
বেশ কিছুদিন ধরেই দেশের রাজনীতিতে নানা পন্থীদের বিষয়ে বেশ জোরেশোরে চলছে আলোচনা। সেখানে গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে ডানপন্থিদের উত্থানের বিষয়টি নিয়ে নানা আলোচনা তৈরি হয়েছে। সভা-সমাবেশে কিংবা সংস্কার ও নির্বাচনের মতো ইস্যুগুলোতে বেশ সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে ইসলামপন্থিদের।
বিষয়টি নিয়ে আরো বেশি আলোচনায় আসে যখন দেশের অন্যতম প্রধান দল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দক্ষিণপন্থিদের উত্থান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
কয়েকদিন আগে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যদিও এ বিষয়টি একেবারেই নাকচ করে দিচ্ছে ইসলামপন্থি দলগুলো।
তাদের দাবি, গত ১৫ বছর যে গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে তারা বঞ্চিত হয়েছে, ফ্যাসিবাদের পতনের পর তারা সেই অধিকার ফিরে পেয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, অগাস্টের অভ্যুত্থানের পর দেশে যে রাজনৈতিক শূন্যতা তৈরি হয়েছে সেটার সুযোগ নিচ্ছে ডানপন্থি দলগুলো। তবে এর প্রভাব কতদূর গড়াবে, তা নির্ভর করবে নির্বাচন পরবর্তী সরকার গঠনের ওপর।
নির্বাচন হবার আগে তার আগে জেনে আসি সাম্প্রতিক কয়েকটি প্রেক্ষাপটের কথা
গত ১৯শে জুলাই স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামী।
তার আগের মাসের ২৮ তারিখে একই জায়গায় মহাসমাবেশ করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। সেখানে সংস্কার, জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার ও পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানায় তারা।
এর আগে গত ১৩ মে নারী সংস্কার কমিশন বাতিলসহ চার দফা দাবিতে মহাসমাবেশ করে কওমী মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম।
এছাড়াও সংস্কার, নির্বাচনসহ নানা বিষয়ে সরকারের সাথে আলোচনায় গুরুত্ব পেতে দেখা গেছে ধর্মভিত্তিক দল ও সংগঠনগুলোকে।
দক্ষিণপন্থিদের উত্থান নিয়ে বিএনপি মহাসচিবের উদ্বেগের বিষয়টি আলোচনায় এলে এর প্রতিক্রিয়া জানায় ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।
লিখিত এক বিবৃতিতে তারা জানায়, বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্য আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ভুল বার্তা দেবে।
"আমরাও বাংলাদেশে রাজনীতি করছি। আমরা তো এমন কোনো শক্তির উত্থান দেখছি না," বিবৃতিতে উল্লেখ করেন দলটির মহাসচিব ইউনুস আহমদ।
গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের রাজনীতি ও ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে গত ২১শে জুলাই একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে ধর্মীয় স্বাধীনতাবিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক কমিশন (ইউএসসিআইআরএফ)।
এতে বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকার রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সংস্কার কাজ এগিয়ে নিলেও রাজনৈতিক উত্তেজনা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে বাংলাদেশে এখনো উদ্বেগ রয়ে গেছে।
মন্তব্য করুন