মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫

মাজহারুল ইসলামের সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদে বিএমএসআরইর ভুক্তভোগীদের বিবৃতি

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২০ মে ২০২৫, ০২:১৫ পিএম

অনলাইন ডেস্ক: বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হল রুমে গত সোমবার (১৯ মে )ডাঃ প্রফেসর মাজহারুল ইসলাম এর সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদ জানান ভুক্তভোগী নিপীড়িত নির্যাতিত শিক্ষক, চিকিৎসক ও কর্মচারীবৃন্দ।

মঙ্গলবার (২০ মে) এক বিবৃতিতে ভুক্তভোগীরা এসব কথা জানান।

ভুক্তভোগীরা জানান, ডা. প্রফেসর মাজহারুল ইসলাম দোলন এর ছত্রছায়ায় বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ এর প্রিন্সিপাল পরিতোষ কুমার ঘোষ, এনাটমি ডিপার্টমেন্ট হেড আব্দুর রশীদ এর মিথ্যাচারের প্রপোগান্ডার প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ মেডিক্যাল কলেজ ও হসপিটাল (বিএমএসআরই) পক্ষ থেকে নিপীড়িত নির্যাতিত শিক্ষক, চিকিৎসক ও কর্মচারীবৃন্দ।

বিবৃতিতে তারা জানান, স্বৈরাচারী দোসরদের দ্বারা ডা: ফারজানা মাকসুদ রুনা সহ সবাই নিপীড়িত নির্যাতিত শিক্ষক চিকিৎসক। ডাঃ প্রফেসর মাজহারুল ইসলাম গতকাল সংবাদ সম্মেলনে যে অসত্য মিথ্যা বানোয়াট ষড়যন্ত্রমূলক বক্তব্য আমাদের বিরুদ্ধে বলেছে,আমরা বাংলাদেশ মেডিক্যাল কলেজ ও হসপিটাল বিএমএসআরই পক্ষ থেকে নিন্দা জানাই।

তারা জানান,ডাঃ ফারজানা মাকসুদ রুনা ডিপার্টমেন্ট এর সহকারী অধ্যাপক তিনি বাংলাদেশ মেডিকেল এর ১২তম ব্যাচ এর একজন স্টুডেন্ট এবং বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজে গত ১৭ বছর ধরে দক্ষতা, সততা ও নিষ্ঠার সাথে কর্মরত আছে। সে জুলাই আগস্ট অভ্যুত্থানের একজন সম্মুখযোদ্ধা। যখন ফ্যাসিস্ট হাসিনা নিরীহ নিষ্পাপ নারী ও শিশুদের উপর নির্বিচারে গুলি করছিল তখন তিনি দুই সন্তানের কথা চিন্তা না করে রাস্তায় নেমে নেমেছেন জীবন বাজি রেখে।

ফ্যাসিবাদ হসিনার পতন হলেও ভাগ্যের পরিহাস আবারও এক ফ্যাসিস্ট ডাঃ প্রফেসর মাজহারুল ইসলামের বদ নজরে পড়েন। তিনি আমাদের প্রাণের মেডিকেল কলেজ এর গভর্নিং বডি এর চেয়ারম্যান নিযুক্ত হয়। তিনি তার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করতে বাধ্য করেন বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ এর প্রিন্সিপাল পরিতোষ কুমার ঘোষ, এনাটমি ডিপার্টমেন্ট হেড আব্দুর রশীদ এর মাধ্যমে। তারা শ্রদ্ধেয় শিক্ষক হলেও কিন্তু তারা যে প্রোপাগান্ডা চালিয়েছে এর তীব্র নিন্দা জানাই। তারা বক্তব্যে যা বলেছেন সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট, এ ব্যাপারে প্রধান উপদেষ্টা ও স্বাস্থ্য উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ ও হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

