মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫

নতুন গান মনে ধরে না,পুরোনো গানেই ভরসা!

বৈশাখী ডেস্ক
প্রকাশ : ২৯ জুন ২০২৫, ১১:৩০ পিএম

নতুন গান আসছে অনেক। এসব গানের কোনো কোনোটাতে ভিউ আছে কিন্তু গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে না। মানুষের মুখে মুখে ফেরে না হাল আমলের নতুন কোনো গান। সিনেমার গান হোক, ব্যান্ড বা সলো শিল্পীদের গান হোক গানের অনুষ্ঠান বা কনসার্ট টিকে আছে যেন পুরোনো গানের উপর। সম্ভবত একারণেই বলা হয় ‘ওল্ড ইজ গোল্ড’।

আশি নব্বাই এর দশকে সিনেমা,ব্যান্ড বা সলো শিল্পীদের ক্যাসেট বা সিডি বের হতো। সেসব নিয়ে মাতামাতিও হতো। ক্যাসেট বা সিডি জমানোর রেওয়াজ ছিল। আগে প্রতিটি সিডি বা ক্যাসেটে দশ থেকে বারটি নতুন গান প্রকাশিত হতো। যে সব গান শ্রোতাপ্রিয় হতো সেসব মানুষের মুখে মুখে ফিরতো।

এখন ইউটিউব বা ফেসবুকের যুগ। নতুন গান এখনও সৃষ্টি হয়, নতুন গান নিয়ে খবর প্রকাশিত হয়, কোনো কোনোটা ভিউও পায়। কিন্তু নতুন কোনো গান পুরোনো গানের মতো শ্রোতার হৃদয়ে কেন যেন আর আগের মতো দাগ কাটে না। পুরোনো যে সব গান জনপ্রিয় হয়েছিল তার উপর ভর করেই যেন চলছেন সঙ্গীত শিল্পীরা,চলছে ব্যান্ডের কনসার্ট।

কেন এমন হচ্ছে? এব্যাপরে জানতে চাওয়া হয়েছিল আরোচিত কয়েকজন সঙ্গীত ব্যক্তিত্বের কাছে।

বিশিষ্ট গীতিকার ও সঙ্গীত পরিচালক মিল্টন খন্দকার বলেণ-‘আগে সঙ্গীত শিল্পী ও পরিচালকদের শেখা, সৃষ্টি ও ভালো কিছু করার ক্ষুধা ছিল। এখন এই ভিউয়ের যুগে সঙ্গীতের নন্দনতত্ত¡টাই হারিয়ে গেছে। এমন সব শব্দ এখন গানে ব্যবহৃত হয় যা আগে কখনোই হতো না। এখন রাগ-রাগিনীর চর্চা নেই আছে অটো টিউন নির্ভরতা! এখন গান শোনাতে বাধ্য করা হয় তাই গান শুনতে চাওয়ার হৃদয়ের স্বাভাবিক আকুতিটাই মরে গেছে। আগের সেই মানের গানের রুচি নেই তবে রুচির দুর্ভিক্ষটা বেশ স্পষ্ট!’

বিশিষ্ট গীতিকবি কবির বকুল বলেন-‘বানীপ্রধান,হৃদয়গ্রাহী সুর এবং সঠিক গায়কী এই তিন মিলে একটা গান অনন্য হয়ে ওঠে। একারণেই আমাদের কালজয়ী গানগুলো এখনও চিরসবুজ,হৃদয়ে দাগ কেটে আছে। এই সময়ের গানগুলোতে এই ত্রয়ী মেলবন্ধনটি অনেক ক্ষেত্রেই অনুপস্থিত। গানের কথা সুন্দর হলেও সুর হয়তো হৃদয়গ্রাহী হয় না। কখনো সখনো এই দুটি ভালো হলেও গায়কী হয়তো আকর্ষনীয় হয় না। তাই এখনকার গান আগের মতো আবেদন সৃষ্টি তরে না!’

জনপ্রিয় সঙ্গীত পরিচালক শওকত আলী ইমন বলেন-‘ আগে গানের সাথে যারা জড়িত ছিলেন তারা পরিপক্ক ছিলেন। প্রকাশের মাধ্যম ছিল রেডিও এবং টেলিভিশন,এছাড়া অন্যকোনো প্রকাশ মাধ্যম তখন ছিল না। এখন ইথারের যুগ। মানুষের রুচিতেও পরিবর্তন এসেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অনেক কিছু দেখে মনে হতে পারে শ্রোতারা খানিক কনফিউজড। গানের সেই স্থায়িত্ব নেই সত্য। ২০২৫-২৬ এ আরও বেশি প্রভাব ফেলবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই নির্ভরতা! তখন সৃষ্টিশীল সুরকাররা হারিয়ে যাবেন ক্রমশঃ।

জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী মনির খান মনে করেন আগে গান ছিল অনেকের অংশগ্রহণে মিলে মিশে সৃষ্টি করার একটা ব্যাপার। তখন গান সৃষ্টির গভীরতা ছিল. সুস্থ প্রতিযোগিতা ছিল। এখন সেটা নিতান্তই ব্যক্তিগত এবং চেষ্টা বা সাধনাযোগ যেন নেই। গান তাই এখন আর সার্বজনীন না।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
পদাতিক নাট্য সংসদ এর নতুন নাটক আলিবাবা এবং চল্লিশ চোর
পদাতিক নাট্য সংসদ এর নতুন নাটক আলিবাবা এবং চল্লিশ চোর
বিস্ফোরক যে মন্তব্য করে আলোচনায় পরেশ রাওয়াল
বিস্ফোরক যে মন্তব্য করে আলোচনায় পরেশ রাওয়াল
‘বোম্বে ভেলভেট’এ রণবীর সিং এর পরিবর্তে রণবীর কাপুর
‘বোম্বে ভেলভেট’এ রণবীর সিং এর পরিবর্তে রণবীর কাপুর
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগ, যে সিনেমা মুক্তি স্থগিত চেয়ে রিট
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগ, যে সিনেমা মুক্তি স্থগিত চেয়ে রিট