
		ঠাকুরগাঁও সংবাদদাতা: ঠাকুরগাঁওয়ে ত্রাসের রাজত্ব গড়েছিলেন আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন। দলীয় পদ ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে গড়েছেন বিপুল সম্পদ। নিয়োগ বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজিসহ এমন কোন অপকর্ম নেই যা করেননি এই রমেশ সেন। এসব কাজে সহযোগী ছিলেন ছেলে পার্থ ও ভাই অনিল। কেউ তার মতের বিরুদ্ধে গেলেই মামলা, হামলা ও নিপীড়ন চালানো হতো।
ঠাকুরগাঁওয়ের একজন সাধারণ ধান ব্যবসায়ী থেকে আওয়ামী লীগ ম্যাজিকে হাজার কোটি টাকার সম্পদ গড়েছেন রমেশ চন্দ্র সেন। কপাল খোলে সংসদ সদস্য খাদেমুল ইসলামের মৃত্যুর পর। ১৯৯৭ সালে ঠাকুরগাঁও-১ আসনের উপনির্বাচনে জয়ী হন। এরপর এই আসনে কোন প্রতিদ্বন্দ্বি তৈরি হতে দেননি ধূর্ত রমেশ। তার পরিবারের নামে রুহিয়ায় একটি রাইস মিল, কারখানা ও দুটি বাড়ি আছে। ঢাকায় এবং ভারতে রয়েছে তার বিলাসবহুল বাড়ি।
জেলা আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিজের লোক বসিয়ে ত্রাসের রাজত্ব তৈরি করেন রমেশ চন্দ্র সেন। ভাই অনিল চন্দ্র সেন ছিলেন রুহিয়া পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। আর রুহিয়া থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি করেন ছেলে পার্থ সারথী সেনকে। বাবা-ছেলে মিলে গড়েন ‘সেন গ্র“প’। পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়সহ জেলার সব ঠিকাদারির কাজ করতো এই গ্র“প। কেউ তাদের বিরুদ্ধে গেলেই হয়রানি করা হতো।
জেলার পরিবহন সেক্টরসহ সব চাঁদাবাজি সরসরি নিয়ন্ত্রণ করতেন রমেশ সেন। স্কুল কলেজের নিয়োগও ছিল তার হাতে।
রমেশের অপকর্মের সহযোগী সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশারুল ইসলাম সরকার ও জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম স্বপন। তাদের মাধ্যমেই মানুষকে হয়রানি, টাকা আদায় ও লেনদেনর করতেন রমেশ। এই চক্রের হাত থেকে ছাড়া পাননি সাংবাদিকরাও।
রমেশের আশীর্বাদ পুষ্ট মুক্তা রাণী নিয়ন্ত্রণ করতেন ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতাল। তার দাপটে অতিষ্ঠ ছিল চিকিৎসকসহ হাসপাতালের সব স্টাফ।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতন ঘটলে বিক্ষুদ্ধ জনতা রমেশের একটি বাড়ি গুড়িয়ে দেয়। গত ১৬ আগস্ট বিস্ফোরক মামলায় রুহিয়ার বাড়ি থেকে রমেশকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে আরও একটি মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। বর্তমানে কারাগারে আছেন চাল ব্যবসায়ী থেকে রাজনীতিবিদ বনে যাওয়া সাবেক পানিসম্পদমন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন।
মন্তব্য করুন