জিবি চেয়ারম্যন এর ছত্রছায়ায় আমি গত অক্টোবর মাস থেকে বিভিন্ন ভাবে কর্মক্ষেত্রে হেনস্থা হচ্ছি এবং আমার ডিপার্টমেট এর এক সহযোগি অধ্যাপক দ্বারা হুমকির শিকার হচ্ছি. কোন সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই আমাকে শুধু মাত্র স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় আমাকে নিয়মবহির্ভূত কারণ দেখিয়ে শোকজ আর তদন্ত কমিটি করে বার বার হেনস্থা করা হয়। কোন প্রমাণ ছাড়া আমাকে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটা পাবলিক গ্রুপ এর অ্যাডমিন দেখিয়ে শিক্ষকদের প্রতি অসম্মানিত লেখালেখি করার মিথ্যাচার করা হয় অধ্যক্ষ এবং আমার ডিপার্টমেন্টাল হেড দিয়ে আমাকে নিয়ে যে মিথ্যা বিবৃতি দেন তার প্রতিবাদ করতে আমাদের বিবৃতি দিতে আবশ্যক হয়ে পড়ে।

তারা আরো বলেন,বাংলাদেশ মেডিকেলের সকল চিকিৎসকসহ আমরা সকলেই জানি গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তৎকালীন ইসি কমিটির চেয়ারম্যানসহ কয়েকজন সদস্য পালিয়ে যান। কমিটির তৎকালীন চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক পরে গ্রেফতার হন। এরপর হাসপাতালের নতুন ইসি কমিটি গঠন করা হয়। হাসপাতালের গঠনতন্ত্রে নিয়ম হচ্ছে ইসি কমিটির বৈঠকে ছয়বার অনুপস্থিত থাকলে যে কোন সদস্যের সদস্যপদ বাতিল হয়ে যায়। কিন্তু তাঁদের সদস্যপদ বাতিল হয়ে গেলেও গতকাল ১৯ মে সকালে তাঁরা বহিরাগত ব্যক্তিদের নিয়ে সভা করতে এলে তাঁদের বাধা দেওয়া হয় নাই।

বিবৃতিতে ডাঃ ফারজানা মাকসুদ রুনা বলেন ,আমি স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই আমি অন্যায় করিনি, পিছু হঠার প্রশ্নই আসে না বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ আমার প্রাণের প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের সুনাম-সু খ্যাতি আমি সব সময় চাই। প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আমার কোনো বক্তব্য নেই। আমি এই প্রতিষ্ঠান থেকে যদি চলেও যাই তবুও প্রতিষ্ঠানের প্রতি আমার দায়িত্ব থেকে এক চুলও নড়বো না। আমার অভিযোগ তাদের প্রতি, যারা আমাকে অন্যায়ভাবে সাময়িক বরখাস্ত করেছে এবং পর পর দুই বার আমার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করে মিথ্যাচার করেছে। আমি আমার বক্তব্য গণমাধ্যমে দিতে বাধ্য হচ্ছি, তা না হলে কেউ কেউ মনে করবে তাদের বক্তব্য সঠিক। নিরুপায় হয়ে গণমাধ্যমে বক্তব্য দেওয়ার জন্য আমার প্রাণের প্রিয় প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের কাছে ক্ষমা চাচ্ছি, আমি বিশ্বাস করি তারা আমার দুঃসময়ে আমার পাশে থাকবেন।

ফ্যাসিবাদ প্রতিরোধ আন্দোলনের সভাপতি মোহাম্মদ অলিদ বিন সিদ্দিক তালুকদার বলেন জুলাই গণহত্যার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত পতিত ফ্যাসিবাদীর সমর্থকরা এখনও প্রশাসনের ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেশ ও দশের নাগরিকদের বিরুদ্ধে অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।

এতে জুলাই গণহত্যায় সরাসরি জড়িতদের আইনের আওতায় না এনে এ ধরনের লোক দেখানো ও ঢালাওভাবে আসামি করা মামলায় গ্রেফতার ও জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানোর ঘটনা গণহত্যার বিচার প্রক্রিয়াকে লঘু করে দেখানোর প্রবণতা সৃষ্টি করছে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
‎আগামী সাপ্তাহে ফ্যাসিস্ট  খুনি শেখ হাসিনার বিচার হবে 
‎আগামী সাপ্তাহে ফ্যাসিস্ট  খুনি শেখ হাসিনার বিচার হবে 
রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের অবৈধ সুবিধা দিলে পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের অবৈধ সুবিধা দিলে পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
৪৮ হাজার পুলিশ সদস্যকে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ সম্পন্ন
৪৮ হাজার পুলিশ সদস্যকে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ সম্পন্ন
বাতিল হলো ইভিএমে ভোট দেওয়ার বিধান
বাতিল হলো ইভিএমে ভোট দেওয়ার বিধান