
		একাত্তর, নব্বই ও চব্বিশের অঙ্গীকার বাস্তবায়নে সকলকে ঐকমত্যে পৌঁছার আহ্বান জানিয়েছে আমার বাংলাদেশ পার্টি ‘এবি পার্টি’। অনুপ্রেরণা, আত্মপর্যালোচনা ও প্রত্যয়দীপ্ত অঙ্গীকারে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ৩৬ দিন উদযাপনের ঘোষণা দিয়েছে দলটি। আজ শুক্রবার সকাল ১১ টায় বিজয় নগরের দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে কর্মসূচির ঘোষণা দেন দলের চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু।
সংবাদ সম্মেলনে মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, রাষ্ট্র ক্ষমতা পরিবর্তনের মাধ্যম হচ্ছে নির্বাচন। কিন্তু ক্ষমতাসীনরা সবসময় নির্বাচন ছাড়া জোর করে তাদের ক্ষমতা আঁকড়ে থাকতে চেয়েছে। পাকিস্তানি সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ৭০ এর নির্বাচন আদায় করা সম্ভব হয়েছিল কিন্তু তারা গণহত্যা চালিয়ে সে নির্বাচনের ফল বাস্তবায়ন করতে দেয়নি। ফলে অনিবার্য হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ। যা দেশের মানচিত্র, পতাকা ও ভূখন্ড নতুন করে নির্ধারণ করেছিল।
মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন- ৯০ এর গণআন্দোলনের পর ৯১ এ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়েছিল যা সংবিধানে নতুন করে অন্তর্ভুক্ত করতে হয়েছে। নব্বইয়ে তিন জোটের রূপরেখা ঘোষণা করে রাষ্ট্র পরিচালনার অঙ্গীকার করা হয়েছিল। শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসন তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিলসহ সকল কিছু ধ্বংস করে দিয়ে গেছে।
নির্বাচনের মাধ্যমে শেখ হাসিনার পতন হয়নি উল্লেখ করে জনাব মঞ্জু বলেন, হাজার হাজার মানুষের রক্তক্ষয়ী গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে তাকে সিংহাসন ছেড়ে পালাতে হয়েছে। সুতরাং শুধু একটা নির্বাচন করে ক্ষমতায় নতুন সরকার বসলেই গণঅভ্যুত্থানের অঙ্গীকার পূর্ণ হবেনা, বরং একাত্তর, নব্বই ও চব্বিশের অঙ্গীকার বাস্তবায়নে সকলে ঐকমত্যে পৌঁছার মাধ্যমে একটা সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে রাষ্ট্রকে নতুন মাত্রায় উপনীত করতে হবে। তিনি সকলকে সেই অঙ্গীকার বাস্তবায়নে ঐকমত্যে পৌঁছার আহ্বান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে ৩৬ দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেন কর্মসূচি বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক লে. কর্ণেল (অব,) দিদারুল আলম। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ভাইস চেয়ারম্যান লে. কর্ণেল (অব.) হেলাল উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, আনোয়ার সাদাত টুটুল, ব্যারিস্টার নাসরিন সুলতানা মিলি, এবিএম খালিদ হাসান ও ছাত্রপক্ষের আহ্বায়ক মোহাম্মদ প্রিন্স, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল বাসেত মারজান, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক শাহ আব্দুর রহমান, নারী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ফারাহ নাজ সত্তার, কেন্দ্রীয় সহকারী দফতর সম্পাদক অ্যাডভোকেট শরণ চৌধুরী, আব্দুল হালিম নান্নু, মশিউর রহমান মিলু, সহকারী প্রচার সম্পাদক আজাদুল ইসলাম আজাদ, রিপন মাহমুদ, সহকারী সাংগঠনিক সম্পাদক শাহজাহান ব্যাপারী, সহকারী স্বেচ্ছাসেবাবিষয়ক সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন রমিজ, কেফায়েত হোসেন তানভীর, মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সদস্য সচিব আহমাদ বারকাজ নাসিরসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
