
		স্বাভাবিক জীবনযাপনের জন্য সুস্থ শরীরের পাশাপাশি সুস্থ মনও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। তাই মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রতি বছর ১০ অক্টোবর নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালন করা হয় বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও পালিত হচ্ছে এ দিনটি।
এবছর ২০২৫ সালের প্রতিপাদ্য বা থিম হ'ল: `Access to Services -Mental Health in Catastrophes and Emergencies' অর্থাৎ ‘সেবাসুবিধার প্রাপ্যতা- বিপর্যয় ও জরুরি অবস্থা-আক্রান্ত মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য’। এই থিমের মূল উদ্দেশ্য হলো - বিপর্যয়, দুর্যোগ, সঙ্কট ও মানবিক জরুরি অবস্থার সময় মানসিক স্বাস্থ্য ও মনস্তাত্ত্বিক সহায়তার বিষয়কে গুরুত্ব দেয়া।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) বলছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যুদ্ধ, মহামারি বা অন্যান্য মানবিক সঙ্কটের সময় মানুষ শুধু শারীরিক ক্ষতির মুখোমুখি হয় না, বরং মানসিকভাবে প্রচণ্ড আঘাতপ্রাপ্ত হয়। আশ্রয় হারানো, প্রিয়জনের মৃত্যু, জীবিকা হারানোর মতো পরিস্থিতি অনেকের মধ্যে ভয়, উদ্বেগ, হতাশা ও মানসিক বিপর্যয় সৃষ্টি করে। এই অবস্থায় সময়মতো মানসিক সহায়তা না পেলে অনেকেই দীর্ঘমেয়াদি মানসিক সমস্যায় ভোগেন।
বর্তমান বিশ্বের প্রেক্ষাপটে মানসিক স্বাস্থ্যসেবার গুরুত্ব আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় অনেক বেশি। বিশেষ করে প্রাকৃতিক বিপর্যয় বা জরুরি অবস্থায় আক্রান্ত মানুষের জন্য প্রশিক্ষিত মনোবিদ, কাউন্সেলর ও মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের দ্রুত সহায়তা অত্যন্ত প্রয়োজন। এমন সংকটময় মুহূর্তে মানসিক স্থিরতা ও ইতিবাচক চিন্তাই স্বাভাবিক জীবনযাপন শুরু করার প্রথম ধাপ।
বাংলাদেশেও মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতনতা ধীরে ধীরে বাড়ছে, তবে এখনো অনেকেই মানসিক সমস্যাকে “দুর্বলতা” হিসেবে দেখেন। এই সামাজিক ধারণা বদলানো জরুরি। মানসিক অসুস্থতা কোনো লজ্জার বিষয় নয়- এটি একটি শারীরিক রোগের মতোই চিকিৎসাযোগ্য অবস্থা। পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, গণমাধ্যম ও সমাজের সম্মিলিত উদ্যোগেই সচেতনতা বাড়ানো সম্ভব।
মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষায় নিজেকেও যত্ন নিতে হবে। নিয়মিত ব্যায়াম, পর্যাপ্ত ঘুম, প্রিয়জনের সঙ্গে সময় কাটানো, প্রয়োজন হলে কাউন্সেলিং নেওয়া- এগুলো মানসিক সুস্থতা ধরে রাখার গুরুত্বপূর্ণ উপায়। মানসিকভাবে সুস্থ একজন মানুষই পারে পরিবার, সমাজ ও দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে।
মন্তব্য করুন