
		ক্রীড়া ডেস্ক : অবশেষে আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায় নিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা ওপেনার তামিম ইকবাল। বিপিএল ফাইনালের পর বিসিবির আয়োজিত বিদায়ী সংবর্ধনায় তিনি স্মরণ করলেন তার দীর্ঘ ক্যারিয়ারের সঙ্গী সাকিব আল হাসান ও মাশরাফি বিন মোর্ত্তজাকে। তবে তার বিদায়ী ভাষণে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে একটি বার্তা ব্যক্তিগত ক্রিকেটারের ভক্ত নয়, সবাই যেন বাংলাদেশের সমর্থক হয়।
চট্টগ্রাম কিংসের বিপক্ষে ফাইনালে ১৯৫ রানের কঠিন লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করে শিরোপা ঘরে তুলেছে ফরচুন বরিশাল। দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে ২৯ বলে ৫৪ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছেন তামিম। এই জয়ের আগেই অবশ্য পর্দা নেমেছে তার বর্ণাঢ্য আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের। আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে বিদায়ের ঘোষণা দিয়েছিল বিসিবি। বিদায়ী সংবর্ধনায় তামিম ইকবালের হাতে তুলে দেওয়া হয় তার ক্যারিয়ারের দীর্ঘ পরিসংখ্যান সম্বলিত একটি স্মারক জার্সি এবং ক্রেস্ট।
বিদায়ী সংবর্ধনায় তামিম বলেন, ‘কোনো তামিমিয়ান নেই, কোনো সাকিবিয়ান নেই, কোনো মাশরাফিয়ান নেই। শুধু একটা জিনিস আছে, আর সেটা হলো বাংলাদেশ। এই বিষয়গুলো তরুণ প্রজন্মকে ধ্বংস করে দেয়, দয়া করে এসব (নির্দিষ্ট ক্রিকেটারের ভক্ত হওয়া) বন্ধ করুন। এটাই আমার শেষ কথা।’
কোনো নির্দিষ্ট ক্রিকেটারের ভক্ত না হয়ে বাংলাদেশকেই সমর্থন দেওয়ার আহবান জানালেন ব্যাটিংয়ে লাল-সবুজ জার্সিতে অসংখ্য রেকর্ডের মালিক, ‘আপনি আমার ভক্ত হতে পারেন, সাকিবের ভক্ত হতে পারেন কিংবা মাশরাফির ভক্ত। কিন্তু যখন দল খেলবে, তখন বাংলাদেশের ভক্ত হন। দয়া করে তরুণ দলকে সমর্থন করুন, তারা ভুল করবে, কিন্তু দয়া করে তাদের পাশে থাকুন। আপনার দলকে সমর্থন করুন, এটা আপনারই দল। দয়া করে সবাই একসঙ্গে থাকুন।’
২০০৭ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় তামিম ইকবালের। তিন সংস্করণ মিলে তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের জার্সিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৮৭ ম্যাচ ও ৪৪৮ ইনিংসে ১৫১৯২ রান করেছেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবমিলিয়ে ৯৪ ফিফটি ও ২৫টি সেঞ্চুরি করেছেন তামিম। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রান এখনও তার দখলে। ২৪৩ ম্যাচে করেছেন ৮৩৫৭ রান।
বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে লম্বা যাত্রায় তামিমের ক্যারিয়ারে অন্যতম সঙ্গী ছিলেন সাকিব, মুশফিক, মাহমুদউল্লাহ ও মাশরাফী। তাদের বন্ধুত্ব, একসঙ্গে লড়াই করার মানসিকতা ‘পঞ্চপান্ডব’ নামে পরিচিতি পায়। এর মাঝেও নির্দিষ্ট ক্রিকেটারের ভক্ত হয়ে আলাদাভাবে প্রচারণা দেখা যায়। ব্যক্তিগত সম্পর্কের বদৌলতে সাকিব-তামিমেরও দ্বৈরথ দেখা মেলে ভক্তদের মাঝে। তবে গত কয়েক বছরে মাঠের বাইরে নানা বিতর্কে সম্পর্ক কিছুটা জটিল হয়েছিল। সেই প্রসঙ্গেও তামিমের বার্তা স্পষ্ট দেশের স্বার্থের বাইরে কিছু নয়। তাই সবাইকে বাংলাদেশের সমর্থক হওয়ারই আহবান জানালেন তামিম। বিদায়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলেও পরিসংখ্যান বলবে, তিনি বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সফল ব্যাটসম্যান।
মন্তব্য করুন