দিদারুল আলম জানান ৩৬ কর্মসূচির মধ্যে ১ জুলাই শনিবার সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ।
২ জুলাই থেকে ১৩ জুলাই পর্যন্ত বিজয়-৭১ চত্ত্বরে ‘কোটা না মেধা: এক রক্তস্নাত অধিকারের সংগ্রাম’ শীর্ষক চিত্র প্রদর্শনী।
১৪ জুলাই সোমবার বিকাল ৪টায় বিজয় ৭১ চত্ত্বরে ‘স্মৃতিতে স্মরণে-১৪ জুলাই প্রতিকী মিছিল ‘আমি কে তুমি কে রাজাকার রাজাকার, কে বলেছে কে বলেছে স্বৈরাচার স্বৈরাচার; শেখ হাসিনা পালায় না, গুষ্টিশুদ্ধ পালায়’
১৫ জুলাই মঙ্গলবার ছাত্রলীগকে আন্তর্জাতিকভাবে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণার আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘ বাংলাদেশ মিশনে স্মারকলিপি প্রদান।
১৬ জুলাই বুধবার রংপুরে শহীদ আবু সাঈদের কবরে দোয়া ও দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ এবং ফেনীতে ছাত্রলীগ ও পুলিশের যৌথ হামলার নৃশংসতা স্মরণে কালোপতাকা মিছিল।
১৭ জুলাই বৃহস্পতিবার ‘ইন্টারনেট বন্ধ করে আন্দোলন ও গণহত্যা ব্ল্যাক আউট’ স্মরণে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সংহতি জ্ঞাপন। ঢাকার প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ক্যম্পাস গুলোতে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ।
১৮ জুলাই শুক্রবার-কফিনবাহী প্রতীকী রোড মার্চ ও পথসভা: যাত্রাবাড়ী-ঢাবি-রামপুরা-মোহাম্মদপুর-উত্তরা- ১৯ জুলাই শনিবার- হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে নির্বিচারে মানুষ হত্যার বীভৎসতা স্মরণে মৌন মিছিল।
২০ জুলাই রবিবার- প্রবাসীদের রেমিটেন্স শাট ডাউন কর্মসূচি স্মরণে আলোচনা সভা, লন্ডন, দুবাই, মালোয়েশিয়া শাখা সংগঠন পালন করবে।
২১ জুলাই সোমবার বিজয় ৭১ চত্বরে গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী আলেম-ওলামাদের প্রতীকী সম্মাননা প্রদান ও সম্বর্ধনা। ২২ জুলাই মঙ্গলবার- চট্টগ্রামে মহানগর ও জেলা কমিটির উদ্যোগে চট্টগ্রামে শহীদদের স্মরণে সমাবেশ ও মিছিল।
২৩ জুলাই বুধবার গণহত্যকারী দল আওয়ামীলীগকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণার দাবিতে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ও মিশনে চিঠি প্রেরণ।
২৪ জুলাই বৃহস্পতিবার, সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী নারীদের প্রতীকী সম্মাননা প্রদান ও সম্বর্ধনা।
২৫ জুলাই শুক্রবার গাজীপুরে গণঅভ্যুত্থানে শ্রমিকদের অন্তর্ভুক্তি ও অনুপ্রেরণা স্মরণে শ্রমিক সমাবেশ
২৬ জুলাই শনিবার সকাল ১১টায় রায়েরবাজার গণকবরে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন ও দোয়া,
২৭ জুলাই রবিবার গণঅভ্যুত্থানে নিবেদিত আইনজীবীদের সাথে মতবিনিময় ও সম্বর্ধনা
২৮ জুলাই সোমবার গণঅভ্যুত্থানে আহতদের সেবা দানকারী চিকিৎসকদের সম্বর্ধনা
৩০ জুলাই বুধবার আহত-পঙ্গুদের সাথে মতবিনিময় ও সম্বর্ধনা ।
৩১ জুলাই বৃহস্পতিবার- গণঅভ্যুত্থানে নিবেদিত শিল্পী, সুশীল সমাজ ও গণমাধ্যম কর্মীদের সম্মানে চা-চক্র,
১ আগস্ট শুক্রবার কারারুদ্ধ নেতৃবৃন্দের সম্বর্ধনা।
২ আগস্ট শনিবার গণঅভ্যুত্থানে অবদান রাখা সাবেক সেনা কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময়,
৩ আগস্ট রবিবার শহীদ মিনারে কর্মসূচি ঘোষণা দিবসকে স্মরণ করে প্রেস ব্রিফিং ও পদযাত্রা,
৪ আগস্ট সোমবার, বিকাল ৪টায়, বিজয়-৭১ চত্বরে গণপ্রতিরোধ স্মরণে জাতীয় পতাকা মিছিল,
৫ আগস্ট মঙ্গলবার, সকাল ১১টায় বিজয়-৭১ চত্ত্বরে গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে সংহতি সমাবেশ, ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী ও শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনায় জেয়াফত।
মন্তব্য করুন