
শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর সংঘর্ষের ঘটনায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় আজও ১৪৪ ধারা জারি করেছে হাটহাজারী উপজেলা প্রশাসন। স্থগিত থাকবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্লাস ও পরীক্ষা। রবিবার বেলা ২টা থেকে এই এলাকায় সব ধরণের সভা, সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল, গণজমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
রবিবার ভাড়া বাসার দারোয়ান এক ছাত্রীকে মারধর করেছেন, এমন খবরে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। দফায় দফায় সংঘর্ষের পর পুরো এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) রাত ১২টা পর্যন্ত ক্যাম্পাস ও ২ নম্বর গেট এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি থাকবে বলে জানান চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের স্টাফ অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রে ফাহমুন নবী। ক্যাম্পাস ও ২ নম্বর গেট এলাকায় মোতায়েন রয়েছে যৌথ বাহিনী। রবিবার রাতে যৌথবাহিনী বেশ কয়েকজনকে আটক করেছে।
উপাচার্য ড. মোহাম্মদ ইয়াহিয়া আখতার সাংবাদিকদের জানান, সংঘর্ষে প্রায় চার’শ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এর মধ্যে একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। চট্টগ্রামের বিভিন্ন হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনজন। হাসপাতালের নার্সরা জানায়, বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে এসেছেন। তাদের কারো মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত, কারও চোখে। এদের অনেকের শরীরে কোপানোর চিহ্ন রয়েছে। আহতদের চিকিৎসার ব্যয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বহন করছে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য।
এদিকে, সংঘর্ষ চলার সময় হাটহাজারী থানা পুলিশের কাছ থেকে সহযোগিতা পাওয়া যায়নি বলে আবারও অভিযোগ করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তানভীর মো. হায়দার আরিফ ফেইসবুকে পোস্টে দিয়ে সবার সহযোগিতা চান। উপ উপাচার্য (প্রশাসন) কামাল উদ্দিন সে সময় বলেন, “পর্যাপ্ত পুলিশ আমরা ঘটনাস্থলে পাইনি। র্যাবের সাথে যোগাযোগ করেও তাদের পাইনি। “
ঘটনা সম্পর্কে শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রী রাত ১১টার দিকে বাসায় ফেরেন। ভবনের গেইট বন্ধ থাকায় তিনি প্রহরীকে ডাকাডাকি করেন। এসময় প্রহরী এসে ওই ছাত্রীর সঙ্গে তর্কে জড়ায়। এক পর্যায়ে ওই ছাত্রীকে তিনি গালাগাল করেন এবং চড় মারেন। ওই ছাত্রী তখন সহপাঠীদের খবর দিলে তারা সেখানে যান এবং গ্রামবাসীও ভবনের নিরাপত্তারক্ষীর পক্ষ নিয়ে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করে। তখন দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। দুই পক্ষই ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে এবং লাঠিসোঁটা নিয়ে পরস্পরকে ধাওয়া করে।
এসময় স্থানীয়রা মাইকে ঘোষণা দিয়ে লোকজন জড়ো করে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। স্থানীয় লোকজন সে সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে শিক্ষার্থীদের আঘাত করে বলেও অনেকে অভিযোগ করেছেন।
মন্তব্য করুন