মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫

দেশজুড়ে বৈরী আবহাওয়া, চার জেলায় বন্যার শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২১ মে ২০২৫, ০৫:০০ এএম

নিজস্ব প্রতিবেদক: সম্প্রতি দেশে প্রায় প্রতিটি জেলায় থেমে থেমে ভারী ও মাঝারি আকারের বৃষ্টি হচ্ছে। সেই সাথে সীমান্ত নদীতে পাহাড়ি ঢলের কারণে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

ইতোমধ্যে নদনদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল, দেখা দিয়েছে নদীভাঙন। এমন পরিস্থিতিতে শেরপুর, নেত্রকোনা, সিলেট ও সুনামগঞ্জে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বন্যার শঙ্কা করছেন আবহাওয়াবিদরা।

এ মাসের শেষ দিকে একটি লঘুচাপ তৈরি হতে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। লঘুচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।

প্রসঙ্গত, জ্যৈষ্ঠের শুরুতে দু-তিন দিন ধরে ঢাকায় দফায় দফায় বৃষ্টি হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানেও কমবেশি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। তবে আজ বুধবার থেকে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমে আসতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

এর মধ্যে গতকাল দিনভর বৃষ্টিতে বোরো ধান, আম ও লিচুর ক্ষতি হয়েছে। আবহাওয়াবিদ শাহানাজ সুলতানা বলেন, বুধবার থেকে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমে আসবে; রোদের দেখা মিলবে। এর পর ২৭ বা ২৮ মে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে।

২৪ ঘণ্টার মধ্যে শেরপুর, নেত্রকোনা, সিলেট ও সুনামগঞ্জের বিভিন্ন নদীতে পাহাড়ি ঢল শুরুর আশঙ্কা রয়েছে। আগামী ২৭ মে লঘুচাপ, ২৮ মে নিম্নচাপ ও গভীর নিম্নচাপ এবং ২৯ মে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা করা যাচ্ছে।

গতকাল ভারতের মেঘালয় ও আসামে টানা ভারী বর্ষণের কারণে সিলেটের সীমান্তবর্তী নদীগুলোতে ঢল নেমেছে। বিশেষ করে সীমান্তের গোয়াইনঘাট উপজেলার পিয়াইন ও ডাউকি নদীতে পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পিয়াইনের পানি উপচে প্রবেশ করছে লোকালয়ে। সুরমা নদীর কানাইঘাট সীমান্ত এলাকার অবস্থাও একই।

আবহাওয়া অফিসের তথ্য বলছে, গতকাল সকাল ৬ থেকে ৯টা পর্যন্ত সিলেট অঞ্চলে ১০১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। ৯ থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৬৮ ও ১২ থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ১৪ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।

গোয়াইনঘাট ইউএনও রতন কুমার অধিকারী জানান, নিম্নাঞ্চলের মানুষের আগেই সতর্ক করা হচ্ছে। জানমাল রক্ষায় বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

দু’দিনের প্রবল বর্ষণ এবং উজানের পাহাড়ি ঢলে শেরপুরের বিভিন্ন নদনদীর পানি বাড়ছে। পাহাড়ি নদী চেল্লাখালীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে। কুড়িগ্রামেও গত তিন দিনের টানা ভারী বর্ষণ এবং উজানের ঢলে তিস্তা, জিঞ্জিরাম, দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্র নদে পানি বেড়েছে।

ইতোমধ্যে তিস্তার চরাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বাদাম, পাট, বোরো ধানসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি হয়েছে। ফসলি জমি ডুবে গেছে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও তিস্তাপারের পাঁচগাছি, গাবেরতল, দলদলিয়া, থেতরাই, বেগমগঞ্জ, মোল্লারহাট, সরিষাবাড়ী ও বিদ্যানন্দ এলাকায়।

ভারী বর্ষণে রংপুর নগরীর শ্যামাসুন্দরী খাল উপচে আশপাশের বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করেছে। গত সোমবার রাতভর বৃষ্টিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় নগরীর অন্তত ২০টি মহল্লা এক থেকে দেড় ফুট পানিতে তলিয়ে গেছে।

জেলা কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, জেলা সদর, গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া ও পীরগাছা উপজেলায় ৮৪ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষেত জলমগ্ন হয়েছে।

এদিকে দুই ঘণ্টার ভারী বৃষ্টিতে গতকাল ময়মনসিংহ শহরের বেশির ভাগ এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। জেলা আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গতকাল সকালে ময়মনসিংহে ৩৬ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
‎আগামী সাপ্তাহে ফ্যাসিস্ট  খুনি শেখ হাসিনার বিচার হবে 
‎আগামী সাপ্তাহে ফ্যাসিস্ট  খুনি শেখ হাসিনার বিচার হবে 
রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের অবৈধ সুবিধা দিলে পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের অবৈধ সুবিধা দিলে পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
৪৮ হাজার পুলিশ সদস্যকে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ সম্পন্ন
৪৮ হাজার পুলিশ সদস্যকে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ সম্পন্ন
বাতিল হলো ইভিএমে ভোট দেওয়ার বিধান
বাতিল হলো ইভিএমে ভোট দেওয়ার বিধান