজীবী শিশির মনির বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের পক্ষে যেসব বিচারপতি রায় দেন, তারা সবাই পরে প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান।

২১ আগস্ট দ্রুততম সময়ের মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা রিভিউয়ের শুনানি করতে আপিল বিভাগে সব রাজনৈতিক দলের পক্ষে আবেদন করা হয়। ওই সময় প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ৬ সদস্যের আপিল বেঞ্চে এ আবেদন করেন আইনজীবী শিশির মনির। এদিন এ বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য করেন আপিল বিভাগ।

২০১১ সালের ১০ মে আপিল বিভাগের ৭ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী (তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা) বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল মঞ্জুর করে এ রায় দেয়া হয়। পরে এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে গত বছরের অক্টোবরে একটি আবেদন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এর আগে রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ ৫ বিশিষ্ট ব্যক্তি। বদিউল আলম মজুমদার ছাড়াও অন্য চার জন হলেন- তোফায়েল আহমেদ, এম হাফিজউদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া ও জাহরা রহমান। পাশাপাশি আপিল বিভাগের ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে গত বছরের ২৩ অক্টোবর আরেকটি আবেদন করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।

এছাড়া নওগাঁর রাণীনগরের নারায়ণপাড়ার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেন আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে গত বছর একটি আবেদন করেন। পঞ্চম সংশোধনী নিয়ে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আরেকটি আবেদন করেন তিনি। দুই সংশোধনী নিয়ে পৃথক পাঁচটি রিভিউ আবেদন বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) আপিল বিভাগের কার্যতালিকার ১৭ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।

প্রসঙ্গত: ১৯৯৬ সালে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত হয়। এই সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম সলিমউল্লাহসহ অন্যরা ১৯৯৮ সালে হাইকোর্টে রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল দেন। হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট রায় দেন। সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীকে বৈধ ঘোষণা করে দেয়া ওই রায়ে বলা হয়, ১৯৯৬ সালের ত্রয়োদশ সংশোধনী সংবিধানসম্মত। এই রায়ের বিরুদ্ধে সরাসরি আপিলের অনুমতি দেয়া হয়।

এরই ধারাবাহিকতায় ২০০৫ সালে আপিল করে রিট আবেদনকারী পক্ষ। এই আপিল মঞ্জুর করে ২০১১ সালের ১০ মে আপিল বিভাগ রায় ঘোষণা করেন। ঘোষিত রায়ের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার বিলোপসহ বেশকিছু বিষয়ে আনা পঞ্চদশ সংশোধনী আইন ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয়। পরে ২০১১ সালের ৩ জুলাই এ-সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরাতে ৭ম দিনের আপিল শুনানি শুরু
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরাতে ৭ম দিনের আপিল শুনানি শুরু
হানিফসহ চারজনের বিচার শুরু, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি
হানিফসহ চারজনের বিচার শুরু, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি
তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে ষষ্ঠ দিনের আপিল শুনানি চলছে
তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে ষষ্ঠ দিনের আপিল শুনানি চলছে
হানিফ ও ইনুর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ আজ
হানিফ ও ইনুর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ আজ