
		অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ কর্তৃক অনুমোদিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটটি একটি প্রশাসনিক ধারাবাহিকতা। এতে দেশের চলমান অর্থনৈতিক সংকট, সাধারণ মানুষের জীবনমান ও বৈষম্য হ্রাসের বাস্তব দাবির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয় বলে মনে করে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস।
মঙ্গলবার (০৩ জুন) এক যৌথ বিবৃতিতে এসব কথা জানান দলটির সিনিয়র নায়েবে আমীর মাওলানা ইউসুফ আশরাফ ও মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ। বিবৃতিতে আরো জানানো হয় বাজেটটিতে কাক্সিক্ষত কোনো মৌলিক সংস্কার, বৈষম্য নিরসন কিংবা দুর্নীতি প্রতিরোধের সুস্পষ্ট নীতিমালা নেই। ‘প্রস্তাবিত প্রায় ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেটে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটির ঘাটতি এবং ১ লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকার সুদ পরিশোধের বোঝা স্পষ্ট করে যে জনগণের ওপর ঋণনির্ভরতা ও করের চাপ আরও বাড়বে। উচ্চ মূল্যস্ফীতির বাস্তবতায় ব্যক্তি করদাতাদের করমুক্ত সীমা না বাড়ানো এবং ই-কমার্সসহ বিভিন্ন খাতে কর বৃদ্ধির প্রস্তাব সরাসরি সাধারণ মানুষের জীবনকে আরো দুর্বিষহ করে তুলবে।’
তারা বলেন, উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ হ্রাস এবং সামাজিক নিরাপত্তা খাতে কাটছাঁট করা, দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগণের মৌলিক অধিকার হরণ করবে। পাশাপাশি, বিগত সরকারের দুর্নীতি, লুটপাট ও অর্থ পাচারের দুঃশাসনের প্রেক্ষাপটে এ বাজেটে কোনো কঠোর জবাবদিহি বা সংস্কারপন্থা অনুপস্থিত থাকায় জনআস্থার পুনঃস্থাপনে ব্যর্থ হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাজেটে জুলাই-আগস্টের রাজনৈতিক আন্দোলনে আহত ও নিহতদের জন্য ৪০০ কোটির বেশি বরাদ্দ রাখা হয়েছে, যা আমরা একটি ইতিবাচক অগ্রগতি হিসেবে দেখি। সরকার যদি সত্যিই মানবিক দায়বদ্ধতা থেকে এ বরাদ্দ দিয়ে থাকে, তবে ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসে নিহত ও আহতদের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকেও সুনির্দিষ্ট বরাদ্দ থাকা উচিত ছিল। কারণ রাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্ব সব নাগরিকের জন্য সমান হওয়া উচিৎ।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস মনে করে বাজেটের নৈতিক ভিত্তি হবে জনগণের স্বার্থরক্ষা ও সম্পদের সুবিচার। দুর্নীতির পথ বন্ধ করে স্বচ্ছ রাজস্বনীতি ও ব্যয় ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে হবে। উৎপাদনমুখী খাত ও কর্মসংস্থানকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে এবং সর্বোপরি, জনগণের আস্থা ফেরাতে সুস্পষ্ট রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক সংস্কার অপরিহার্য।
মন্তব্য করুন