
		বরগুনা সংবাদদাতা: বরগুনার সাবেক এমপি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর বিরুদ্ধে রয়েছে ভূমি দখল, চাঁদাবাজির বিস্তর অভিযোগ। চাকরি দেয়ার নামে করেছেন নিয়োগ বানিজ্য। খোদ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকও ২০১৮ সালে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেন। দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির জন্য এলাকায় বিতর্কিত এই নেতা দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে শোচনীয়ভাবে হেরে যান। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বরগুনা সদর-আমতলী-তালতলী আসনের পাঁচবারের সাবেক সংসদ সদস্য ধীরেন্দ দেবনাথ শম্ভু। ৩০ বছর ধরে আছেন বরগুনা আওয়ামী লীগের শীর্ষ পদে। সবশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হেরে যান তিনি। এই নেতার বিরুদ্ধে রয়েছে পুরো জেলা জুড়ে নানা অভিযোগ। ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় শম্ভুর আয় ছিল ২ লাখ ১০ হাজার টাকা, ব্যাংকে জমা ছিল ৩ লাখ টাকা। তাঁর সম্পত্তির তালিকায় ছিল মাত্র ৫৭ লাখ টাকার জমি, একতলা দালান বাড়ি ও দুটি টিনের ঘর। আর স্ত্রীর নামে সঞ্চয় ছিল ১২ লাখ টাকা ও একটি ফ্ল্যাট। কিন্তু ১৫ বছরের ব্যবধানে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হলফনামা অনুযায়ী, তাঁর আয় ৫৫ লাখ টাকার বেশি। নিজের নামে ব্যাংকে ৩ কোটি টাকার বেশি এবং স্ত্রীর নামে ১৫ লাখ টাকার বেশি জমা আছে। সঞ্চয়পত্র ও স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ নিজের নামে ৬৭ লাখ টাকার বেশি এবং স্ত্রীর নামে ৭৬ লাখ টাকার বেশি। কোটি টাকার বেশি দামের দুটি গাড়ি আছে। কৃষি অকৃষি মিলিয়ে নিজের নামে কোটি টাকার জমি এবং স্ত্রীর নামে একটি ফ্ল্যাট বেড়ে দুটি হয়েছে। তবে স্থানীয়রা জানিয়েছেন এর থেকেও আরো অনেক বেশি সম্পদ রয়েছে শম্ভুর। অভিযোগ রয়েছে, শম্ভু ক্ষমতার অপব্যবহার করে ভূমি দখল থেকে শুরু করে গত ১৬ বছরে এলাকার বিভিন্ন প্রকল্পে নামমাত্র কাজ করিয়ে সিংহভাগ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। ২০১৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর বরগুনায় সংবাদ সম্মেলন করে শম্ভুর নামে ২৪টি দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধরেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির। দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির জন্য এলাকার মানুষের কাছে বিতর্কিত হলেও আওয়ামী লীগ দ্বাদশ নির্বাচনে ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুকে মনোনায়ন দেয়। এতে শোচনীয়ভাবে হেরে যান তিনি।গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শম্ভু আত্মগোপনে চলে যান। এরপর রাজধানীর উত্তরা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশ। এছাড়া ৫০০ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন।
মন্তব্য করুন