
		মহান স্বাধীনতার ঘোষক ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৮১ সালের এই দিনে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে কতিপয় বিপথগামী সেনা সদস্যের হাতে নিহত হন এই রাষ্ট্রপতি। তার সৃষ্টি করা বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ একটি যুগান্তকারী ধারণা। যেখানে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার কথা বলা হয়েছে। তাঁর সেই আদর্শকে ধারণ করা গেলে, দেশে কোন বৈষম্য থাকবে না বলেই মনে করেন তার অনুসারিরা।
মৃত্যুই যে সব কিছুকে বিস্মৃত করতে পারে না, ক্ষণজন্মা রাষ্ট্রনায়ক জিয়াউর রহমান তেমনই একটি নাম। বাঙালি জাতির ক্রান্তি লগ্নে তার আবির্ভাব হয়েছিলো অসীম সাহসিকতা ও প্রজ্ঞা নিয়ে। মুক্তিযুদ্ধের শুরুতেই যখন মঞ্চ কাঁপানো নেতারা পালিয়ে যায়, তখন দেশের মানুষ পরিচিত হন মেজর জিয়ার কণ্ঠের সাথে। চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে তাঁর স্বাধীনতার ঘোষণা জাতিকে উজ্জীবিত করেছিলো, একত্রিত করেছিলো এক অভিষ্ট লক্ষ্যে। তিনি কেবল স্বাধীনতার ঘোষনাই দেননি নিজে অংশ নিয়েছিলেন সশস্ত্র যুদ্ধে। ছিলেন অন্যতম সেক্টর কমান্ডার ও জেড ফোর্সের অধিনায়ক।
পঁচাত্তরের পট পরিবর্তনের পর অভ্যূত্থান পাল্টা অভ্যূত্থানসহ নানা ঘটনা ও অস্থিরতার মধ্যদিয়ে ক্ষমতার কেন্দ্রে আসেন মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান। দায়িত্ব নেন প্রেসিডেন্টের। সেনানায়ক থেকে রাষ্ট্রনায়ক, জিয়াউর রহমানের বছর ছয়েকের রাজনৈতিক জীবন ছিল তেমনি আলোরিত এবং আলোচিত।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন আরও জানান সাবেক এই রাষ্ট্রপতি ক্ষমতায় থেকেই গড়েন রাজনৈতিক দল। তার নেতৃত্বে গড়া জাগদল থেকে বিএনপি দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তন করে। যেখানে তাঁর মূলমন্ত্র ছিলো অথনৈতিক উন্নয়ন জাতীয় ঐক্য এবং জনগনের স্বনির্ভরতা অর্জন। তিনি সকল বিভেদের উর্দ্ধে একটি ঐক্যবদ্ধ সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার জন্য কাজ করেছেন। বহুদলীয় গণতন্ত্রের নামে জিয়াউর রহমান এমন এক রাজনৈতিক নীতি অনুসরণ করেন, যার সুযোগে দলে, রাজনীতিতে এবং ক্ষমতায় পুনর্বাসিত হয় নানা মত ও পথের মানুষ।
দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, জিয়াউর রহমানের সরকার পরিচালনার মূল ভিত্তি ছিলো সাম্য, মানবিক মর্যাদা এবং সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা। তিনি দ্রুতই জনপ্রিয়তা পান তাঁর বাকপটুতা আর সরল জীবনযাপনের কারণে। তার হাত ধরেই দেশ স্বনির্ভর হয়ে উঠতে শুরু করে যা দেশীয় এবং আর্ন্তজাতিক ষড়যন্ত্রকারীদের পছন্দ হয়নি বলেই মনে করেন আর অনুসারিরা।
১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারি বগুড়ার গাবতলী উপজেলার বাগবাড়ী গ্রামে জন্ম নেয়া জিয়াউর রহমান অল্প সময়ে সাধারণ মানুষের কাছে নিজেকে জনপ্রিয় করতে পারলেও, হেরে যান ক্ষমতার লড়াইয়ে। সেনাবাহিনীতে ক্যূ-পাল্টা ক্যূ’র মাধ্যমে ক্ষমতার শীর্ষে আসা জিয়াউর রহমানের জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটে সেনা ষড়যন্ত্রেই।
মন্তব্য করুন