মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে স্বতন্ত্র ভিপি প্রার্থীকে হল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। রুমমেটকে ছুরিকাঘাতের অভিযোগে তাকে বহিষ্কার করা হয়। প্রাধ্যক্ষ মো. সিরাজুল ইসলাম তাৎক্ষণিকভাবে বহিষ্কারের ঘোষণা দেন। গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলে এ ঘটনা ঘটে।
ওই ঘটনায় আহত শিক্ষার্থীর নাম রবিউল হক। তিনি ২০১৮-১৯ সেশনের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। আর অভিযুক্ত ভিপি প্রার্থীর নাম জালাল আহমদ জালাল। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন অ্যান্ড ফিল্ম বিভাগের শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় ভিপি প্রার্থী জালাল আহমদকে পুলিশে সোপর্দ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এ বিষেয়ে হল প্রাধ্যক্ষ বলেন, এ ধরনের নৃশংস কর্মকাণ্ডের জন্য তাঁকে হল থেকে বহিষ্কার করা হলো। তাঁর ছাত্রত্ব বাতিলেরও ব্যবস্থা করা হবে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে চলমান বাগ্বিতণ্ডার জেরে জালাল আহমেদ রুমমেট রবিউল হককে ছুরিকাঘাত করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমদ বলেছেন, এ ঘটনায় জালাল আহমদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আসন্ন ডাকসু নির্বাচনে এ ঘটনার কোনো প্রভাব পড়বে না বলেও জানান তিনি। জালাল আহমদের বিরুদ্ধে আগের একাধিক অভিযোগের বিষয়ে প্রক্টর বলেন, প্রশাসন তার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিয়েছে, এই মুহূর্তে আমি বলতে পারছি না। তবে আজকের ঘটনার পর সব বিষয় খতিয়ে দেখা হবে।
ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রবিউল হক বলেন, রাত সাড়ে ১২টার দিকে জালাল কক্ষে এসে লাইট জ্বালায় এবং শব্দ করতে থাকে। ফলে আমার ঘুম ভেঙে যায়। তখন আমি বলি, সকালে আমাকে লাইব্রেরিতে যেতে হবে, অযথা শব্দ করলে ঘুমে সমস্যা হচ্ছে। এতে সে রেগে গিয়ে আমাকে অবৈধ, বহিরাগত বলে। আমি প্রতিবাদ করলে আমাকে আঘাত করে। পরে কোনোক্রমে আমি আত্মরক্ষা করি। শিক্ষার্থী রবিউল হক জানান টিউবলাইট দিয়ে মাথায় আঘাত করার পর তার শরীরে জখম হয়।জালাল টিউবলাইট দিয়ে মাথায় বাড়ি মেরেছিল। লাইট ভেঙে বুকের বাম পাশে গভীর ক্ষত হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গুরুতর আহত অবস্থায় সহপাঠীরা রবিউলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। ঘটনার পর থেকে শিক্ষার্থীদের রোষানল এড়াতে নিজ কক্ষে আবদ্ধ ছিলেন জালাল। পরে প্রক্টর এবং হল প্রভোস্টের সহায়তায় তাকে শাহবাগ থানা পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদ বলেন, হল প্রশাসন এরইমধ্যে বাদী হয়ে জালাল আহমদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছে। এখন মামলার পরবর্তী প্রক্রিয়ায় প্রচলিত আইন অনুযায়ী চলবে। এ ঘটনার পর জালাল আহমদের ডাকসুর ভিপিপ্রার্থিতা থাকবে কিনা জানতে চাইলে প্রক্টর বলেন, তার প্রার্থিতা থাকবে কি থাকবে না সেটা নির্বাচন কমিশন তাদের বিধি-বিধান অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।
মন্তব্য করুন
